হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে সদ্য লিজে আনা দুটি বোয়িং বিমানসহ ৪টি বোয়িং বিমান চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষ ও অভিজ্ঞ বৈমানিকদের নিয়োগ না দিয়ে পাকিস্তান থেকে কম দক্ষ ২০ জন বৈমানিক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। ফলে বিজয়ের মাসে বিমানের আকাশ যাচ্ছে পাকিস্তানিদের হাতে। আর বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স যুক্তরাষ্ট্রের আকাশপথ হারাচ্ছে।
এ নিয়ে সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মাহমুদ হাসানের স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। গত কসকভ সম্মেলনে সিএএবির চেয়ারম্যানকে কসকভের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়।
কসকভের ওই সম্মেলনে পাক এয়ার কমোডর (অব.) তাহিরের সাথে সিএএবির চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মাহমুদ হাসানের সাথে বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হয়। পুরনো বন্ধুকে পেয়ে তিনি নতুন করে বরণ করে নেন।
ওখান থেকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয় যে, বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া বোয়িং বিমানগুলো পাক বৈমানিক দ্বারা পরিচালনা করা হবে। আর বিজয়ের মাসেই তা ষোলকলা পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিমান ও সিএএবি কর্তৃপক্ষের মধ্যে মনোমালিন্য ও প্রশাসনিক রশি টানাটানি শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের বৈমানিকরা পাকিস্তান থেকে কম অদক্ষ বৈমানিক নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে।
তারা কর্তৃপক্ষেকে জানিয়ে দিয়েছে যে, পাক থেকে ২০ জন কম অদক্ষ বৈমানিক নিয়োগ দেয়া হলে তারা আবার আন্দোলনে নামবেন। বিমান ও সিএএবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে ‘পালকি’ ও ‘অরুণের আলো’সহ বিমানবহরে ৪টি বোয়িং বিমান। বাংলাদেশ পাইলট এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০১৮ পর্যন্ত ১০ জন পাইলট হলেই চলবে।
কিন্তু সিএএবি চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থা (আইকাও) আইনের তোয়াক্কা না করে ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর, পাইলট ও ফার্স্ট অফিসারসহ ২০ জনকে পাকিস্তান থেকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া করছেন। পাইলট এসোসিয়েশনের এক নেতা বলেছেন, পাকিস্তান থেকে বৈমানিক না এনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈমানিক আনতে আইকাও’র নির্দেশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন না করে সিএএবির চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছেমতো পাকিস্তান থেকে ২০ জন বৈমানিককে নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন।
এতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্র-ঢাকা রুটসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ ক’টি রুটে চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। পাইলট এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ বলছেন, ১০টি বোয়িংয়ের জন্য ১ জন করে এফওএ দরকার; আমাদের ৪টি বোয়িং রয়েছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ জন এফওএ থাকলেই চলবে।
কিন্তু সিএএবি কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান থেকে ২০ জন এফওএ নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন। এতে একদিকে সরকার আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে;
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র-ঢাকা রুটসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ ক’টি রুট হারাবে বাংলাদেশ বিমান। আর এটা বাস্তবায়ন হলে আমরা আন্দোলনে নামব। সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থা (আইকাও) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ক্যাটাগরি-২ থেকে ক্যাটাগরি-১-এ উন্নীত করেছে। কিন্তু সেই আইকাও’র নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির স্বার্থে পাকিস্তান থেকে ২০ জন কম অদক্ষ বৈমানিক আনা হচ্ছে।
বিমান সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সালে পাকিস্তান থেকে বৈমানিক নিয়োগ দেয়া হলে বাংলাদেশ পাইলট এসোসিয়েশন (বাপা) আন্দোলনে নামে। ওই সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পাইলটদের পক্ষ নেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও বিজয়ের মাসে পাকিস্তান থেকে ২০ জন বৈমানিক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ব্যাপারে সিএএবির চেয়ারম্যানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।