আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কপোল

অনেক কিছু করে ফেলার শখ, কিন্তু কোন বিষয়ে নিজের প্রতিভা আছে বা আদৌ কোন বিষয়ে প্রতিভাবান কিনা, সেটাই বের করতে পারি নি এখনো। কনচেপ্ট পুরনো, বাট ঘটনাটা বাস্তব। ছোটবেলা থেকেই আমি মোটামুটি সর্বগ্রাসী শ্রেণীর পাঠক। রিডিং পড়া শেখার পর প্রথম যে বইটা পড়ে শেষ করেছিলাম, সেটা হল ‘গীতাঞ্জলী’। এর পরের বইটার নাম ‘ঔষধি বৃক্ষের গুনাগুন’! রবীন্দ্রনাথের লেখা যে খুব বেশি মাথায় ঢুকত তাও না, বরঞ্চ মাঝে মাঝে একটু মেজাজই খারাপ হয়ে যেত।

ছন্দের মিল নাই, হাজারটা বানান ভুল, কি লেখে এই ব্যাটা! তার উপর আমার কিঞ্চিৎ বিশ্বাস, এই লোকের মাথায় গণ্ডগোল ছিল। উনার ‘বউ-ঠাকুরানীর হাট’ উপন্যাসে একটা লাইন আছে, “দুই চক্ষু দিয়া জল পড়িতে লাগিল - শীর্ণ বিবর্ণ দুটি কপোল প্লাবিত করিয়া জল পড়িতে লাগিল, অশ্রু আর থামে না। ” কি আশ্চর্য, কপাল প্লাবিত করে অশ্রু পড়ে ক্যামনে? এই বেক্কল মার্কা প্রশ্ন আমি অনেক দিন মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ালাম। ভয়ে কাউকে জিজ্ঞেসও করতে পারি না, কি না কি মনে করে! উত্তর মিলল একদিন সুমন্ত আসলামের বাউন্ডুলে পড়ে। উনি লিখলেন, ‘দুই ঠ্যাং বাইন্ধা দিল কদম্বেরি ডালে, কপোল ভাসিয়া গেল নয়নেরি জলে’।

আরে গাছে ঠ্যাং বাইন্ধা দিলে চোখের জলে কপাল ভিজবে না তো কি ভিজবে? আমি সদ্যলব্ধ জ্ঞান আমাদের ক্লাসের রোল দুইয়ের সাথে শেয়ার করলাম। দোস্ত জানিস, রবীন্দ্রনাথকে একবার কদম গাছের ডালে উল্টা করে বেঁধে রাখছিল। ব্যাটা কেঁদেকেটে কপাল-মাথা সব ভিজায় ফেলছে। ঘটনা পুরো ক্লাসে ছড়িয়ে পড়ল। আলোচনা বিভিন্ন ডালপালা মেলতে লাগল।

বর্তমান আলোচনার বিষয়, রবীন্দ্রনাথ কি লুঙ্গি পরতেন নাকি পাজামা পরতেন। লুঙ্গির দিকেই ভোট বেশি। এই লোকটা এশিয়ার মধ্যে প্রথম নোবেল পেয়েছেন – এই তথ্যের চেয়ে বরং লুঙ্গি পরে বেইজ্জতি হয়েছেন, এই তথ্যটাই বেশি কৌতূহলোদ্দীপক। কথা একান-সেকান হতে হতে আমাদের বাংলা স্যারের কান পর্যন্ত গেল। স্যার পুরো ক্লাসের সামনে আমাকে দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘এরকম উল্টাপাল্টা কথা কি স্কুলেই বল, নাকি সবখানেই?’ এরপর স্যার যে কথাটা বললেন সেটা রবীন্দ্রনাথ সংক্রান্ত সমস্ত উত্তেজনার আগুনে পানি ঢেলে দিল।

‘বেকুব কোথাকার, ‘কপোল’ মানে হচ্ছে গাল। অর্থাৎ চোখের জলে গাল ভিজে যাচ্ছে। ’ • কপোল মানে গাল, এটা আমি সুমন্ত আসলামের লেখাটা পড়েই জেনেছিলাম। ক্লাসে বলেছিলাম একটু মজা করার জন্য। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।