আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খালেদার তত্ত্বাবধায়ক মানবেনই না হাসিনা ( জানা কথা )

আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমি কিছু বলতে চাই। আমাকে বলতে দিন.। বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানবেনই না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার গণভবনে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আলাপকালে তিনি তার অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন।

সাফ বলে দিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফাঁকফোকর দিয়ে গণতন্ত্রের যাত্রাপথ রুদ্ধ করে দিয়ে তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব ঘটুক সেই সুযোগ জীবন থাকতে তিনি দেবেন না। দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের একটি সুশীল অংশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নামিয়েছে। খালেদা জিয়া বুঝতে পারছেন না তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল হলে গণতন্ত্রের জন্য কি ভয়ঙ্কর পরিণতি অপেক্ষা করছে। দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী এ সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিলে শেখ হাসিনা জানান, তিনি তার মতো করে বার্তা পাঠিয়েছেন। শেখ হাসিনা আশাবাদী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

শেখ হাসিনার বিশ্বাস, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার থেকে তার সরকার ও দল যে দূরে থেকেছে, জনমতের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রভাবিত করতে যায়নি, এটি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। দলীয় সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটে যদি তার দল গণরায় নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তিনি তা মেনে নেবেন। ফলাফল প্রভাবিত করার কোনো চেষ্টা করতে যাবেন না। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন সুযোগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে পর্দার অন্তরালে তৎপর সেসব সুশীলের হাতে তুলে দিতে রাজি নন। তার মতে, সেবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগে যে চক্রটি ক্ষমতা নিতে চেয়েছিল তারা ব্যর্থ হয়েছিল।

এবার সুযোগ পেলে তারা অতীতের মতো হাতছাড়া করবে না। দলীয় সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, এমন দাবিতে আন্দোলনের পথে যতই হাঁটুন না কেন শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্তে অনড়। খালেদা জিয়ার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তিনি মানবেনই না। '৯৪ সালে বিএনপি শাসনামলে ভোট ডাকাতির কলঙ্কিত মাগুরা নির্বাচনের পর তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে শুধু আন্দোলনই জোরদার করেনি, সংসদ থেকেও পদত্যাগ করে। '৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন সবাই বর্জন করে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তা একদলীয় ও প্রহসনে পরিণত হয়।

সেই নির্বাচনে গঠিত ১৫ দিনের সংসদে রাত জেগে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করে। '৯১ সাল থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে এলেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে পরাজিত পক্ষ কারচুপির অভিযোগ আনে। কিন্তু দেশি-বিদেশি সব মহল ও পর্যবেক্ষকদের কাছে এসব নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়। দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা না পাওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পৃথিবীর কোথাও নির্বাচনের ব্যবস্থা না থাকলেও এদেশে মানুষের কাছে আস্থা অর্জন করে। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা ছিল বিচারপতি কে এম হাসানের।

কিন্তু তিনি এক সময় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলনের মুখে কে এম হাসান সরে দাঁড়ালে এবং বিএনপি-আওয়ামী লীগকে সমঝোতায় না নিয়েই তৎকালীন বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিএনপির নেপথ্য ক্রীড়নকে পরিণত হন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন। বিএনপির ইশারায় নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে বঙ্গভবনে যখন নানা ঘটনা চলছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল তখন রাজপথ অবরুদ্ধ করে আন্দোলন-সংগ্রামের পথে নির্বাচন বর্জন করে। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি ইয়াজউদ্দিন বিতর্কিত সিইসি এম এ আজিজকে দিয়ে একদলীয় নির্বাচনের পথে হাঁটেন।

রাজপথের সহিংসতা, আন্দোলন-সংগ্রাম দেশবাসীকে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ঠেলে দেয়, সব ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতার পথ রুদ্ধ হয়ে একদলীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংঘাতময় হয়ে ওঠে পরিস্থিতি, তখন জাতির জীবনে আবিভর্ূত হয় ওয়ান-ইলেভেন ও জরুরি অবস্থা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন ফখরুদ্দীন আহমদ ও সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ ক্ষমতার নেপথ্য শক্তি হয়ে ওঠেন। টানা দুই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে দুই নেত্রী জেল খাটেন, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের ওপর নেমে আসে দমন, নির্যাতন, কারাবাস, না হয় পলাতক জীবন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট উচ্চ আদালতের রায়কে ঘিরে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিরোধী দলসহ নানা মহলের আপত্তি উপেক্ষা করে বাতিল করে দেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা। বিএনপি এখন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে মরণকামড় দিয়ে রাজপথে নেমেছে।

অন্যদিকে সরকার তার সিদ্ধান্তে অনড়। চারদিকে ফের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ডালপালা মেলছে। সর্বত্র একই প্রশ্ন_ এই রাজনীতির শেষ কোথায়? সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন ( প্রথম পাতা ) বিঃদ্রঃ কপি পেস্ট পোস্ট করার জন্য দুঃক্ষিত। কি করবো আর ভালো লাগে না এইসব। কইতে গেলেও ডর লাগে ।

কোন সময় ধইরা না লয়া যায় আবার। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।