দেশে উচ্চশিক্ষার বানিজ্যিকি করনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম আন্দোলনে নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিগত কয়েক বছর ধরেই তারা এই আন্দোলন করে আসছে। নানা বাধা-বিঘ্ন, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
" শিক্ষা কোন পন্য নয়, শিক্ষা আমার অধিকার; শিক্ষা-ব্যাবসা একসাথে চলে না" এই স্লোগান গুলোতে প্রকম্পিত থাকে জগন্নাথের ক্যাম্পাস।
উচ্চশিক্ষার বানিজ্যিকি করনের ইউজিসি'র ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার মডেল হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
ধীরে ধীরে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে এই পরিকল্পনার আওতায় এনে শিক্ষার ব্যয় বাড়ানো হবে এবং তা করা হবে বিভিন্ন কৌশলে।
তাই এই আন্দোলন শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখা দেশের সকল গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গত সেপ্টেম্বরের আন্দোলনের মুখে প্রধান মন্ত্রী ঘোষনা দেন যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই বরাদ্ধ পাবে। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের কয়েকটি দাবি পূরনের আশ্বাস দেয়।
এর তিন মাস পর প্রশাসন সেই দাবি পুরন না করে উল্টো ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০০০ টাকা আদায় শুরু করে।
উন্নয়ন ফি র নামে এই অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলনে নামে তখন মাননীয় ভিসি ছাত্রলীগ লেলিয়ে দেয়। দুই দফা মার খেয়েও যখন আন্দোলনকারীরা মাঠ ছাড়ে নি তখন ক্যাডারের ভুমিকায় নামে কতিপয় শিক্ষক। এতেই সফল না হয়ে তারা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ এনে মানব বন্ধন করে। এতেও সফল না হলে আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর জন্য কয়েকদিন ধরে সরকারী পেটোয়া বাহিনী পুলিশ দিয়ে ক্যাম্পাস ভরে রাখে। এখানেই চক্রান্তের শেষ নয়, যুক্তির জায়গায় টিকতে না পেরে অবশেষে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে আজ।
ভিসি বলেন আন্দোলন কারীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, অথচ বিগত দিনে ছাত্রলীগের হামলা হুমকি এই ভিসি হজম করেছেন অনায়াসে। তখন তার তদন্ত কমিটির দরকার হয় নি।
আর আজ ভিসি শোনালেন তার মহান বাণী, "উচ্চশিক্ষা কিনতে হয়"
View this link
তিনি আরো বলেন ছাত্রদের কাছ থেকে এই টাকা না নিলে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ব্যহত হবে
প্রশ্ন জাগে যদি তাদের সময় এইরকম টাকা দিয়ে উচ্চশিক্ষা কিনতে বলা হত তাহলে কি তারা আজকের এই পর্যায়ে আস্তে পারতেন? আমি হলফ করে বলতে পারি আজকের অনেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা রা পারতেন না।
একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যখন শিক্ষা কে পন্য হিসেবে গন্য করে তখন আর বোঝার বাকি থাকে না যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য নয় বরং আইএমএফ-বিশ্ব ব্যাংকের দালালি করার জন্য নিয়োগ পেয়েছেন।
অবাক হই কিভাবে এই নির্লজ্জ লোক গুলো এত গুরুত্বপুর্ন পদে থাকে।
এদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় বরং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এবার আপনি ই সিধান্ত নিন, এর বিরুদ্ধে দাড়াবেন নাকি দামি গাড়ি-ফ্ল্যাট বাড়ির মত উচ্চশিক্ষা কেনার জন্য টাকা জমাবেন।
এখনই রুখে দাড়ান, নতুব উচ্চশিক্ষা পরিনত হবে ধনীর প্রসাধনে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।