আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতে জামাতে ইসলাম ও লংমার্চ : ২০ বছর আগের VS ৬ এপ্রিলের

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। কিছুদিন ধরে হাটহাজারী মাদ্রাসার আল্লামা শফী বাংলাদেশে ইসলাম, মুসলমানদের ইমান-আকিদা রক্ষায় তর্জন-গর্জন এবং হুঙ্কার-হুমকি দিয়ে চলেছেন। এমন হুঙ্কার-হুমকি আমরা ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশুমার শুনেছি। ইসলাম গেল গেল এই আওয়াজটির সঙ্গে এই দেশের মানুষ সম্যক পরিচিত। ১৯৯০-এর ডিসেম্বরে এরশাদের পতনের মাত্র কয়েকদিন আগে ২৬ নবেম্বর একাত্তরের এক ঘাতক মৃত আবদুল মান্নান মালানা তার জমিয়াতুল মোদাররেসিনের মাদ্রাসা শিক্ষকদের জড়ো করে এরশাদকে প্রধান অতিথি বানিয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে পরদিন মঙ্গলবার ‘কাজী ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের উদ্দেশে ভাষণ’ শিরোনামের ইনকিলাবের খবরে এই বাক্যগুলোও ছিল ‘জমিয়াতুল মোদাররেসিনের সভাপতি মালানা মান্নান এমপি বলেন, দেশের প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রেসিডেন্টকে ভালবাসেন, কারণ তিনি ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন। ’ লক্ষ্য করুন, ইসলামের সেবক এই খেদমতগার এরশাদের পতন ঘটে মান্নান মালানার এমন শক্ত সমর্থন প্রকাশের মাত্র ৮ দিন পর। তো আট-দশ বছর আগে মান্নান মালানা মরে গেছে, আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার থেকেও বেঁচে গেছে। কিন্তু তার প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব নামের এককালের দেশের তাবত মৌলবাদীদের প্ল্যাটফরম এখন, মৌলবাদী এবং ভারত বিদ্বেষীদের নতুন গজিয়েওঠা প্ল্যাটফরম, দৈনিক আমার দেশ এবং দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকা দু’টির সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইনকিলাব সাত-আট বছর আগে জামায়াতের দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আক্রমণের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং আশ্রয় নেয়।

কিন্তু এখন ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানালে, জমিয়াতুল মোদাররেসিন এবং মাদ্রাসার তালেব এলেমদের সমর্থন হারাতে হবে। তাই এই গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন-সাপোর্ট ধরে রাখতে বাংলাদেশে ইসলাম রক্ষার একমাত্র এজেন্টের পুরনো ভূমিকায় ইনকিলাবকে আবারও দেখা যাচ্ছে। তখন ছিল মান্নান মালানা, আল্লামা শফী এখন ইসলাম এবং মুসলমানদের তাহজীব-তমদ্দুন রক্ষার ‘গার্জিয়ান। ’ প্রতিদিন সকালে আমাদের কতগুলো চ্যানেলে দিনের দৈনিক পত্রিকাগুলোর শিরোনাম প্রচারিত হয়ে থাকে। আমি এই শিরোনামগুলো দেখার চেষ্টা করি প্রতিদিন।

কোন্ পত্রিকা কোন্ ধান্ধাবাজিতে কোন্ খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে, কোন্ পত্রিকা অন্য কোন্ ধান্ধাবাজিতে একই খবরটি ছোট করে ছেপেছে, তা এই শিরোনামগুলো দেখলে বোঝা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার চ্যানেল আইয়ের সকাল ৯টার খবরে দেখলাম ইনকিলাবের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘৬ এপ্রিল লংমার্চ যে কোন মূল্যে সফল করা হবে, সরকার তদন্ত কমিটি গঠনের নামে প্রতারণার পথ বেছে নিয়েছে : লংমার্চ সমন্বয় কমিটি। ’ ইনকিলাবের বিস্তারিত রিপোর্টটি পড়ার জন্য একটি কপি আনিয়ে দেখি এটি প্রধান শিরোনাম নয়; তবে ছোট একটি শিরোনাম প্রথম পৃষ্ঠায় নিচের দিকে। তাহলে কি বিষয়টা এমন, মফস্বলের জন্য মুদ্রিত কপিগুলোতে বড় শিরোনাম; আর ঢাকা শহরের জন্য নগর সংস্করণের কপিগুলোতে ছোট শিরোনাম? এবং দেশের গ্রামগঞ্জের মানুষজনকে উস্কানোর জন্য বড় শিরোনাম? আজকাল কিছু কিছু গণমাধ্যমে প্রতারকদের যেমন ব্যাপকতা দেখা যাচ্ছে, এই ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। ‘মরদে মোমিন মাহমুদুর এবং তার আমার দেশ-এর প্রতারণা’ শিরোনামের কলামে দুই সপ্তাহ আগে অনেক তথ্য-যুক্তি দিয়েছি।

এই প্রতারকের প্রতারণা তারপরও অব্যাহত রয়েছে। গত ২৩ মার্চ তার এই আমার দেশ পত্রিকায় প্রকা- এক আবর্জনা আছে, আমাদের স্কুলগুলোতে সেক্স এডুকেশন দিয়ে নাকি কিশোর-কিশোরীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, চরিত্রভ্রষ্ট করার চেষ্টাও নাকি করা হচ্ছে। এই রচনাটি মরদে মোমিন মাহমুদুর যখন ছাপে তখন তিনি লক্ষ্য করেননি যে তার এই পত্রিকায় প্রায় প্রতিদিন যৌন শক্তিবর্ধক কবিরাজি-হেকিমী ওষুধের কেরামতী গুণাবলীর বিজ্ঞাপনও ছাপা হয়ে থাকে। তো স্কুলের পাঠ্যবইতে কিছু প্রাথমিক যৌনজ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়? নাকি, যৌন পত্রিকা ‘আমার দেশ’-এ অশ্লীল ভাষায় এবং বর্ণনায় যৌন শক্তিবর্ধক ‘ওষুধের’ বিজ্ঞাপন বেশি ক্ষতিকর? ॥ দুই ॥ ইনকিলাবে আজ শুক্রবার লংমার্চের ওপর এই শিরোনামের ওপর আরও একটি খবর আছে, ‘ইমান ও দেশরক্ষার জন্যই আমাদের এই আন্দোলন : আল্লামা শফী। ’ ‘ইমান-আকিদা রক্ষায় আমাদের অরাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ লংমার্চে বাধা দিলে আমরা সম্মিলিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে লাগাতার হরতাল বা অবস্থান ধর্মঘটের মতো কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব, এমন হুঙ্কারও দিয়েছেন আল্লামা শফী।

’ মরদে মোমিন মাহমুদুরের ‘আমার দেশ’-এ শিরোনামটি বেশ লম্বা, ‘৬ এপ্রিলের ঢাকা লংমার্চ কর্মসূচীতে ইনশাল্লাহ ৫০ লাখ মুসল্লি যোগ দেবেন; ধর্মনিরপেক্ষতার নামে দেশকে নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে : ইসলাম ও মুসলিম জীবনধারা নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবেই; সাক্ষাতকারে আল্লামা শফী। ’ লংমার্চ এবং আল্লামা শফীকে প্রচার দেয়ার এই প্রতিযোগিতায় দেখছি ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিনও যোগ দিয়েছে। ট্যাবলয়েড দৈনিকগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সেক্স ক্রাইম এবং সেনসেশনালিজমকে প্রাধান্য ও গুরুত্ব দেয়া। মানবজমিনও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু আজ শুক্রবার মানবজমিনের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান শিরোনাম হচ্ছে ‘হেফাজতে ইসলামের চ্যালেঞ্জ’।

এই শিরোনামের পর বলতেই হয় ‘মানবজমিনও’ তাহলে ইসলামের দিকে ঝুঁকছে!! আল্হামদুলিল্লাহ! আজকের এই আলোচনার জন্য ইনকিলাবের দুটো রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে একটু পরে উদ্ধৃত দ্বিতীয় রিপোর্টটি। তবে এখন গতকাল বৃহস্পতিবারের রিপোর্টটির একটু বিস্তারিত উদ্ধৃতি প্রাসঙ্গিক। ইনকিলাবের এই রিপোর্টটির প্রথম প্যারাগ্রাফটি এমন : “লংমার্চ সমন্বয় কমিটির এক সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন কটূক্তিকারীদের গ্রেফতার ও কঠিন শাস্তির আইন পাসসহ ১৩ দফা দাবি আদায়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর আহ্বানে ৬ মার্চের ঢাকামুখী লংমার্চ যে কোন মূল্যে সফল করে ধর্মদ্রোহী, নাস্তিক ও মুরতাদদের কবর রচনা করা হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ইসলামবিদ্বেষী বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুক সাইট বন্ধের দাবি করলেও মুক্তমনা, আমার ব্লগ, ধর্মকারীসহ সব ব্লগে এখনও বেশ কিছু ব্লগার ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে জঘন্য কটূক্তি করে যাচ্ছে। দায়সারাতেই সরকারী মহল একটি লোক দেখানো তদন্ত কমিটি গঠন করে ইসলামপ্রিয় জনতার সঙ্গে প্রতারণার পথ বেছে নিয়েছে।

অন্যদিকে নাস্তিক-মুরতাদদের গ্রেফতার না করে উল্টো উলামা-মাশায়েখদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলেই নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলামবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। ’’ ॥ তিন ॥ হেফাজতে জামাতে ইসলামের আগামী ৬ এপ্রিলের লংমার্চের আয়োজকদের জানা আছে কিনা জানিনা, ২০ বছর আগে, ১৯৯৩ সালের ৪ জানুয়ারি এমন একটি লংমার্চের আয়োজন করেছিলেন বাংলাদেশের তিন ‘হক মাওলানা’ শায়খুল হাদিস, আজিজুল হক; হক মুফতি ফজলুল হক আমিনী এবং খতিব উবায়দুল হক । এখনকার আল্লামা শফী মরদে মোমিনদের মতো তারাও ইসলামের জন্য ‘জানকোরবান’ ছিলেন।

১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর ভারতের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ ধ্বংস করে কিছু উগ্র হিন্দু। প্রতিক্রিয়া এবং প্রতিহিংসায় ৪ হাজার মন্দিরে ভাংচুর চালানো হয় বাংলাদেশে। মোহতারেমা খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভা পরদিন ৭ ডিসেম্বর তীব্র ভাষায় একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। ইসলামের জন্য জানকোরবান ‘তিন হক’ এতেও শান্ত এবং সন্তুষ্ট হলেন না। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিলেন, অযোধ্যায় এই বাবরী মসজিদ পুনর্নির্মাণের জন্য তারা ৪ জানুয়ারি কাফেলা নিয়ে লংমার্চ করে অযোধ্য যাবেন!! সেদিন এই কাফেলা এই লংমার্চের কপালে মোহতারেমা খালেদা জিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রীর জামানায় কি ঘটল তা ইনকিলাবীদের জবানীতেই শুনন।

প্রথম পৃষ্ঠার পুরো আট কলামজুড়ে তিন লাইনের এই শিরোনামটি প্রথমে দেখুন : “তকবীর দিয়ে এগিয়ে যায় কাফেলা : বিনা উস্কানিতে পুলিশ করে লাঠিচার্জ ছোড়ে গ্যাস অযোধ্যা অভিমুখী লংমার্চে গুলি ৫ জন শহীদ : শত শত আহত” ইনকিলাবের যশোর অফিসের বরাতে প্রকাশিত দীর্ঘ রিপোর্টটির শুরুটা এমন : “লাখো মানুষের ঐতিহাসিক লংমার্চ কাফেলায় পুলিশের নির্বিচার গুলি বর্ষণে গতকাল ৫ জন শাহাদাতবরণ করেছেন। ব্যারিকেড, টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জ যে মিছিলের গতি রুখতে পারেনি, উত্তপ্ত বুলেট সে শান্তিপ্রিয় মিছিলে আহত করেছে কাফেলার শত শত তৌহিদী যাত্রীকে। মুখে বাবরী মসজিদ গড়ার প্রত্যয়ী সেøাগান আর তাকবীর ধ্বনির এই ঐতিহাসিক মিছিল সুশৃঙ্খলভাবে ৭টি ব্যারিকেড অতিক্রম করে। ” একটু পর এই লংমার্চের এই বর্ণনা : “অযোধ্যা অভিমুখী ঐতিহাসিক লংমার্চ কাফেলার ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৫ জন লংমার্চকারী নিহত ও শত শত আহত হয়েছে। কাফেলা তিনটি শক্তিশালী ব্যারিকেড ভেঙ্গে যশোর থেকে ১০ মাইল দূরে হাজের আলী বালুরমাঠ নামক স্থানে পৌঁছলে বিডিআর ও পুলিশ লংমার্চকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের এক পর্যায়ে পুলিশ লংমার্চ কাফেলার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।

গুলিতে ঘটনাস্থলেই যশোরের কামরুল (৪৫), হারুন (৩৩) এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে জাকির (১৮), মনিরামপুরের আমিন (২৩) ও ঝিকরগাছার বজলুর রহমান (২৫) নিহত হন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ কামাল (২০), ইউসুফ (৪৫), মোজাম (৩০), যবেদ আলী (২০), সাইদুজ্জামান (১৫) ও আকতার (৩০)-এর অবস্থা সঙ্কটজনক। পুলিশের একটি সূত্র ৪ জন নিহত হবার কথা স্বীকার করেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কাফেলার লাখো লাখো তৌহিদী জনতা ঝিকরগাছা, লাউজানি ও নাভারণে পৃথক পৃথকভাবে অবস্থান করছিল (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত)। গত রবিবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় লংমার্চ কাফেলা যশোর পৌঁছার পর গতকাল সকালে স্থানীয় বাস টার্মিনালে লাখো জনতার মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা আবুল হাসান যশোরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আজিজুল হক, সদস্যসচিব মাওলানা ফজলুল হক আমিনী, সহকারী সদস্যসচিব এআরএম আবদুল মতিন, মুফতী গোলাম রহমান, অধ্যাপক আখতার ফারুক, মাওঃ আহমেদ আবদুল কাদের বাচ্চু, এ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান, মাওঃ আমদাদুল হক আমিনী, মাওঃ আবুল কালাম, মাওঃ আঃ রফি, মাওঃ আবুল কাশেম, ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর হোসাইন ও মুফতী মুনসুরুল হক। আর একটু পর ইনকিলাবের এই বর্ণনা : বক্তারা বলেন, আমরা আল্লাহ-রাসূলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন ও রক্তকে বিলিয়ে দেবার জন্যই বাড়িঘর ছেড়ে লংমার্চে এসেছি। মহাসমাবেশ শেষে লাখো জনতার ঐতিহাসিক লংমার্চ কাফেলা বাস টার্মিনাল হতে দুপুর সোয়া ১২টায় হেঁটে অযোধ্যা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

কাফেলা মুরুলী মোড় ঘুরে বেনাপোল সড়কের দিকে এগুতে থাকলে বেলা ১টা ১০ মিনিটে চাঁচড়া মোড়ে বিডিআর দাঙ্গা পুলিশ ও পুলিশের শেষ বাধার সম্মুখীন হয়। কাফেলার আগে ছিল কাফনের কাপড় পরা বেশকিছু যুবক। বাধাপ্রাপ্ত হবার পর কাফেলা তাকবীর ধ্বনি দিয়ে ব্যারিকেড ভেঙ্গে সামনে এগুতে থাকে। কিছু দূরে পুুলেরহাটে বেলা ১টা ২৫ মিনিটে আরেকটি ব্যারিকেড ভেঙ্গে কাফেলা ধোপাখোলা নামক স্থানে আরেকটি ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এ স্থানের অবস্থান যশোর শহর হতে ১০ কিলোমিটার দূরে।

এখানে ছিল বিডিআর ও পুলিশের শক্তিশালী ব্যারিকেড। এ স্থানে কাফেলার সদস্যগণ জোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর কাফেলার সদস্যরা এ ব্যারিকেড অতিক্রম করেন। ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর সোয়া ২টা। এ সময় পুলিশ কাফেলার ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে।

পুলিশ রাস্তার ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে বাধা সৃষ্টি করে। এসব বাধা অতিক্রম করে কাফেলা লাউজানি গেট নামক স্থানে পৌঁছে। এ স্থানেও কাফেলার ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ করা হয়। লাউজানি গেটের বড় ধরনের ব্যারিকেডও ভেঙ্গে কাফেলা রেলগেটের ওপারে গিয়ে আছরের নামাজ আদায় করে। নামাজের পর কাফেলার বৃহদংশ ঝিকরগাছা সেতুর ব্যারিকেড ভেঙ্গে হাজের আলী বালুরমাঠে পৌঁছলে সেখানে অবস্থানরত বিডিআর ও পুলিশ বাধা দেয়।

এক পর্যায়ে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। তখন ঘড়িতে প্রায় সোয়া পাঁচটা। এ সময় কাফেলার দিক হতে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ স্থানেই ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ও শতাধিক আহত হয়। হাসপাতালে আনার পথে ৩ জন মারা যায়।

এদিকে শায়খুল হাদীসের নেতৃত্বাধীন কাফেলার একটি অংশ ঝিকরগাছায় আটকা পড়ে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী সকাল থেকেই ঝিকরগাছায় অবস্থান করছিলেন। আরেকটি অংশ রাস্তা এড়িয়ে গ্রামের ভেতর দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তারা গতখালি নামক স্থানে বাধাপ্রাপ্ত হয়। সন্ধ্যার পর মাওলানা আজিজুল হক নিহত ও আহতদের দেখতে যশোর হাসপাতালে আসেন।

পুলিশ হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে। হাসপাতালে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। শহরে অবিরাম খ- মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাফেলার সদস্যরা শহরে ফেরেনি। একটু পর ইনকিলাবী প্রতিবেদনের শেষের কয়েকটি প্যারা : সাংবাদিক সম্মেলন গতকাল রাত ১০টায় যশোর প্রেসক্লাবে শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আজিজুল হক এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বিনা উস্কানিতে পুলিশ কাফেলার ওপর গুলিবর্ষণ করেছে।

তিনি ৫ জন শহীদ ও শতাধিক আহত হবার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২ জন মন্ত্রীর উপস্থিত থাকা প্রমাণ করে সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তিনি এ ঘটনাকে বর্বর ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। মাওলানা আজিজুল হক বলেন, ৪ লাখ লোক স্বতঃর্স্ফূতভাবে কাফেলায় অংশ নিয়েছেন। কর্মসূচী লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটি আজ সারাদেশে শোক দিবস এবং ১২ জানুয়ারি বিক্ষোভ দিবস পালনের ডাক দিয়েছে। জেলা লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটি আজ যশোর শহরে পূর্ণ দিবস হরতালের ডাক দিয়েছে।

” উদ্ধৃতিটা দীর্ঘ হয়ে গেল। কিন্তু ৬ এপ্রিলের লংমার্চে যদি উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা যায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে; যেমন নিয়েছিলেন মোহতারেমা খালেদা জিয়া, হয়ত ‘নির্বিচারে’ গুলিও চালাতে হতে পারে; যেমন চালিয়েছিল মোহতারেমার পুলিশ, হয়ত কেউ কেউ শহীদও হবে; যেমন হয়েছিল ৫ জন মোহতারেমার পুলিশের গুলিতে। ২০ বছর আগের লংমার্চে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সহ্য করেননি প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরী। ৬ এপ্রিলের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ আশা করি, সহ্য করবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের উচ্ছৃঙ্খল সন্ত্রাসীরা নাশকতা, ভাংচুর, মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ অনেক করেছে গত কয়েক মাস।

একান্তভাবে কামনা করি, দেরিতে হলেও তাদের জ্ঞান ফিরে আসবে; তারা সন্ত্রাস করবে না, ভাংচুর চালাবে না। ইনকিলাব তখন ঘোরতরভাবে বিএনপি ঘনিষ্ঠ সেই ইনকিলাব তখন এই লংমার্চের ওপর যত খবর-ছবি প্রকাশ করেছে, আল্লামা শফীকেও অনুরোধ করি, সেগুলো দয়া করে পড়ে দেখুন; প্রেস ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় সংসদের লাইব্রেরিগুলোতে এই দিনগুলোর পুরনো পত্রিকা পাবেন। দয়া করে এমন কিছু করবেন না যাতে মোহতারেমা খালেদা জিয়ার পুলিশের মতো মানুষ মারতে হয়। আরও লক্ষ্য করুন, তখন মোহতারেমা ২০ বছর আগের লংমার্চের শহীদদের কারও পরিবারকে দেখতে যাননি, পরে খোঁজ খবরও নেননি। কিন্তু এখন তিনি হঠাৎ সংবেদনশীল, দয়ারসাগর সমুদ্র হয়ে উঠেছেন, সাম্প্রতিক সাপ্তাহগুলোতে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারগুলোকে সমবেদনা জানাতে মানিকগঞ্জ, বগুড়া, এখানে-ওখানে যাচ্ছেন।

কিন্তু যশোরের ঐসব শহীদদের কথা কি তাঁর একবারও মনে পড়ে না? নিহত পুলিশ সদস্যদের কথা তাঁর একটুও মনে পড়ে না? ইনকিলাব, আমার দেশ, নয়াদিগন্ত এবং মানবজমিন এই পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের বলি, ৬ এপ্রিলের লংমার্চটি যদি আদৌ হয়, তারপরদিন তাদের পত্রিকায় যে প্রতিবেদনগুলো ছাপা হবে, সেগুলোকে ২০ বছর আগের ইনকিলাবের উপরে উদ্ধৃত রিপোর্টটির সঙ্গে তুলনা করে দেখব। মরদে মোমিন মাহমুদুরকে বিশেষ করে বলি, আমার দেশ-এর গুহায় আছেন কয়েক মাস, অফুরন্ত সময় এখন আপনার। মোহতারেমার একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আপনি। ইনকিলাব থেকে বিতাড়িতরা এখন আপনার আগে-পাছে ঘুরঘুর করছে। তারাই তখন, ২০ বছর আগে, আপনার নেত্রীকে, তাঁর সরকারকে কেমন ইসলামবিরোধী-মুসলমানবিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছিল, একটু ‘কমনসেন্স’ প্রয়োগ করে তাদের ডি,এন,এ পরীক্ষা করে দেখুন।

॥ চার ॥ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের তরুণ-তরুণীদের ‘নাস্তিক’ আখ্যায়িত করেছেন মোহতারেমা। নাস্তিক আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন ৬ এপ্রিলের লংমার্চের আয়োজনকারী ইসলামের জন্য জান কোরবান কিছু ‘মৌ-লোভী যত মৌলবী আর মোল-লা। ’ আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে তখন, ৯০ বছর আগে এরা নাস্তিক, কাফের, খোদাদ্রোহী, শয়তান হিসেবে বর্ণনা করেছিল। তার বিশ্বনন্দিত কবিতা ‘বিদ্রোহী’কে প্যারোডি করে মোহাম্মদ আবদুল হাকিম নামের একলোক ‘ইসলাম দর্শন’ নামের এক পত্রিকায় আমাদের জাতীয় কবিকেই এই নোংরা ভাষায় বর্ণনা করেছিল : “তুমি বেল্লিক বেঈমান তুমি নমরূদ, তুমি ফেরাউন, তুমি খোদাদ্রোহী শয়তান! তুমি স্বজনের অরি কুলের কণ্টক ভাতৃদ্রোহী বিভীষণ; তুমি কুলবধূর বস্ত্রাপহারী-দুর্ম্মতি দুঃশাসন! তুমি দেশের লাঞ্ছনা জাতির গঞ্জনা সমাজের অপমান; ওরে বিদ্রোহী বেঈমান”! গত সপ্তাহে আমার অনুরোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সতীর্থ বন্ধু, এখন নজরুল ইনস্টিটিউটের ডাইরেক্টর রশীদ হায়দার দুলালের পাঠানো এক মোটা বান্ডিলে দেখতে পাচ্ছি, আরও কত নোংরাভাবে কবি নজরুলকে অপমান-অপদস্ত-উপহাস করা হয়েছে। আগে ইনকিলাবীদের, এখন মরদে মোমিনদের ‘জাতীয়তাবাদী কবিশ্রেষ্ঠ’ আবদুল হাই শিকদারের এসব জানার কথা।

কারণ এই ‘কবিশ্রেষ্ঠ’ও নজরুল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিল বিএনপি-জামায়াতের আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে। তো দুলালের পাঠানো কাগজপত্রে দেখ্ছি, আমাদের জাতীয় কবিও এই আবদুল হাকিমের জবাব দিলেন এই কবিতায় : “মৌ-লোভী যত মৌলবী আর ‘মোল-লারা কান হাত নেড়ে’, দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবে দাও পাজিটার জাত মেরে। ফতোয়া দিলাম কাফের কাজীও যদিও শহীদ হইতে রাজিও। ‘আমপারা’-পড়া হামবড়া মোরা এখনো বেড়াই ভাত মেরে। হিন্দুরা ভাবে, পার্শী শব্দে কবিতা লেখে, ও পাত-নেড়ে।

” আবদুল হাই শিকদাররা এখন যথার্থই বন্দনা করছে আমাদের জাতীয় কবিকে। কিন্তু তারাই আবার ‘আমার দেশ’-এর গুহায় আশ্রয় নিয়ে শাহবাগের তরুণ-তরুণীদের ‘নাস্তিক’ বলে বর্ণনা করে; যেমন তাদের পূর্বপুরুষরা করেছিল কবি নজরুলকে। আমার মনে হয়, একটু দূরে আমাদের এই জাতীয় কবি কবরে শুয়ে,- যৌবনের জয়গান গাওয়া এই তরুণদের,- মরদে মোমিনদের ভাষায় এবং বর্ণনায়, এমন চরিত্র হননে বিচলিত হচ্ছেন; তবে দোয়াও করছেন তিনি। সব শেষে আল্লামা শফীর কাছে একটি আবেদন। আবেদনটি করেছেন ৮০ বছর বয়সী আমার প্রতিবেশী, মীর আবদুস সাত্তার (মোহনভাই)।

মোহনভাই কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। দেশ-বিদেশে ব্যাংকার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব পালন করে এখন তিনি মুক্তাগাছায় তার গ্রামের বাড়ি পদুরবাড়িতে সমাজসেবায় সময় দিচ্ছেন। বনেদি পরিবারের সদস্য, মোহনভাইয়ের দাদা আলহাজ মীর আহমেদ আলী ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। স্কুল-মসজিদ-মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন তাঁর এই দাদা। মোহনভাই এখন এসব প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করছেন, আর, আরও কিছু যোগও করেছেন।

মোহনভাই গত ১৪ মার্চ হাতে লিখে ১০ পাতার একটি চিঠি পাঠিয়েছেন আল্লামা শফীকে তাঁর হাটহাজারী মাদ্রাসার ঠিকানায়। চিঠিটির কপি মোহনভাই আমাকেও পাঠিয়েছেন। চিঠিটি পড়ে আমার মনে হলো চিঠিটির অন্তত একটি প্যারা দেশের মানুষদের জানা দরকার। “আজ বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসা-মসজিদ। অনেক আল্লামা-মাওলানা-মুফতি-পীর, ওলামা-মাশায়েখ।

অথচ এ দেশেই ঘুষের রাজত্ব, ঘুষ খায় কারা? মুসলমানরাই। দুধে পানি মিলায় কারা? মাছে ফরমালিন দেয় কারা? ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে ফলফলারি পাকায় কারা? মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় কারা? সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় কারা? জালিয়াতি করে, ফাড্ডাবাজি করে মানুষকে সর্বস্বান্ত করে কারা? গরিবের হক মেরে খায় কারা? সোজা উত্তর সবাই মুসলমান। বিচিত্র এ মুসলিম দেশ! অথচ এসব নিয়ে এত নামীদামী সব আলেম-ওলামা-মাশায়েখ এত এত সব ইসলামী দল-সংগঠন কেউ এসব অনাচারের বিরুদ্ধে কোন সামাজিক আন্দোলন তো দূরের কথা একটি কথাও বলেন না। দেশকে ভালবাসা নাকি ইমানের অঙ্গ। দেশকে দেখলেই বুঝতে কোনই অসুবিধা হয় না যে, দেশকে কেউই ভালবাসে না আলেম-ওলামা-মাখায়েখ-মুফতি-পীর ফকিররাও না।

জামায়াতীরা তো দেশকে স্বীকারই করে না। রগকাটা-সন্ত্রাসী ছাত্র তৈরি করে। এতিম দেশ। কোন জ্ঞানী অভিভাবক নেই এ মুসলিম দেশের। এমনি মুসলমান।

তাই আমি আজ বহির্বিশ্বের, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে এক উপহাসের পাত্র সন্ত্রাসী হিসাবে পরিগণিত। কেন? কারণ একটাই। রাসুলুল্লাহর হাদিস : (১) যার জ্ঞান নাই-তার ইমানও নাই। (২) যে জ্ঞান থেকে বিচ্যুত হবে, সে আল্লাহ এবং রাসূলের দুশমন। পাক-ভারত উপমহাদেশের মুসলমানরা জ্ঞান থেকে বিচ্যুত হয়েছে ইমান হারিয়ে ফেলেছে যে দিন তারা মূর্খের মতো ধর্মের নামে রাজনীতির মোহজালে অন্ধ হয়ে ‘হাত মে বিড়ি মু মে পান-লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ এ রকম একটা অত্যন্ত নিম্নমানের সংস্কৃতির পরিচায়ক জিগির তুলেছিল এবং পাকিস্তান নামের পৃথিবীর ইতিহাসের একটা অদ্ভুত রাষ্ট্রের সৃষ্টি করেছিল; যার নাম রাখা হয়েছিল ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’।

মুসলমানদের অধঃপতন এবং ইসলামের অবমূল্যায়ন তখন থেকেই শুরু। আল্লাহ কোরানে স্পষ্টভাবে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। এ নির্দেশনা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে মুলমানরা ধর্ম নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করেছে এখনও করে চলেছে। পরিণতিতে পাকিস্তান ভেঙ্গে গেল মুসলমান পৃথিবীর কাছে হাস্যাস্পদ হলো তারপর সন্ত্রাসী আখ্যা পেল। পাকিস্তান এখন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র।

বাংলাদেশের গতি-প্রকৃতিও তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না। ” সুত্র ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.