পুলিশ সপ্তাহ ২০১২ শেষ হলো ক'দিন আগে। সে উপলক্ষ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে পুলিশ নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান চলছে। বাংলাভিশন চ্যানেলে এরকম এক আলোচনা অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি ও সচিব মুহাম্মদ নুরুল হুদা, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবুল বারাকাত এবং সঞ্চালক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আলোচনা করছিলেন। আবুল বারাকাত খুব কম কথা বলছিলেন। অন্যান্য আলোচকগণ পুলিশের সংস্কার, উন্নয়ন, দোষ-ত্রুটি নিয়ে কথা বলছিলেন।
এক পর্যায়ে আবুল বারাকাতকে সঞ্চালক কিছু বলতে বললে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রসঙ্গে চলে যান। তিনি বলেন, "প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে যদি প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেতন দেয়া হতো অর্থাৎ বিসিএস ক্যাডাররা চাকরির প্রথমে যে বেতন পান সেই বেতন যদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দেয়া হতো এবং একজন পুলিশ কনস্টেবলকে যদি ১৫ হাজার টাকা বেতন দেয়া হতো তাহলে এত সমস্যা আর থাকতো না। শিক্ষা মানুষের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার অধিকার রাষ্ট্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। " তিনি আরও বলেন, "মাধ্যমিক টাধ্যমিক বাদ।
শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ বেতন দিতে পারলে শিক্ষাব্যবস্থার মত গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের সব কিছু ঠিক হয়ে যেত। উন্নত দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়। আর পুলিশ কনস্টেবলদের বেতন মাসে ১৫ হাজার টাকা হলে পুলিশের সেবা নিয়ে আর এত অভিযোগ থাকতো না। আর এ টাকা কোথা থেকে আসবে সে প্রশ্ন করে লাভ হবে না। আমি একজন অর্থনীতিবিদ।
আমি খুব ভাল করেই জানি টাকা অনেক আছে। এ অর্থ ব্যয় করা কোনো খরচ নয় বরং বিনিয়োগ। ইন রিটার্ন যে লাভ হবে তাতে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। এ টাকা বিনিয়োগ করতেই হবে। "
দেশের সকল নাগরিককে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা দিতে রাষ্ট্র বাধ্য।
মিছিল-মিটিং-সেমিনার আর কনসালটেন্ট নিয়োগ করে এ শিক্ষা সেক্টরের উন্নতি কতদূর সম্ভব কিংবা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন যদি কমপক্ষে বিসিএস ক্যাডারদের চাকরি জীবনের প্রথম স্কেল অনুসারেও দেয়া যায় তবে দেশের অনেক মেধাবী ও দক্ষ ছেলেমেয়ে এ সেক্টরে চাকরি করতে আসবে। ব্র্যাক সেন্টার ইন কিংবা সিরডাপ মিলনায়তনে পিএইচডির ভারে নুহ্য বিশেষজ্ঞদের গবেষণাপত্র প্রদর্শন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে করণীয় নিয়ে সুবিশাল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে যে উন্নয়ন অর্জন সম্ভব তার চেয়ে বহুগুণে উন্নয়ন সম্ভব শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রস্তাবিত পর্যায়ে উন্নীত করে। এসপি সাহেবদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে যেমন এসআই-কনস্টেবলদের কাছ থেকে মানসম্মত পুলিশি সেবা আশা করা যায় না তেমনি পিএইচডিধারী বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেও প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন প্রকৃতপক্ষে সম্ভবপর হয় না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।