আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশি চলচিত্রের দৈনদশা এবং ভারতীয় চলচিত্র প্রভাব আমাদের সংস্কৃতিতে

শ্রাবণের রাত হলিউডের চলচিত্রের অবস্থান প্রথমে । তার পর আছে ভারতীয় চলচিত্র । তাদের এ অবস্থান বুঝতে বেশি দূর যাওয়া লাগে না । রাস্তায় যখন মোবাইল ফোনের রিংটোন শুনলে বুঝা যায় কি অবস্থা !!!!! এমন কি ছোট শিশুদের মুখেও হিন্দি সিনেমার গানগুলো শুনলে বুঝা যায়, হিন্দি সিনেমার প্রভাব কতটা আমাদের সংস্কৃতি উপরে পড়েছে । এভাবে চলতে থাকলে খুব বেশি দিন লাগবে না আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলতে ।

এখনই যে অবস্থানে এদের প্রভাব রয়েছে তা কোন অংশে কম নয় । আমাদের দেশের জাতিয় দৈনিকের বিনদনের পাতাগুল এখন এদের দখলে । অনেক দৈনিকের বিনদন পাতা ভরে না এদের খবর ছাড়া । আমাদের দৈন দশা একই সাথে প্রকাশিত হচ্ছে । দৈনিকের দোষ কি ????? তারা তো মানুষ যা পছন্দ করে তারা সেই ধরনের খবর প্রকাশ করে ।

তাহলে দায় কার ????? সরকার – অভিনেতা – পরিচালক – প্রযোজগ ????? একদিনে এ অবস্থা তৈরি হয়নি । এখন এই সেক্টরে এক দল মেধাহীন মানুষের পদভারে মুখরিত । বাকিরা লজ্জায়ে মুখ লুকিয়েছেন, কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন । যখন দেখি আমাদের সিনেমায়ে হিন্দি সিনেমা কে অন্ধ ভাবে অনুসারন করা হচ্ছে তখন খুব খারাপ লাগে । মাঝে মাঝে এই অনুসরণ হাস্যকর হয়ে পড়ে ।

কাহিনি-গান এমন ভাবে নকল হয় যে, দুধের শিশুও বলতে পারবে এটা কোন সিনেমার নকল । হিন্দি সিনেমা যে নকল হয় আমি কিন্তু তা অস্বীকার করছিনা । হিন্দি সিনেমার গান-সুর- কথা একেবারে এমন ভাবে নকল করা হয় যে, আমি মাঝে অবাক হই এদেশের সঙ্গিত গায়করা এমন গান কিভাবে গান ???? হয়ত টাকা কাছের পরাজিত হন গায়করা । সিনেমা যে আমাদের শিল্প সংস্কৃতি অংশ তা আমাদের সিনেমা মানুষ গুল ভুলে যান । তারা মনে করেন এটা টাকা বানানর মেশিন ।

হিন্দি সিনেমার কাহিনী এমন ভাবে নকল করা হয় যে, এগুল দেখতে খুব খারাপ লাগে । তখন মনে হয় বাংলা মা কি একজন ভাল কাহিনীকার এঁর জন্ম দিতে পারিনি । মান্না মারা যওয়ার পর মনে হয়েছিল যে, এমন অনুসরণ মনে হয় বন্ধ হবে । কিন্তু আমার এই ধারনা কে পুরাপুরি ভুল প্রমান করতে শাকিব খানের বেশি দিন লাগেনি । দোষ শাকিব খানের একার না ।

শাকিব খান কে আমরা সামনে থাকে বলে, আমরা শাকিব খান কে দোষ দিয় । মেধাহীন এক দল মানুষের তৈরি হল শাকিব খান । কিন্তু তিনি যদি চাইতেন তবে তিনি পারতেন সিনেমার উন্নতি করতে । তিনি যদি প্রযোযক-পরিচালকদের বলতেন আমি ভাল সিনেমা না হলে,অভিনয় করব না । তাহলে কিন্তু পারতেন ।

আমি তার কথা এমন ভাবে বলার একটাই কারন, তা হল এখন তার অবস্থান সবচেয়ে শক্ত । কিন্তু তিনি তা করেনি । অল্প পরিশ্রমে যদি এত টাকা আয় করা যায় তবে কোন বোকা পরিশ্রম করে । “ আমি বাংলা সিনেমার শেষ নায়ক’’ এই ঘোষণ দেওেয়ার সময় মনে হয় শাকিব খানের চলে এছেসে । আমাদের সিনেমার লোকদের কিছু বলতে গেলে, তারা সরকার কে দায়ি করে, সেন্সরশিপ কে দায়ি করে ।

তখন মনে হয় তাদের জিজ্ঞাসা করি “মন পুরা” সিনেমায় সরকার কি কি হেল্প করেছে ????? খোঁড়া যুক্তি দিয়ে আর কত দিন। ইরানি সিনেমাতো কত ধরনের সেন্সরশিপ । তারপরও তারা এর ভিতর দিয়ে ভাল করছে । এবং তা সারা পৃথিবীতে প্রশংসা কুড়াছে । বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ড তাদের থেকে অনেক ভাল ।

সিনেমা নির্মাতাদের আর একটা অভিযোগ পাইরেসি । এঁর কারনে নাকি ভাল সিনেমা বানানো যাচ্ছে না । উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারলে পাইরেসি ঠেকান সমভাব । সেটা “মন পুরা” করে দেখিয়েছে । আচ্ছা ধরে নিলাম পাইরেসি ঠেকান সমভাব না কিছু কিছু ক্ষেএে ।

তাই বলে এটা বড় কোন অন্তুরায় না । “রা-অন” মুক্তির পর দিনই অনলাইন চলে আসে । কিন্তু তার জন্য “রা-অন”ব্যবসা কি বন্ধ হয়েছে ????? এমন অনেক সিনেমা চলে আসছে অনলাইন । কিন্তু তাদের ব্যবসা যেমন চলার তেমন চলছে । হয়ত যত লাভ করার কথা ছিল ।

তার চেয়ে সামান্য কিছু কম হয় । পাইরেসি যদি বড় কোন সমস্য হত তাহলে হলিউড এঁর সিনেমা অনেক আগে বন্ধ হয়ে যেত । হাঁ , তবে তার সাথে একটা কথা অঙ্গা অঙ্গি ভাবে জড়িত । আর তা হল, সিনেমা হলের পরিবেশ ভাল হতে হবে । সে খানে অতিরিক্ত কিছু সুবিধা যোগ করতে হবে ।

যা ঘরে বসে কোন ভাবে পওয়া যাবে না । আর তা হল থ্রী ডি আর ডলবি সাউন্ড এঁর ব্যবস্থা করতে হবে । সব শেষে আমি দর্শকদের কথা বলব । মানুষ চায় বিনোদন । উৎস তাদের কাছে বড় কথা না ।

মানুষ যদি হিন্দি সিনেমা থেকে বিনোদন না পান , তাহলে তিনি অন্য উৎস খুঁজবে । সিনেমার এমন অবস্থা চলেতে থাকলে, কোন এক সুন্দর সকালে দেখব আমাদের সিনেমা হল গুলতে হিন্দি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে ( তবে যদি কিনা সিনেমা হল গুল অবশিষ্ট থাকে ) । পরিবেশক আর হল মালিকদের এ ব্যাপারে যুক্তি থাকবে বাংলা সিনেমা চলে না , আমরা কি ভাবে ব্যবসা করে টিকে থাকব । তাদের কথা যুক্তি যুক্ত । তারা ব্যবসায়ী মানুষ, তারা টাকা ছাড়া কিছু বুঝে না ।

আমরা তখন সরকার কাছে যাব । কোন এক মন্ত্রী খুব সুন্দর করে হাঁসতে হাঁসতে বলবেন , যেহেতু বাংলা সিনেমা ব্যবসা করতে পারসে না , আর বাংলাদেশ এঁর মানুষ অবৈধ ভাবে হিন্দি সিনেমা সিডি- ডিভিডি তে দ্যাখে এবং তার জন্য সরকার কোন ভ্যাট পায় না , তাই আমরা বৈধ করে কিছু ভ্যাট ব্যবস্থা করছি মাএ । ভাল সিনেমা হলে সেটা আমরা হলে গিয়ে দেখি , এটা আমরা বারবার প্রমান করেছি । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।