বিকল্প গণমাধ্যম দীর্ঘজীবি হোক! আগেই বলে নেই, আমি সিনেমার একজন সাধারণ দর্শক। ভালো মানের বাংলা সিনেমাগুলো দেখতে মিস করিনা, সিনেমা বিষয়ক লেখালেখিগুলো নিয়মিত পড়ি। সিনেমার প্রতি একটা ভালোবাসা থেকেই আসলে আমার এগুলো করা। দর্শক হিসাবেও যে আমি উচ্চমার্গীয় এমনটি নয়। সোজাভাবে ডায়লগ না বললে সে সিনেমাটি বুঝতে পারিনা, এমন টাইপের দর্শকই বলতে পারেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগ আর সামাজিক যোগাযোগ সাইটের কল্যানে একটি বিতর্ক খুব চোখে পড়ছে। ভারতীয় সিনেমা বাংলাদেশে প্রদর্শন নিয়ে। অধিকাংশই বাংলাদেশে ভারতীয় ছবি প্রদর্শণের বিপক্ষে। তবে এর পক্ষে আমার নিজস্ব কিছু যুক্তি রয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ঠরা বিকল্প কিছু বিষয় নিয়েও ভাবতে পারেন।
সাধারণ একজন দর্শক হিসাবেই এগুলো তুলে ধরছি।
প্রথমে বাংলা সিনেমার মান নিয়ে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। আমি বন্ধুদের সঙ্গে এখন যদি একটি ছবি দেখতে চাই তাহলে কোন টা দেখবো?? 'ছেড়ে দে শয়তান' বা 'গরীবের ভালোবাসা টাকা দিয়ে কেনা যায় না' ডায়লগ দেয়া ছবি? এটি কি দেখা আমার পক্ষে সম্ভব হবে বা ধৈর্য্য থাকবে? আমার পছন্দের ছিনেমা থাকেনা বলেই আমি ছিনেমা হলে যাই না। অধিকাংশ নিয়মিত দর্শকই এখন এই একই কারণে সিনেমাহল বিমুখ। এখন এই সিনেমা হল বিমুখ মানুষ কে কিছু ভালো সিনেমা দেখিয়ে তাদের হলমুখি করা গেলে উদ্যোগ টা খারাপ কি?
সিনেমা হলে দর্শকদের এখন অনেক সংকট।
এমনটিই বলছেন অধিকাংশ হল মালিক। এখন হলের মালিকরা তাদের মাসের পর মাসের ক্ষতি পোষাতে যদি ভারতীয় ছবি আনে, কিছুটা লাভের মুখ দেখে, তাতে এত নাচানাচির কি আছে? সংশ্লিষ্ঠদের বলছি, আগে আপনারা ছিনেমার মান একটু ভালো করার চেষ্টা করুন। তবেই দেখবেন মানুষ ভারতীয় সিনেমাকে কিভাবে বর্জন করবে, দেশীয় সিনেমা দেখা শুরু করবে। আপনারা যে জিনিস দেখাবেন সেটি যদি হয় দর্শন অযোগ্য তাহলে কি নিয়ে বা কার পক্ষে আপনারা আপনারা আন্দোলন করবেন?
অনেকেই বলেন, স্বল্প বাজেট, প্রযুক্তিগত সমস্যা আমাদের। তাহলে আমাদের দেশেই স্বল্প বাজেটে মনপুরা, গেরিলা, মাটির ময়না-র মতো আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা তৈরি হলো কিভাবে? আর স্বল্প বাজেটে কি আমাদের দেশেই কোন মানসম্মত সিনেমা হচ্ছেনা? আগে তো সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতায়ই পাওয়া যেত না, এখন অনেক সহায়তাই করছে সরকার।
তারপরও কেনো সিনেমার মান এ পর্যায়ে থাকবে?
এখন ভারতীয় সিনেমা আনলে আমাদের সিনেমা শিল্প ক্ষতির মুখে পড়বে, মেনে নিচ্ছি। তবে বছরে ১০ টা বা ১২ টা ছবি কি এমন ক্ষতি করে ফেলবে? এতে বরং আমাদের লাভই হবে, হল মালিকরা ক্ষতি পুষিয়ে হলের পরিবেশ সুন্দর করার কাজে মন দিবেন। আমরা ভালোভাবে বসে, সুন্দর পরিবেশে সিনেমা দেখার সুযোগ পাবো। আর প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় সিনেমার মান নিয়েও ভাবতে শুরু করবেন দেশীয় পরিচালকরা।
তাই আমার মনে হয়, দেশে ভারতীয় সিনেমা চললে তেমন সমস্যা নেই, তবে একটা লিমিটেশন থাকতে হবে।
যেমন বছরে ৬ টা বা ১২ টা। আর একই সঙ্গে আমাদের মান সম্মত সিনেমা যেগুলো আছে সেগুলো ভারতে চালানোর ব্যবস্থা যাতে হয় সে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।