আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিল যে প্রতিবেদন, তাই ম্যাসকারেনহাসকেও আজ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি..

মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পরও আমরা কি এর প্রকৃত ইতিহাস পুরোপুরি জানতে পেরেছি? জানার চেষ্টা করতে গেলে শুরু হয় দ্বন্দ, কথায় যেমন বলে "নানা মুনির নানা মত"। মিডিয়ার কল্যানে এখনো আমরা এক্সক্লৃসিভ তথ্যগুলো জানতে পারছি...এর মধ্যে এটি একটি যা আগে জানা ছিলো না...... ১৩ জুন ১৯৭১। এদিন যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমস পত্রিকায় ‘জেনোসাইড’ শিরোনামে আট কলামজুড়ে ছাপা হয় একটি প্রতিবেদন। লিখেছেন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস। তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) মুক্তিকামী মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন-গণহত্যার চিত্র তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।

নিরাপত্তার কারণে আত্মগোপন করতে হয় ম্যাসকারেনহাসের পরিবারকে। তবে ওই প্রতিবেদনই পাল্টে দেয় ইতিহাস। ম্যাসকারেনহাসের ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমেই বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারে, বাংলাদেশের জনগণের ওপর কী নির্মম নির্যাতন চালায় তত্কালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ওই প্রতিবেদনের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত প্রবল হয় এবং ভারতকে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে উত্সাহিত করে। ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন, মর্মস্পর্শী ওই প্রতিবেদন তাঁকে এতটাই ব্যথিত করেছে যে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার লক্ষ্যে তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও মস্কোয় কূটনৈতিক তত্পরতা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।

ম্যাসকারেনহাসের প্রতিবেদনও উদ্দেশ্যমূলক ছিল না। ম্যাসকারেনহাস সম্পর্কে সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্স লিখেছেন, সততার সঙ্গে কাজ করা খুব ভালো একজন সাংবাদিক তিনি। ম্যাসকারেনহাস ছিলেন খুবই সাহসী। তখন পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিল সামরিক বাহিনী। ম্যাসকারেনহাস জানতেন, এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে পাকিস্তান থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।

তখনকার পরিস্থিতিতে এত বড় ঝুঁকি নেওয়া মোটেও সহজ ছিল না। ১৯৮৬ সালের ৩ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাহসী সাংবাদিক ম্যাসকারেনহাস। প্রয়াত স্বামী সম্পর্কে তাঁর স্ত্রী আইভন ম্যাসকারেনহাসের বক্তব্য এমন, ‘ওর মা সব সময় ওকে বলত, সদা সত্য কথা বলবে। ও আমাকে সব সময় বলত, আমার সামনে একটা পর্বত রাখো, আমি সেখানেই উঠব। ও কোনো কিছুতেই ভয় করত না।

’ [কৃতজ্ঞতা: বিবিসি অনলাইন, প্রথম আলো। ] ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.