আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মপ্রত্যয়ী বেগম রোকেয়া

ইংরেজ ঔপনিবেশিক আমলে বাংলার নারী সমাজ পুরুষ শাসিত সমাজের নিমর্ম নিষ্ঠুরতা, অত্যচার, অবিচার ও কুসংস্কারে জর্জরিত হয়ে অশিক্ষা, অবজ্ঞা, অবহেলা ও পর্দার নামে অবরুদ্ধ জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছিল- এমনি এক সময়ে এদেশের হতভাগ্য নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলো, বরবরতা থেকে সভ্যতা, পশ্চাদপদতা থেকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে আসার জন্য নিজের জিবনের সকল আরাম আয়েশ, সুখ ও স্বাথর্কে বিসজর্ন দিয়েছিলেন তিনি। বাংলার মুসলিম নারী জাগরণ, নারী মুক্তির অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়া হোসেন। অসাধারণ প্রতিভা ছিল উনার মধ্যে। উপমহাদেশের তদানীন্তন রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে অশিক্ষার বেড়াজালে আবদ্ধ নারী সমাজকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। ১৮৮০ সালে জন্ম গ্রহন করে রক্ষণশীল মুসলীম সমাজের কড়া পদার্র্ প্রথায় বেড়ে ওঠা বেগম রোকেয়া নিজ পারিপাশ্বির্কতা ও জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে নারী পুরুষের বৈষম্যমূলক অবস্থান।

এর জন্যই তিনি পরনিভর্শীলতার গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য স্বীয় মযার্দায় প্রতিষ্ঠিত এবং নিশ্চিত করবে সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর আংশিদারিত্ব। তিনি বিশ্বাস করতেন আগে নারী সমাজকে তৈরি করতে হবে নিজ মযার্দা প্রতিষ্ঠার লড়ায়ের জন্য, একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই এক নীরব সামাজিক বিপ্লব ঘটিয়ে তা করা সম্ভব। শিক্ষাই পারে মানুষের আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলে তাকে নিজ সচেতনতা সৃষ্টি করতে ও অজর্নে প্রয়াসী হতে। এ সত্য তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। প্রতিকুল রক্ষণশীল সমাজে অনেক প্রতিবন্ধকতাকে অগ্রাহ্য করেছেন অসম্ভব আত্মপ্রত্যয়।

বাড়ি বাড়ি ঘুরে তিনি নারী সমাজকে শিক্ষার ছায়াতলে সংগঠিত করার কাজে আজীবন নিবেদিত থেকেছেন। তার এই আব্যাহত প্রয়াসেরই প্রতিফলন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়। তিনি নারী শিক্ষাকে পূঁথিগত জ্ঞান অজর্নের মাঝে সীমাবদ্ধ দেখতে চাননি। তিনি পুরুষের সমকক্ষতা আজর্নের অর্থে পুরুষকে ছোট করে দেখেন নি। তিনি নারীকে পুরুষের পরিপূরক মনে করতেন।

তাই তিনি লিখেছিলেন ‌”আমরা সমাজের অর্ধাঙ্গ আমরা পড়িয়া থাকিয়ে সমাজ উঠিবে কিরূপে?” কোন ব্যক্তি এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খুড়াইয়া খুড়াইয়া কতদূর চলিবে? তিনি বিশ্বাস করতেন নারীকে পুরুষের সমপরযায়ে না আনতে পারলে কুসংস্কারচ্ছন্নতা দূর করে মানবতার মুক্তি কখনও সম্ভব নয়। আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। বেগম রোকেয়ার স্বরণে আমার এ লেখা। উনার কথাগুলোতে সব সময় অনুপ্রেরণা যোগায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।