আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্তত ৩০ ভাগ বিদেশী ছবি চলুক: নওশাদ

এখনো ওয়াচে আছি। মন্তব্য করার অধিকারটুকু এখনো পাইনি। ১ ডিসেম্বর ৪৪ বছর পূর্ণ করলো রাজধানীর অভিজাত সিনেমা হল বলে পরিচিত মধুমিতা। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির অন্যতম প্রভাবশালী এ নেতা বিদেশী ছবি আমদানী, হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বাংলা চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন।

তার সঙ্গে আলাপচারিতার ভিত্তিতেই গ্লিটজের এবারের সাক্ষাৎকার পর্ব। মধুমিতা হলের বর্তমান স্থানেই নতুন করে একাধিক হল তৈরির কথা আমরা শুনেছিলাম, সে উদ্যোগের অবস্থা কী? আমার বাবা আলহাজ মো. সিরাজউদ্দিন মতিঝিলের মতো বাণিজ্যিক এলাকায় মধুমিতা সিনেমা হলটি নির্মাণ করেছিলেন ১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর। মধুমিতা মুভিজ নামে প্রযোজনা ও পরিবেশনা সংস্থাও ছিল আমাদের। ৯২ সালে সব বন্ধ করতে হয়েছে। এখন শুধু মধুমিতা হলটাই আছে।

নতুন করে করতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই পরিকল্পনা করছি, এই হলের স্থানটিতেই ৩/৪টি হল তৈরি করবো। কাজ শুরু করবো ২০১৩ সালে। আপনাদের প্রযোজনা -পরিবেশনা ও অডিও সংস্থা বন্ধ করলেন কেন? যে কারণে অন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে আমাদেরটাও সেই একই কারণে বন্ধ করতে হয়েছে, আর সেটা হলো পাইরেসি। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো জোড়ালো পদক্ষেপ নেই।

এ ছাড়া আমাদের এখানে শিল্প ও নির্মাতা সংকটও প্রবল। গুটিকয়েক শিল্পীর উপর নির্ভর করে চলচ্চিত্র শিল্প টিকে থাকতে পারে না। আমার তো মনে হয়, নিয়মিতভাবে বিদেশী শিল্পীদেরও আমাদের ছবিতে অভিনয় করানো উচিৎ। ভাল ছবি প্রদর্শন করে যদি দর্শককে হল মুখী করতে পারি, তাহলে অন্য অনেক প্রযোজকের মতো আমরাও প্রযোজনায় ফিরে আসতে পারবো। ভারতীয় ছবি আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য হুমকি হবে কী? কোনো হুমকি হবে না।

আমি তো মনে করি, বর্তমানে এর চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না। এক সময় উত্তম-সুচিত্রার মতো বড় বড় ভারতীয় শিল্পীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমাদের দেশের শিল্পীরা কি ভাল ছবি করেননি? করেছেন। ভারতীয় ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাংলা ছবি শুধু ভাল ব্যবসা করেছে তা নয়, আমাদের সংস্কৃতিরও বিস্তার ঘটেছে। খেলোয়াড় আনা যাচ্ছে বিদেশ থেকে, শত ধরনের পণ্য আমদানী হচ্ছে তাতে সমস্যা হচ্ছে না, শুধু ছবির ক্ষেত্রে কেন এই বিরোধিতা? একজন প্রযোজক হিসেবে ভারতীয় ছবি প্রদর্শনের বিষয়টিকে কিভাবে দেখেন? ভাল ছবির অভাবে হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হল যদি না থাকে তাহলে ছবি বানিয়ে প্রদর্শন করবো কোথায়? তাই প্রথমে হলগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

হল চালু রাখতে গেলে ভাল ছবি দরকার। আমাদের দেশ তো এ কাজটি এখনও করতে পারছে না। তার মানে কী আমাদের হলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে? এরশাদ সরকারের আমলে দেশে ১৬০০ হল ছিল। এখন আছে মাত্র সাড়ে চারশো। প্রতিযোগিতা না থাকলে ভাল কাজ হয় না।

ভাল কাজ হলে অবশ্যই প্রযোজকরাও এগিয়ে আসবেন। আপনার কাছে আমদানি করা কয়টি ছবি আছে? আমি বিভিন্ন দেশের ও ভাষার ১৭টি ছবি আমদানি করে রেখেছি। এর মধ্যে ৫টি ছবি সেন্সর বোর্ডে জমা দিয়েছি। ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হলো ‘আফটার দ্য সান সেট’, ‘ডগ সোলজারস’, ‘আন্ডার ওয়ার্ল্ড এভুলিউশন’ এবং ‘স্ট্রাইক ইট-২’। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ছবিগুলো দেখেছেন।

কোনো সমস্যা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তারা জানালেন, ছবিগুলোতে ইংরেজি সাবটাইটেল লাগবে, অন্য ভাষার হলে হবে না। ৮ মাস ধরে আমার লোকরা অন্য ভাষার সাবটাইটেল তুলে ইংরেজি সাবটাইটেল বসানোর কাজ করছে। চলচ্চিত্র প্রযোজনা বিষয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? পাইরেসি বন্ধ না হলে প্রযোজকরা এগিয়ে আসবেন না। তাই সরকারের উচিৎ পাইরেসির বিষয়টি শক্ত হাতে দমন করা। তাতে চলচ্চিত্রে উন্নয়ন হবে।

আমি ২০১৩ সাল থেকে আবার নিয়মিতভাবে ছবি প্রযোজনা করবো। বিদেশী ছবি প্রদর্শন সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? সবাই যদি ঘরে বসে বিনা পয়সায় সেন্সর বিহীন ছবি দেখতে পারে তবে আমরা সরকারকে নির্দিষ্ট কর দিয়ে কেন তা হলে প্রদর্শন করতে পারবো না? এদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, হল মালিকরাই চলচ্চিত্র প্রযোজনা করে চলচ্চিত্র শিল্পকে দাঁড় করেছে। এক সময়তো দেশে বিদেশী ছবি নিয়মিতই প্রদর্শিত হয়েছে। এখন তাতে সমস্যা কোথায়? সবচেয়ে বড় কথা হলো, সরকার এর অনুমতি দিয়েছে। আমরা চাই, দেশে অন্তত ৩০ ভাগ বিদেশী ছবি প্রদর্শিত হোক।

দেশের হলগুলো উন্নয়নের বিষয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী? হল মালিকরা যদি ভাল ব্যবসা না করতে পারেন, তবে তাদেরকে কীভাবে হল উন্নয়নের কথা বলবো? আর দর্শকরা চান ভাল ছবি দেখতে। ছবি ভাল হলে কেউ খারাপ পরিবেশের কথা বলে না। এটা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। ‘মনপুরা’ কিংবা ‘টাইটানিক’ ছবি দেখার সময় কিন্তু কেউ হলের দুর্গদ্ধের কথা তোলেননি। সূত্র: বিডিনিউজ  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.