আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে ভারতে ‘অবৈধভাবে’ অভিবাসী হওয়া বাংলাদেশিদের সংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশের ভূমি দখল করার প্রস্তাব তুলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছেন ভারতের সাবেক মন্ত্রী ও জনতা পার্টির সভাপতি অধ্যাপক সুব্রামনিয়াম স্বামী।
গত ১৬ জুলাই ভারতীয় ডেইলি নিউজ এবং এনালাইসিসে (ডিএনএ) প্রকাশিত ‘হাউ টু ওয়াইপআউট ইসলামিক টেরর’ শিরোনামে এক নিবন্ধে সুব্রামনিয়ামের ওই প্রস্তাব আসার পর যুক্তরাষ্ট্র ও হার্ভার্ডেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর হার্ভার্ড সামার স্কুলের কর্মকর্তারা বৈঠক করে ড. সুব্রামনিয়ামের দুটি কোর্স কেড়ে নেন। হার্ভার্ডে ‘কোয়ানটিটেটিভ মেথডস ইন ইকোনমিকস এন্ড বিজনেস’ এবং ইকোনমিক ভেডেলপমেন্ট ইন ইন্ডিয়া এন্ড ইস্ট এশিয়া’ নামে দুটি বিষয় ছাত্রছাত্রীদের পড়াতেন এই অর্থনীতিবিদ।
সুব্রামনিয়াম তার নিবন্ধে লিখেছিলেন, ভারতে একটি সাচ্চা হিন্দু দল গঠন করতে হবে এবং মুসলমানদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে হবে; কারণ তাদের পূর্ব পুরুষ হিন্দু ছিলেন এটি তারা স্বীকার করে না।
উত্তর প্রদেশের কাশির জ্ঞানপায়স মসজিদ একটি মন্দিরের ওপর নির্মিত দাবি করে ওই অঞ্চলের ৩ শতাধিক মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়ারও দাবি তোলেন ১৯৯০-৯১ সময়ে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা এই রাজনীতিবিদ।
বাংলাদেশের সিলেট থেকে খুলনা পর্যন্ত এলাকা দখলে নিয়ে সেখানে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ‘পুনর্বাসনের’ ব্যবস্থা করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দখলে নিতে বলেন কাশ্মিরের পাকিস্তানশাসিত অংশও।
অর্থনীতির অধ্যাপক সুব্রামনিয়াম আরো প্রস্তাব তোলেন, হিন্দু ধর্ম থেকে কেউ অন্য ধর্ম গ্রহণ করতে পারবে না- এমন একটি বিধি জারি করতে হবে ভারতে।
“প্রধানমন্ত্রী এ মুহূর্তে মাওবাদীদের সবচেয়ে বড় হুমকি বলে মনে করলেও আমি মনে করি, ইসলামী সন্ত্রাসবাদ ভারতের অস্তিত্বের জন্য আরো বড় হুমকি।
এখন যারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও ইউপিএ চেয়ারম্যান আছেন- তারা না থাকলে মাওবাদীদের এক মাসের মধ্যে নির্মূল করা সম্ভব”, লিখেছেন সুব্রামনিয়াম স্বামী।
হার্ভার্ডের ৪৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী সুব্রামনিয়ামের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ড্রিউ জি ফোস্টকে একটি স্মারকলিপি দেয়। ‘দ্য হার্ভার্ড ক্রাইমসিন’ পত্রিকায় সুব্রামনিয়ামের প্রস্তাবের সমালোচনা করে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তার ভূমিকা তদন্ত করে দেখারও আহবান জানায় ‘সিভিল লিবার্টিজ গ্র“প ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিভিজ্যুয়াল রাইটস ইন এডুকেশন’ নামক একটি সংগঠন।
সুব্রামনিয়ামে নিবন্ধের সমালোচনা করে হার্ভার্ডের তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক ডায়না এ ইক বলেন, “একটি পুরো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে এবং তাদের পবিত্র স্থানে সহিংসতার ডাক দিয়ে স্বামী স্পষ্টতই সীমা লঙ্ঘন করেছেন।
”
“যারা সংখ্যালঘু স¤প্রদায়কে নিয়ে বিষোদ্গার করে তাদেরকে হার্ভার্ড থেকে দূরে রাখা কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব”, যোগ করেন তিনি।
হার্ভার্ড থেকে বহি®কৃত হওয়ার খবরে ড. সুব্রামনিয়াম গত বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, “একজন ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা খুবই সাংঘাতিক নীতি। ”
সুত্র: Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।