কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো। গতকালকের বেশ কয়েকটি পোস্টে, টিভির টিকারে অথবা ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্রের বদৌলতে ইতিমধ্যেই নিশ্চয়ই জেনে গেছেন যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট (http://www.supremecourt.gov.bd) হ্যাক হয়েছে। কারা হ্যাক করেছে তাও নিশ্চয়ই জানেন। একটি আনইথিকাল হ্যাকিং গ্রুপ নাম "এক্সপায়ার সাইবার আর্মি"। বাংলাদেশ সাইবার আর্মি নিয়ে তো অনেক কথায় শুনেছেন।
তারা থাকতে এই সাইট হ্যাক হল কিভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমি কিছুক্ষন পরে দিব তার আগে জেনে নেই কারা এই এক্সপায়ার সাইবার আর্মি।
একটা পরিচয় তো পেয়েই গেছেন, বাংলাদেশী হয়েও বাংলাদেশের সাইট হ্যাক করেছে। এবং তার চেয়ে বড় কথা সরকারী সাইট হ্যাক করেছে। সাইটে খুব সুন্দর ভাবে বড় করে লিখে দিয়েছে
"Some other hacker are trying to hack Bangladeshi sites!! and delete all the data !!
Dont worry none of data is deleted!!
Set the permission of admin/notice/db.php so that no one can view it!! your database is insecure!! Patch IT!!"
অথচ সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপারটা হচ্ছে, ওরা ঐ সাইটের পুরো ডাটাবেজই ডিলিট করে দিয়েছে। মানুষের কাছে হিরো সাজার জন্য আরো কয়েকটি মহৎ বাণীও লিখে দিয়েছে।
অথচ ভিতরের খবর হচ্ছে, ওরা নিজেরায় সাইটগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। নিচের স্ক্রিনশটগুলো ওদেরই ফেসবুক গ্রুপ থেকে নেওয়া।
শুধু এই প্রথম নয়, এর আগে ওরা একে একে ধ্বংস্ব করেছে,
বাংলাদেশ আই-হসপিটাল এর সাইট [ http://zone-h.org/mirror/id/15696362] এই সাইটটা অবশ্য বাংলাদেশ সাইবার আর্মি নিজ দায়িত্বে রিকভার করেছিল। যার খবর আপনারা আগেই পেয়েছেন ডিজে আরিফের এই টিউনে।
ঐ টিউনের মাধ্যমে আপনারা দেখেছেন কিভাবে কুয়েত আর অ্যারাবিয়ান হ্যাকারদের হ্যাক করা তিনটি সাইটও রিকভার করেছিল বিসিএ
বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের সাইট [http://www.zone-hack.com/defacements/?id=3870]।
এটি ব্যংকের অফিশিয়াল সাইট, যা হ্যাক করে তারা সব তথ্য আর ডাটাবেজ সম্পূর্ণভাবে মুছে দে। এতে প্রচুর ঐ ব্যঙ্কের অর্থ নষ্ট করে ফেলে এই এক্সপায়ার সাইবার আর্মি। দূর্ভাগ্য সাইটটার কোন ব্যাক আপ রাখেনি এডমিন। সাইটটা এখনো রিকভার করতে পারেনি তারা।
বাংলাদেশে কোর্টে এর সাইট [ http://www.zone-hack.com/defacements/?id=5738 ]
University Grants Commission (UGC) of Bangladesh [ http://zone-h.org/mirror/id/15689795 ]
এছাড়াও জর্ডানের বাংলাদেশী এমবাসি এর সাইট হ্যাকের পরে কিভাবে পূনউদ্বার হয় তা আছে মারুফ আলম এর এই টিউনে।
এক্সপায়ার সাইবার আর্মি নামের এই তথাকথিত নামসর্বস্ব দলটি একের পর এক হাসপাতাল,ব্যাংক, কোর্ট সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাইট ধ্বংশ করে যাচ্ছে।
আপনাদের আগেই বলেছি বাংলাদেশ সাইবার আর্মি একটা ইথিকাল গ্রুপ। ইথিকাল আর আন ইথিকাল শব্দ দুইটার মধ্যে মূল পার্থক্য হল কারো কাছে ন্যায়বোধ আছে। আর কারো কাছে নাই। যেই সাইট হ্যাকের পর এই এক্সপায়ার সাইবার আর্মি এতটা জনপ্রিয়(!) হয়ে গেল।
একই সাইটের ব্যাপারে বাংলাদেশ সাইবার আর্মি অনেক আগেই তাদেরকে মেইল করেছিল। কিন্তু আমাদের দূর্ভাগ্য যে তারা তাদের নিরাপত্তা বাড়াতে কোন পদক্ষেপই নেয়নি। না হলে আজ এই অবস্থা হত না। বাংলাদেশের বেশিরভাগ সাইটেরই নিরাপত্তা ব্যাবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, কয়েকটা ফ্রী হ্যাকিং সফটওয়্যার বা টুল ব্যবহার করেই সাইটগুলো হ্যাক করা যায়। এইখানে আহামরি কোন ব্যাপার নেই।
আমরা বারবার বলছি বাংলাদেশ সাইবার আর্মিকে জানুন, চিনুন তাদেরকে সহযোগিতা করুন। কিন্তু আপনারা তেমন কিছুই করছেন না। বাংলাদেশ সাইবার আর্মির ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা প্রায়ই প্রতিটা পোস্টেই দিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। আপনারা নিজেদের সাইট সুরক্ষার ব্যাপারে সেখানে তাদের সাথে আলোচনা করলেই পারেন। কোন একটা সাইট যদি ভালনারেবল বা হ্যাক করার মত হয়।
তাহলে ঐ সাইটের এডমিনকে মেইল করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার থাকে না সেখানে। কিন্তু নির্মম হলেও সত্য বেশিরভাগ সাইটের এডমিন মেইলগুলো যে পড়ে তার হয়ত কোন এডমিন পাওয়ারই নেয়। সাইটের সিকিউরিটি নিয়ে ভাবা তো দূরে থাক সাইট কিভাবে বানায় তাই হয়ত জানে না। এজন্য অনেক সময় ভয়ানক খারাপ ভাষার তাদের কাজ থেকে জবাব আসে। আপনাদের আগেও বলেছি, আবারো বলছি বাংলাদেশ সাইবার আর্মিকে সহযোগিতা করুন, নিরাপত্তার ব্যাপারে যেকোন সমস্যা তাদের সাথে আলোচনা করুন।
আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।