আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তিসংগ্রামের অগ্নিস্পর্শে স্পর্ধিত হোক চেতনা

মৃত্যু বলে কিছু নেই..তুমি যাকে মরণ বল..সে শুধু মারবে তোমাকেই.. ছাত্র ইউনিয়নের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামী বছর ২৬ এপ্রিল। ৬০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে জাতীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। বিজয়ের চল্লিশ বছর পূর্তির প্রাক্কালে গত ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় কমিটির কমিটির সেমিনার উপপরিষদের উদ্যোগে ‌‌‍"‌‌‌‌‌স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ছাত্র ইউনিয়ন" শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে। মুক্তিসংগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখা প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বক্তব্য দিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের একজন হয়ে মুগ্ধ হয়ে শুনলাম সেই গৌরবময় ইতিহাসের স্রষ্টাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজনের বক্তব্য।

রোমাঞ্চিত হলাম তাদের মুখে মুক্তিসংগ্রামে ছাত্র ইউনিয়নের বীরোচিত অগ্রসর ভূমিকার কথা শুনে। সেমিনারটিতে "মুক্তিসংগ্রামে ছাত্র ইউনিয়ন" শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উত্থাপন হয়, যেটি একটি পুস্তিকা আকারে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আরো কয়েকজন সহযোদ্ধার সহযোগিতা নিয়ে প্রবন্ধটির লেখার কাজ করতে গিয়ে বেশকিছু বই, লেখা, ছাত্র ইউনিয়নের দলিল পড়তে হয়েছে। সেসময়, অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করেছি, মুক্তিসংগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থী কমিউনিস্টদের বহুমাত্রিক ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে , এমনকী প্রগতিশীল আন্দোলনের তরুণ কর্মীদের কাছেও অনেকটাই অনাবিস্কৃত। উপলব্ধি করেছি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে বামপন্থীদের অবদানকে মুছে ফেলার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা আজও চলছে।

স্বাধীনতাপরবর্তী ইতিহাসের পাঠে আমরা দেখি সংবিধান লঙ্ঘন করে বারবার সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। এর সুযোগে প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তানপন্থীরা ক্ষমতাকাঠামোর আশেপাশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। বর্তমান সময়ে "মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি" দাবিদারদেরও অনেকে বিচ্যুত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে। তারই প্রমাণ আমরা পাই সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে রেখে দেয়া হয়েছে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম", ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনীতি করার সুযোগ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। রাষ্ট্রক্ষমতায় যারাই পালাক্রমে আসছে, তারা তাদের শাসন-শোষণ কাঠামো টিকিয়ে রাখতে, শ্রেণীস্বার্থ ও গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিল করতে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে বিচ্যুত হচ্ছে।

আর তাই, মুক্তিসংগ্রামের সঠিক, নির্মোহ ,বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের সংস্পর্শে না আসতে পারায় এদেশের তরুণ প্রজন্ম গৌরবময় সেই ইতিহাসের উত্তরাধিকার ও দায় বহন করা থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হচ্ছে এবং অনেকক্ষেত্রে বিভ্রান্তও হচ্ছে। আজকাল অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং তার বিকৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ইত্যাদি প্রসঙ্গ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের আলোচনা শোনা যায়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত এসব আলোচনার অনেকক্ষেত্রেই ইতিহাসের বিকৃতি যেমন ঘটছে, ইতিহাসের খন্ডিত ও অতিসরলীকৃত বিশেøষণ, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একক কৃতিত্ব ও কর্তৃত্ব দাবী করার অশুভ প্রবণতা, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার বিভ্রান্তিকর ও খন্ডিত উপস্থাপনও দেখা যাচ্ছে হরহামেশাই। কিছু কিছু বামপন্থী মহলকেও মুক্তিযুদ্ধের সেই ইতিহাসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সংকীর্ণ, যান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করতে দেখা যায়। মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পর, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে প্রজন্ম প্রস্তুত হচ্ছে সামনের দিনের বাংলাদেশকে প্রগতির পথ ধরে এগিয়ে নেবার অভিযাত্রায় নেতৃত্ব দেবার জন্য, তাদের কাছে গৌরবময় সেই ইতিহাসের সঠিক, নির্মোহ বৈজ্ঞানিক বিশেøষণ নিয়ে যেতে কী আমরা পেরেছি? আমরা লক্ষ্য করি, মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে বামপন্থীদের ভূমিকা নিয়ে নানা বিতর্ক, ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে।

তাদের অবদানকে কোথাও কোথাও খন্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, কোথাও একেবারেই ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি সৃষ্টিতে, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থী তরুণদের প্রগতিশীল অগ্রগামী ভূমিকাও এ সময়কালের তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে দৃষ্টির আড়ালে রেখে দেওয়া হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে, কর্পোরেট মিডিয়াগুলোতে, সরকারী দলিলে মুক্তিসংগ্রামে বামপন্থীদের ভূমিকা নিয়ে কোন আলোচনা খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ, মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক পটভূমি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারাবাহিক বিকাশ সম্পর্কিত আলোচনায় অনিবার্যভাবেই এদেশের ক্রমশ গড়ে ওঠা বাম-প্রগতিশীল শক্তির গৌরবময় ভূমিকা, আত্মত্যাগ এবং নিরন্তর সংগ্রামের প্রসঙ্গ এসে পড়ে। এদেশের বাম প্রগতিশীল শক্তির নেতৃত্বে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মেহনতী মানুষ, প্রগতিশীল মধ্যবিত্তের ধারাবাহিক রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে বামপন্থী তরুণদের অগ্রসর ভ‚মিকাকে বাদ দিয়েও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভীষণভাবে অসম্পূর্ণ। ৫২-এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রদের মাঝে যে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনার উন্মেষ ঘটে, তার উপর ভিত্তি করে প্রথম অসাম্প্রদায়িক ছাত্রগণসংগঠন হিসেবে ছাত্র ইউনিয়নের অভ্যুদয় এদেশের ছাত্র আন্দোলনকে প্রদান করে এক নতুন মাত্রা। ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, এগার দফা উত্থাপন ও ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ইউনিয়নের অগ্রসর ভ‚মিকাই ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-গণআন্দোলনগুলোকে সংগঠিত করতে পেরেছিল। পুরো পাকিস্তানপর্বেই আমরা দেখি, ছাত্র ইউনিয়ন ও বামপন্থী তরুণেরা যেমন সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাঙালি জাতিসত্ত্ত্বার বিকাশে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তার পাশাপাশি সামরিক শাসন, অর্থনৈতিক শোষণ, সাম্প্রদায়িকতা ও দ্বিজাতিতত্তে¦র বিরুদ্ধেও করেছে নিরন্তর সংগ্রাম । মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরী এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ছাত্রসমাজ এবং জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নকে যেমন বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী শক্তির দোদুল্যমানতা, আপসকামীতা এবং সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করতে হয়েছে, তার পাশাপাশি উগ্র ও সংকীর্ণ বাম বিভ্রান্তি ও বিচ্যুতিকেও মোকাবেলা করতে হয়েছে।

সে বাস্তবতায় এবং প্রেক্ষাপটে ছাত্র ইউনিয়ন যথাসম্ভব ও তুলনামূলক সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। শুধু তত্ত¡, প্রচার ও রাজনৈতিক কাজই নয়, ছাত্র ইউনিয়নের শীর্ষ পর্যায়সহ সাধারণ স্তরের সচেতন কর্মীরা মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে অস্ত্র হাতে যুদ্ধের ময়দানে সরাসরি লড়াই করেছে। ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থী তরুণদের অগ্রসর ভূমিকার কারনেই একটি সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদভিত্তিক ‍‍‍‍‍‌‌’বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আন্দোলন না হয়ে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তরণ ঘটেছিল জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের ধারায়। বামপন্থীদের অবদানেই দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সুবিধাবঞ্চিত বাঙালি মুসলমানদের শরিকী পাওনা আদায়ের জন্য পাকিস্তানকে দ্বিখন্ডিত করে লাহোর প্রস্তাব-এর আদিরূপে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামের বদলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য থেকে মুক্তিলাভ ও শোষণমূলক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে পরিণত হয়েছিল। এই গৌরবময় ইতিহাসের সংস্পর্শে এসে তাই প্রশ্ন জাগে, কীভাবে সেসময়ে ছাত্র ইউনিয়নের বিস্তার এবং তার সাথে সাথে ছাত্র আন্দোলনের বিকাশ আমাদের মুক্তিসংগ্রামের মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল? ছাত্রদের আন্দোলন কী কারণে গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষাকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পেরেছিল এবং মেহনতী মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিল মুক্তিসংগ্রামে? আমরা লক্ষ্য করি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর এক অগ্রসর অংশ হিসেবে ছাত্রসমাজকে চিহ্নিত করা হলেও, সেসময় এর ভেতর দরিদ্র কৃষকশ্রেণীর সন্তানদের সংখ্যার আনুপাতিক বৃদ্ধি ঘটে।

নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা ছাত্ররা ছাত্র আন্দোলনকে ক্রমশ র‌্যাডিকাল চরিত্র নিতে প্রভাবিত করে। এছাড়া, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম, সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার বিকাশ সেসময়ে বহু তরুণকে উদ্বুদ্ধ করে বামপন্থী আদর্শে। ছাত্রসমাজ এবং গণমানুষের মধ্যে এক নিবিড়, অর্গানিক যোগাযোগ এবং আন্ত:সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ছাত্রসমাজ ক্রমশ তাই জনগনের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার উপযোগী হয়ে ওঠে। তারই প্রমাণ আমরা দেখি, যখন ছাত্রসমাজই ছয় দফার অসম্পূর্ণতা দূর করতে ১১ দফার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সাম্রাজ্যবাদবিরোধীতা, একচেটিয়া পুঁজিবাদের বিলোপ, কৃষক-শ্রমিকের বিভিন্ন দাবী, ছাত্রসমাজের শিক্ষা বিষয়ক দাবী ইত্যাদি যুক্ত করে ছাত্রসমাজ ১১ দফাকে পরিণত করে বাংলার গণমানুষের মুক্তির সনদে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা, যা মূলত নিহিত আছে ১১ দফাতে, তার উপরই ভিত্তি করে রচিত হয়েছিল ৭২’র সংবিধান। কিন্তু সেই সংবিধানকে বারবার কলংকিত করা হয়েছে, কাঁটাছেঁড়া করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ফলে আমরা পাকিস্তানী উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ আমরা পাই নি। নিশ্চিত হয় নি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি।

সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানও আমরা দেখেছি। ছাত্র আন্দোলনের শক্তিকেও নানা কায়দায় খন্ডিত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ গরীব মেহনতী মানুষের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথকে বন্ধ করে দিচ্ছে। ভোগবাদী, ক্যারিয়ারমুখী সংস্কৃতি এবং ‘বিরাজনীতিকরণ’-এর রাজনীতি শহুরে মধ্যবিত্ত তরুণদের বিচ্ছিন্ন আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপনে উৎসাহিত করেছে। ছাত্ররাজনীতিতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে নির্লজ্জ লেজুরবৃত্তি, সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির বিষ।

ছাত্রসমাজের শক্তিকে খন্ডিত করে, বিকশিত হয়েছে লুটেরা অর্থনীতি। এই প্রতিকূল স্রোতে দাঁড়িয়েও ছাত্র ইউনিয়ন ও প্রগতিশীল অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছে। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়ন ও বামপন্থীদের নেতৃত্বে ছাত্রসমাজের দুর্বার আন্দোলন আবারো প্রমাণ দিয়েছে ছাত্রসমাজের শক্তি ও সামর্থ্যরে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, সন্ত্রাস দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও প্রগতিশীলরা রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন থেকে দেশের সম্পদ রক্ষা করতে তরুণ প্রজন্মে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে।

৯৯ শতাংশের পক্ষের ওয়াল স্ট্রীট আন্দোলন তরুণদের উদ্বুদ্ধ করছে পুঁজিবাদবিরোধী সংগ্রামে। ফেসবুক,ব্লগসহ, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত অগ্রসর তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় প্রগতিমুখী বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখছে। এই বাস্তবতায়, গৌরবময় ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এ প্রজন্মের স্বপ্নবান তরুণদের দায়িত্ব নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের। মুক্তিসংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস ও চেতনা তুলে ধরতে হবে এ প্রজন্মের তরুণদের কাছে। মুক্তিসংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের মিশে যেতে হবে মানুষের কাছে।

মেহনতী মানুষের সাথে নিবিড় অর্গানিক যোগাযোগ তৈরী করতে হবে। মেহনতী মানুষের স্বার্থের সাথে নিজেদের স্বার্থের ঐক্যসূত্র খূঁজে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বৈষম্য ও শোষণহীন বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে পরিচালিত করতে হবে নিরন্তর রাজনৈতিক সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়নের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধেও ছাত্র ইউনিয়ন রাখবে অগ্রসর ভূমিকা, ছাত্র ইউনিয়নের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে বিজয়ের ৪০ বছরে দাঁড়িয়ে সেই প্রত্যাশা গোটা জাতির। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।