আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেদনায় স্তব্ধ মন-প্রান হৃদয় , মিডিয়া আর কতদিন এইভাবে মিথ্যাচার করবে ??

Latest Update: চ্যানেল আই/ এটিএন বা যে নিউজ মিডিয়াতেই বলা হয়ে থাকুক যে ছাত্ররা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন, তারা সকলেই ডাহা মিথ্যাচার করছেন!! তাদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না! আমরা বরং আরো সংহত এবং ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি!!! আমরা ইনশাআল্লাহ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবার আগে পিছু হঠছিনা!! আমরা এখনও আমাদের আগের জায়গাতেই আছি। আহত ঈশানের সাক্ষাৎকার: ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বলছিঃ সাড়ে চারটার মাঝে তোমরা সবাই রাত কাটাবার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী(কাঁথা/চাদর/ জামা-কাপড়) নিয়ে চলে আসো। সন্ধ্যা ৬টায় "বোর্ড অফ ড়েসেডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিনারী কমিটির"মিটিং বসতে যাচ্ছে। এখন তো আগামীকাল বিকাল ৫টায় রেসাল্ট ডিক্লেয়ারের আগ পর্যন্ত আমরা সবাই একসাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে অবস্থান করবো ইনশাআল্লাহ। "আমরা পরাজয় মানবো না, এক চুলও পিছু হঠবো না" আরও জানতে হলে এই পেজটির সাথেই থাকুনঃ শুরুর কথাঃ কি ভাবে শুরু করবো বুঝতেসিনা।

কোনদিন যে এইরকম নোট লিখতে হবে এ কথা ভূলেও ভাবিনি। কিন্তু আজকে হসপিটাল থেকে ফিরে এসে কি বলবো অথবা চিন্তা করবো বুঝে উঠতে পারতেসিনা। তৌসিফ আহমেদ ঈশান। 06 CSE এর অতি পরিচিত এক নাম। ভাইয়ার সাথে একই বাসে যাতায়াত করতে করতে পরিচয় ।

এরপর প্রত্যেক কুইজ , কিংবা টার্ম পরীক্ষা ইত্যাদির জন্য তাকে জ্বালিয়েছি অনেকবার । কিন্তু কোন বারেই তাকে এতটুকু বিরক্ত কিংবা রাগ হতে দেখিনি । বুয়েটের শিক্ষকদের নেয়া কুইজে Question এর type সম্বন্ধে তার সাহায্য নেয়া ছিল আমার প্রতি টার্মের নিয়মিত অভ্যাস । এইতো সেইদিনও ভাইয়াকে অভিনন্দন জানালাম সফল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারায় । সেই সাথে বুফের আবদার ।

আর সেই ঈশান ভাই নাকি এখন হাসপাতালে !!! টিভিতে নিউজ ফ্ল্যাশ দেখাচ্ছে যে বুয়েটের লীগের ২ পক্ষের মধ্যে মারামারি; ১ জন আহত। হাহ!!!! বুয়েটের কাকগুলোও শুনলে হাসবে! ঈশান ভাই লীগ করে? পলিটিক্স? আর ঈশান ভাই ? ফাইজলামির জায়গা পায় না? এই রিপোর্ট যে বলদ লিখসে তাকে সামনে পেলে কানের তলায় একটা চরম চটকনা মারতাম আজকে। ২ বছর ধরে এই ছেলেকে চিনে আসছি; এই ছেলের আচার ব্যবহার দেখে আসছি। এই ছেলে পলিটিক্স করে এবং তেলাপোকা একটা পাখি কথা ২ টা আমার কাছে এখন সমতূল্য। ২ পক্ষের মারামারি? হ্যা, ২ পক্ষই তো! ঈশান ভাই একলা নজরুল হলে ওর রুমে ছিলো; ০৮ আর ০৯ এর কিছু ছেলে মিলে ওর উপরে বেসবল ব্যাট আর হকিস্টিক নিয়ে চড়াও হলো।

অবশ্যই ২ টা পক্ষ। একা ঈশান ভাই আর ওইদিকে একটা রক্তপিপাসু গ্যাং। ২ টা পক্ষ... কস্টের হাসি আসতেসে কথাটা শুনে। কি কারনে ঈশান এর এই অবস্থা? ঘটনার বিবরণী শোনা যাক। "০৬ ব্যাচের র‍্যাগ উপলক্ষে আয়োজিত কনসার্টকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত।

বুয়েটের দীর্ঘদিনের ট্রেডিশন অনুসারে র‍্যাগ কন্সার্টের ফেন্স এর ভিতরে শুধুমাত্র র‍্যাগ ব্যাচ থাকে! মেয়েদের নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসি সবকিছু চিন্তা করেই এটা করা হয়ে থাকে। ঈশান গেটে ছিল শুধুমাত্র ০৬ ব্যাচের প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য। তখন সুজিত(০৮ ব্যাচ-এম এম ই_ দুই বছরের জুনিওর!!) জোর পূর্বক তার রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে ভিতরে ঢুকতে চায়! ঈশান তাকে বাঁধা দিলে ঈশানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে!! ঈষান এর কোন প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে। এই অবস্থায় ঈশানকে ডিফেন্ড করার জন্য অন্যান্য বন্ধুরা এগিয়ে আসলে, সুজিত ০৬ ব্যাচকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়!! ঐ রাতে সুজিত ০৬ এর নাহিয়ান নাসির এর উপর চড়াও হয়ে ওর বুকে লাথি মারে। বিদায়ী ব্যাচ হিসেবে ০৬ ব্যাচ কোন ঝামেলায় যেতে চায়নি!! সেটাই পরবর্তীতে কাল হয়!! আজকে দুপুর একটায় সুজিত এর নেতৃত্তে সুজিত, দ্বীপ ,মিঠুন নজরুল ইসলাম হলে ০৬ নিধনে চড়াও হয়! পরিস্থিতি এমন ছিল যে ০৬ এর টি- শার্ট কেঊ সামনে পড়লেই জীবন সংশয় নিশ্চিত।

দুর্ভাগ্যক্রমে কাউকে না পেয়ে এবং ঈশান কে একা পেয়ে তার উপর হকিস্টিক নিয়ে চড়াও হয়। " ঈশান কে কেউ কি হসপিটাল এ দেখে এসেছেন? আমি দেখে আসলাম। বাম হাত ভালো মতন ই ভেঙ্গেছে; ডাক্তার রা বলছেন হয়তবা অপারেশন করা লাগতে পারে। ২ পা ই গুরুতর জখম। ঈশান ভাই এর পিতামাতা হতভম্ব হয়ে ছেলের পাশে বসে ছেলের দিকে তাকায়ে আছেন।

তাদের ছেলে, যাকে তারা কখনো কোনো ঝামেলায় জড়াতে দেখেন নি ; আজকে তুচ্ছ কারনে কিছু সন্ত্রাসীর হাতে যখম হয়ে পড়ে আছে। কি করেছে সে? তার পিতামাতা জানতে চায়। সে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে; তাহলেও একটা কথা ছিলো। সে কি পলিটিক্স করে? কাউকে উত্যক্ত করেছে? কাউকে মেরেছে? কি করেছে? কি????? আর যদি কিছু নাই করে থাকে তাহলে কিসের জন্য আজকে সে বেডে শুয়ে কাতরাবে? ঈশান ভাই এবার বাংলালিংক গ্র্যান্ডমাস্টার চ্যাম্পিয়ন হয়ে বুয়েট আর আমাদের ডিপার্টমেন্টের নাম উজ্জ্বল করে এসেছে; CFICC competition এ ৩য় হয়ে এসেছে। শুধু পড়াশুনা না, পড়াশুনার বাইরেও এধরনের কম্পিটিশন, অথবা ডিপার্টমেন্টের কোনো প্রোগ্রাম arrange করার সময় প্রথম সারিতে যে কয়েকটা ছেলে এগিয়ে আসে তার মধ্যে সে একজন।

এইধরনের একটা ব্রিলিয়ান্ট , নিরিহ ছেলের আজকে এইরকম দশা কেনো হবে? প্রচন্ড রাগ, ক্ষোভ আর হতাশা জন্মাচ্ছে বুয়েট কে নিয়ে। কিছুদিন আগে গৌতম ভাইকে একই ভাবে বুয়েটের লীগের নামধারী কিছু সন্ত্রাসী পিটায়ে গেলো । মাথায় ব্যান্ডেজ; হাত ভাঙ্গা... আজকে ঈশান ভাইকে দেখে পুরা একই ঘটনা মনে পড়ে গেলো। লুপ; শুধু নামগুলার পরিবর্তন। আর কত? ০২ সালের সনি আপুর কথা কি মনে আছে? নাকি উনি শুধুমাত্র একটি নাম হয়ে হারিয়ে গিয়েছেন? আমরা কি কিছুই শিখিনি? বুয়েটের মত একটা জায়গাতে রাজনীতির কালো বিষাক্ত থাবা ঢুকে গিয়েছে আজকে।

গত দেড় বছর ধরে অনেক কিছু দেখেছি; শেষ বর্ষের ছাত্র হিসেবে; এবং একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে। একটি "ব্র্যান্ড" এর দলের লেবাস লাগিয়ে কিছু হায়েনা ঘুরঘুর করছে রক্তের লোভে। আজকে ঈশানের মত একটা ছেলে হসপিটাল এ শুয়ে আছে। কালকে যে আপনি হবেন না বলতে পারেন? আপনি যে আরেকটি মুনিম, গৌতম, ঈশান অথবা সনি আপু হবেন না? বুয়েটের তদন্ত কমিটি নামের প্রহসন কি জিনিস তা দেখার প্রচুর অভিজ্ঞতা হয়েছে। আজকে আমি তো হসপিটাল এ ছিলাম; কই, তদন্ত করতে চায় তারা, স্বাক্ষ্য চায়; তারা কি কেউ এসেছিলেন? ছবি চান তারা? কি চান? ৫ জনের স্বাক্ষ্য? ৮০০ জন এর স্বাক্ষ্য? আজকে ঈশানের নিজের মুখ থেকে ঘটনা শুনে এসেছি আমি।

ভিডিও করে আপ্লোড করবো? তাদের সামনে দেখাবো? কি চায় তারা? নাকি ২-১ জন সন্ত্রাসীকে বাচাতে গিয়ে তারা সকল সাধারন ছাত্রছাত্রীকে ভেড়া বানায়ে হায়েনার সামনে ঠেলে দিতে চায়? প্রশাসন কি এইটাকে একটা কাবাডি খেলা পাইসে? তু তু তু করে করে যাচ্ছে; ছাত্রছাত্রীদেরকে "আমরা সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাই" বলে আশ্বাস দিচ্ছে; এবং তার পরেই মেধাবি ছেলেরা হাসপাতাল এ পড়ে আছে। ছাত্রদের দাবি: বুয়েটের ছাত্রদের দাবি এখন একটাই: জড়িত তিনজনকে বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার। কর্তৃপক্ষের অবস্থান: সকাল বেলা এ ঘটনা ঘটলেও এবং বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড দাবির মুখেও বুয়েট কর্তৃপক্ষ অনড় তাদের অবস্থানে। তারা অপরাধী ছাত্রদের শাস্তি দিচ্ছে না, তারা ছাত্রলীগের সাথে জড়িত বলে। ফ্ল্যাশব্যাক: গত বছর বুয়েট ’০৫ ব্যাচের গৌতম নামের একজন ছাত্রকে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত কিছু ছাত্র পেটালেও কর্তৃপক্ষ কোন শাস্তি দেয়নি তাদের।

আমাদের কথা: সংগ্রামের ভাষা হতে হবে অতি তীব্র । সকল বুয়েটিয়ান এর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বলছি আজকেই , এই ঘটনার বিচার দেখে তারপর থামবেন। কোনো কম্প্রোমাইজ না। কোনো আশ্বস্তি না। যদি এখন ই তারা স্বাক্ষ্য চায় এখনই square hospital এ ঈশান এর কাছে গিয়ে তদন্ত কমিটি গিয়ে নাম গুলো শুনে আসবে।

এবং এদেরকে হল থেকে না, বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করে দিতে হবে। এইটাই এখন একমাত্র দাবি । কোনো retaliation না। রক্তের বিনিময়ে রক্ত না। আমরা পশু না।

আমরা সভ্য; আমরা বিচারে বিশ্বাসী। আমরা চাই, যে আমরা যাতে আরেকটি সনি আপুর মত ঘটনা না দেখি। আজকে যদি আমরা চুপ করে ঘরে ফিরে যাই, তাহলে আজকে ঈশান, কালকে তোমাদেরই মধ্যে কেউ আরেকজন এভাবে পড়ে থাকবে, বিনাবিচারে। আর এই পশুগুলো বুক চাপড়ে ঘুরে বেড়াবে। বুয়েটের প্রাঙ্গনে বাংলাদেশের সেরা সন্তানগুলো আসে; শিক্ষা গ্রহন করতে।

সন্ত্রাসী হতে নয়। এই সন্ত্রাসীদের বুয়েটিয়ান নাম এর অপব্যবহার করা থেকে এখনই থামাতে হবে। না হলে একটা সময়ে বুয়েটিয়ান পরিচয় নিয়ে আমরা সবাই অনেক গর্ব বোধ করতাম; কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে এই একই পরিচয় টা দিতে গিয়ে মাথা নিচু করতে হবে। সোনার ছেলেদের কর্মকাণ্ডের কিছু নমুনাঃ বুয়েটের অফিসিয়াল নোটিশ: ঈশান ভাইয়ার এক্স-রে রিপোর্টঃ এটা ঈশানের হাতের এক্স-রে রিপোর্ট | বুয়েট প্রশাসনের মেরুদন্ড সম্ভবত এর চেয়েও খারাপ ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে ... প্রধান দোষী ঃ একজন হচ্ছে ০৮ MME এর সুজিত সাহা। তার ফেসবুক লিঙ্কঃ আরেকজন হল মিথুন ।

এবং তার ফেসবুক লিঙ্কঃ শেষের জন হল দ্বিপ । এবং তার ফেসবুক লিঙ্কঃ [সর্বশেষ পরিস্থিতি: সন্ধ্যা ৬টায় বুয়েটের "বোর্ড অফ রেসিডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিনারী কমিটির"মিটিং বসতে যাচ্ছে। বুয়েটের সকল গ্রাজুয়েটরা এই আন্দোলনে তাদের একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ও ব্যাচের গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টরা বিকেলে বুয়েটে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া বর্তমান ব্যাচের ছাত্ররা গতকালের মত আজ রাতেও ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছে।

তদন্ত কমিটি আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে রিপোর্ট দিবে বলে জানিয়েছে। ছাত্ররা ঘোষণা দিয়েছে তারা যতক্ষণ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘোষণা না পাবে, ততক্ষণ ক্যাম্পাসেই অবস্থান করবে। সকাল থেকেই বুয়েটের গেটের বাইরে অবস্থান করছে ১০টি গাড়ি ও দুইটি বাস ভর্তি পুলিশ। প্রায় ২০০ পুলিশকে উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছে ছাত্ররা। প্রশাসন ৪৮ ঘন্টা সময় চেয়ে নিয়েছে তদন্তের জন্য।

যদিও কালক্ষেপণের নামে চেয়ে নেয়া হয়েছে এই সময়, তবুও নিজেদের দাবিতে অনড় ছাত্ররা সময় দিয়ে ক্যাম্পাসেই অবস্থান করছে শেষের কথাঃ শুধু আজীবন বহিস্কার নয়, বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে সাজা নিশ্চিত করতে হবে ঈশানের উপর আক্রমনকারী জানোয়ার গুলোর। আর এদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষবৃক্ষের ডাল কেটে খুব একটা লাভ নেই, এর মূলোৎপাটন করতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।