গরু-ছাগলের মত বানান ভুল করি।
সবসময়ই কেন যেন ভরা চাঁদের রাতের আমার ক্যরা উঠে !!! চাঁদের আলোর টানে আমি আপ্রতিগ্রস্ত মানুষের মত শুরু করি। পূর্ণিমার আলো আমাকে এমন ভাবে আকৃষ্ট করে যে সে সময় ঘরে বসে থাকা আমার জন্য সম্ভব না ...
কিন্তু ভাই কি আর কমু দূঃক্ষের কথা ... আমরা তো থাকি এক কনক্রিটের জংগলে যেইখানে আমরা এক এক জন নাগরিক টারজান !!! এইখানে পূর্ণিমাই হোক আর আমাবস্যাই হোক সবই একরকম লাগে ... সব জায়গাতেই খালি উচা উচা দালান !!! এইখানে চাঁদনি রাতে সৌন্দর্য উপভোগ করা ব্যাপক দুস্কর
মাগার কালকে এমনই এক ভারা চাঁদের রাতে আমার মাথা খারাপ হইয়া যাবার অবস্থা হইল। রাত তখন ২টার পরে। প্রথমে জানালা দিয়ে যখন হালকা একটু চাঁদের আলো আমার বিছানায় এসে পরলো তখন মনে হইল যেন মহাকাশ থেকে আগত কোন অতিবেগুনি রশ্মি আমার দিলটারে ছারখার কইরা দিল ।
নিজেরে তখন আর ধইরা রাখতে পারলাম না ... অতি দ্রুত কিন্তু বিশেষ সাবধানে ছাদের চাবিটা আর একটা ফাটা বাঁশের বাশি নিয়া লুকাইয়া লুকাইয়া ছাদে গেলাম। আমি ছাদের তালা খোলার আগ পর্যন্ত বুঝতে পারি নাই যে আমার সামনে কি বিস্ময় অপেক্ষা করতেসে !।
ভাই ... বিস্বাস করবেন না, চাঁদের আলোর এমন সৌন্দর্য আমি আমার ইহ জিন্দেগিতে দেখি নাই। ভরা চাঁদের কি মহিমা, কি তার ভাব, কি তার রাজকিয় সৌন্দর্য সেইটা বলে বোঝানো যাবে না। চাঁদের আলোক রশ্মি গুলা এমন ভাবে এসে পরছিল যেন সাক্ষাত সর্গ থেকে তার আগমন।
বাধ ভাংগা চাঁদের আলো পুরা এলাকাকে আলোকিত করে রাখসে। এমনেই নিশুতি রাত আর দুই দিন আগে করবানির ঈদ গেল ... এলাকায় মানুষ অনেক কম তাই বাসা বাড়িতে তেমন কোন বাতি জ্বলে না। পুরা এলাকায় কোন আলো নাই শুধু চাঁন্দের আলো। হালকা ঠান্ডা বাতাস আর আকাশে অল্প কিছু মেঘ। প্রকৃতির এই লিলাখেলা দেখা মুগ্ধ না হতে উপায় নাই।
যে কোন মানুষ এমন পরিবেশে এসে নিজেকে এক অজানা রাজ্যে হারিয়ে ফেলবে।
চাঁদের এক বিশেষ সৌন্দর্য হইল যে চাঁদের রূপালি আলোতে চারপাশের প্রায় সবকিছুই দেখা যায় কিন্তু কিছুই স্পষ্ট ভাবে দেখা যায় না। চাঁদের আলোর এই রূপালি রশ্মি তৈরী করে একটা আলো আধারী পরিবেশ। চাঁদের আলোতে সব চেনা জিনিশকে আচেনা লাগে। সবকিছুর এক নতুন রূপ চাঁদের আলোতে সৃষ্টি হয়।
এটা একটা অসাধারণ অনুভুতি।
চাঁদের আলোর সৌন্দর্যে বিশাল আকারের টাসকি খাওয়ার পর নিজেকে মোটামুটি সামলে নিলাম ... আমার কাছে ছিল একটা ফাটা বাশের বাসি। হিন্দু ধর্মে কথিত আছে যে কৃষ্ণ তার বাশির সুমধুর সুর দিয়েই রাধার চিত্ত হরণ করেছিলেন। গঙ্গা নদীর ধারে যখন শ্রীকৃষ্ণ বাশি বাজাত তখন নাকি চারপাশের পরিবেশে নেমে আসত এক অন্য রকম আবহ এবং দূর থেকে রাধা সেই বাশির সুরে বিভর হয়ে যেত। আমিও সেইরকম ভাবে হালকা পাতলা বাশি বাজানোর চেষ্টা চালাইলাম, যদি "রাধা" রূপ কোন রমনী ডানে বামে থেকে একটু আওয়াজ দেয় তাহইলে তো ভালই।
কিন্তু না ... এমন কুলাংগার কপাল লইয়া ধরণিতে আইসি যে কি আর কমু !!!
শুনসিলাম হেমিলনের বাশিয়ালা তার বাশির আওয়াজ দিয়ে ইন্দুর আকৃষ্ট করতে পারত মাগার আমার বেলায় কইথেইককা দেখি দুইডা বাদুর আইসা হাজির হইল ... তারা আমার মাথার উপরে মহা আনন্দে উরা উরি করতে লাগল। হায় হায় ... এইডা কি ??? কই "রাধা" রূপ সুকন্যা চাইতাসিলাম, আর আইলো দুইডা বাদুর !!!
কিন্তু এই বাদুরের আগমনে আমি আরেক আসাধারণ এক দৃশ্য দেখতে পেলাম ... চাঁদের আলোতে বাদুরের উরা উরি যে এত চমৎকার হতে পারে সেটা না দেখলে বিস্বাস করার না। যখন তারা চাঁদের মাঝ দিয়ে উরে যায় তখন যেই বিস্ময়কর দৃশ্যে আবতরণ হয় সেটা ভাষায় বোঝানোর না। চাঁদের আলোক রশ্মিতে পুরা দৃশ্যটা একরকম আপার্থিব ঘটনার সমতুল্য।
সুন্দর কিছুর স্থায়ীত্ব নাকি অনেক কম হয় ... তাইতো চাঁদের সাথে এই অসাধারণ সময় কাটানোর পর আমাকে আবার নিজ ঘরে ফিরে যেতে হল।
কিন্তু সেই রাতে আমি ঘুমাইতে পারি নাই। সারা রাত জানালা দিয়ে চাঁদের স্নিগ্ধতা দেখে কাটিয়েছি। সকালে সুরুজ ভাই কে স্বাগতম জানানোর পরই আমি ঘুমাতে পারলাম।
পরের দিন ভাবলাম আমাদের প্রতিপালক আমদের সুবিধার জন্য কোন জিনিসটা দেন নাই ??? জিবনের শুরু থেকে অন্ত পর্যন্ত স্রষ্টার সৃষ্টি যেভাবে আমাদের চারপাশে মুখরিত হয়ে থাকে সেটার মত চমকপ্রদ আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না !!! আমাদের সুবিধার্থে স্রষ্টা দিনের বেলা দিয়েছেন ঝকঝকে রোদ আর রাতে দিয়েছেন চাঁদের চকমকে আলো ... আহা ব্যাপক বিস্ময়কর আমাদের স্রষ্ঠার সৃষ্টি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।