আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগদ্যঃ লাইক কথন

বাস্তবতার ভার্শন ২.৭.১২ এ আছি। নিয়মিত আপডেট হচ্ছি। -ভাই আপনি উনার পোস্টে লাইক দেন, কমেন্ট করেন, আমারটায় করেন না কেন? -আমি কার পোস্টে লাইক দিব না দিব সেটা আমার ব্যাপার। -কিন্তু আপনি তো আমার কাছের লোক, আপনি আমাকে দিবেন না? -ফেসবুকে বসলে সবাই-ই এক হয়ে যাই, কাছে দূরের ব্যাপার নাই। -তারপরেও থাকে না, ছোট ভাই ব্রাদার মানুষ।

-আমার লাইক কি খুব জরুরী? -জ্বি তা না। আপনি উনাকে দেন, আর আমাকে দেন না তো তাই বললাম আর কি! -আচ্ছা এখন থেকে আপনার পোস্টেও লাইক দিবো। এই বলে সাইফ রুদ্রের সব পোস্টে লাইক দেওয়া শুরু করলো। একটু পরে রুদ্র আবার সাইফকে নক করে বললো, -ভাই এটা কি করলেন? -কেন কি হয়েছে? -অফিসের বস আমাকে থাপ্পড় মেরেছে, এটা পোস্ট দিলাম, কেউ লাইক দেয়নি, আর আপনি দিয়ে বসলেন? -কেন ভাই, কেউ না দিলে যে আমি দিতে পারবো না এমন কোন কথা আছে? -না তা নেই, কিন্তু আপনি এটা করলেন কিভাবে? আমার মান সম্মানের উপর আঘাত! -কেন আপনিই না একটু আগে বললেন লাইক দিতে। তাই দিলাম।

কেন খুব বেশি পড়ে গেছে লাইক? রুদ্রের সাথে কথা বলতে বলতেই সাইফ রুদ্রের পুরনো পোস্টগুলোতে আবার লাইক দেওয়া শুরু করলো, লাইক দেওয়ার মাঝখানেই আবারো রুদ্র নক করে বসলো চ্যাটবক্সে, -আরে ভাই আবার কি করলেন? -কেন? -আমার স্ত্রী আমাকে ডিভোর্স দিলো আর আপনি এটা পছন্দ করলেন? -আপনি না একটু আগেই লাইক দিতে বললেন? -আপনার বিবেক বলে কিছু নেই? -কেন থাকবে না। লাইক তো আমি আপনার জন্য দেইনি, দিয়েছি আপনার স্ত্রীর জন্য। -মানে? -মানে একটা পেইন ক্যারেক্টারের সাথে না থাকাটাই তো ভালো। তাই না! এরপর আবারো সাইফ একাধারে রুদ্রের পুরনো পোস্ট ঘাটতে ঘাটতে সমানে সব পোস্টে লাইক দিতে থাকলো। এবার রুদ্র হুঙ্কারের ইমোটিকনস দিয়ে চ্যাটবক্সে নক করলো, -ভাই হচ্ছে টা কি? আর কত? -কেন ভাই? কি হয়েছে? -আমার বাবা মারা গেছিলো, সেটা পোস্টে জানিয়েছিলাম, আর আপনি সেটাতে লাইক দিয়ে বসলেন? -কেন ভাই এতে সমস্যা কি? আমি আপনার প্রতি সমবেদনা জানালাম।

-ওটা তো কমেন্টেও করতে পারতেন, সবাই তো কমেন্টেই সমবেদনা জানালো। -না না, লাইক হলো সহমত ও সমবেদনার প্রতীক। -এত কিছু বুঝেন, আর কোথায় লাইক দেওয়া লাগবে, কোনটায় লাগবে না এটা বুঝেন না! থাক আপনার আর লাইক দেওয়া লাগবে না। -আহ! ভাই বাঁচালেন। -আপনাকে ফ্রেণ্ডলিস্টেও রাখবো না।

-ওহ হো! শুকরিয়া। এত খুশি কই রাখি। -আপনি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে ছিনিবিনি খেলেছেন, আপনাকে ব্লক করে দিবো। -আমি তো ভাই পুরুষ, আপনিও পুরুষ। আপনাকে নিয়ে ছিনিবিনি খেলার কি আছে? সাইফের লাস্ট মেসেজটা শেষপর্যন্ত আর রুদ্রের কাছে পৌছায়নি।

তার আগেই রুদ্র তাকে ব্লক করে দিলো। পুরুষ হয়ে পুরুষের ছিনিবিনি কিভাবে খেলতে হয় সেটা তার আর জানা হলো না। লাইকগুলোও আর লাগাতার দেওয়া গেলো না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।