বিয়ষবস্তু খুবই পরিস্কার। আজ দেখলাম শাহবাগে অনশনরত শহীদ রুমি স্কোয়াড এর ছেলেরা জামাত শিবিরের নিষিদ্ধের দাবীতে আমরণ অনশন করছে এবং তাদের সেই অনশনের ব্যাপারে অমি রহমান পিয়াল নেতিবাচক মন্তব্য করেছে।
"বঙ্গবন্ধুর খুনি বজলুল হুদার পোলার ডাকা অনশনে আমার সমর্থন নাই, সাইন বোর্ডে রুমি ভাইর নাম থাকলেও..."--- Omi Rahman Pial
আসেন তথাকথিত গবেষকের চরিত্রের ময়না তদন্ত করি। কে এই অমি রহমান পিয়াল। ব্যক্তিগত পরিচয় নাই তার সাথে আমার।
কিন্তু তাকে আমি চিনি যৌবনজ্বালা নামক বাংলাদেশী পর্ণ ওয়েব পোর্টাল এর মাধ্যমে। সে যৌবনজ্বালার একজন সেলিব্রেটি অ্যাডমিন। তার চটি পরে, দুর্লভ বাংলাদেশী ভিডিও ক্লিপ, দেশী কন্যাদের ক্যানডিড পিক দেখে কত ছেলের প্যান্ট খারাপ হয়েছে তার হিসাব নাই। আমি নিজেও কত রাত পার করেছি এসব দেখে! ২০০৭/০৮ এর দিকে ব্লগ এর সংখ্যা তেমন একটা ছিলনা। যৌবনজ্বালার মত আরও একটা ব্লগ ছিল পর্ণ আড্ডা।
মূলত পর্ণ আড্ডাতে ভাংগন ধরে যার ফলশ্রুতিতে যৌবনজ্বালা সৃষ্টি হয়। এসব ব্লগ গুলোতে মুক্তিযুদ্ধ, ধর্ম, টেকনোলজি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হলেও মূলত যৌন সুড়সুড়িদায়ক বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেত। ২০১০ সালের বইমেলায় যৌবনজ্বালা একটি স্টল নেয়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে গণস্বাক্ষর নেয়া শুরু হয়। আসলে মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুজি করে চলে যৌবনজ্বালার প্রচারণা।
এক বা দুই দিন পর দৈনিক পত্রিকাতে এই নিয়ে রিপোর্ট বের হলে পরদিন থেকে ওই স্টলে আর কাওকে দেখা যায়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতানা প্রধান হয়ে থাকলে কিসের ভয়ে তারা পালিয়েছিল সেটা বোধগম্য নয়। তখন আ.লীগ ক্ষমতায় এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা তাদের প্রতিশ্রুতি।
আসেন আর একটু পিছে যাই। চমেক হাসপাতালের ছাত্র অমি রহমান পিয়াল চতুর্থ বর্ষে ডাক্তারী পড়া ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা করতে লেগে যান।
কথিত আছে সে সময় তিনি নেশার খপ্পরে পড়েছিলেন। এটার সত্য মিথ্যা জানিনা যদিও। কোন বিষয়ে গবেষনা করতে যে মেধা এবং অধ্যাবসায় দরকার হয়, নিজের পড়া যে শেষ করেনা, তার কতটুকু সৃজনশীলতা থাকবে সেই গবেষণার ক্ষেত্রে তা নিয়ে আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। তারপরেও ধরে নিলাম সে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়াশোনা করেছে রসময় গুপ্ত পড়ার পাশাপাশি। কিন্তু এই চেতনার বিস্তৃতির জন্য পর্ণ ব্লগের ব্যানারে জনমত গঠন কোন শালীনতার মধ্যে পড়ে আমার জানা নেই।
এটা অনেকটা মলত্যাগ করতে বসে সুরা পড়া/ শ্লোক পড়ার মত ব্যাপার। এ যেন মায়ের অসন্মানের বিচার চাইতে পতিতালয়ে যাওয়া। অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের বা সংগঠনের ব্যানারে কি সেটা করা যেত না? যেত, কিন্তু তাতে যৌবনজ্বালার পাবলিসিটি হত না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে পিয়ালের ব্যবসার শুরুটা এখানেই।
শাহবাগে যখন আন্দোলন শুরু হল, অমি পিয়ালকে দেখে, তার কথাবার্তায় মনে হয়েছিল, সে তার কথা বলা, এবং যুক্তি প্রদানের গুনটাকে আন্দোলনের জন্য ব্যবহার করছে।
শুরুর ২ দিনের মাথায় সে টিভিতে এক শোতে খুব দ্বায়িত্ব নিয়ে বলল, তার কিংবা ইমরানের সাথে কোন রাজনৈতিক দলের কোন সম্পর্কই নেই। অথচ এর কিছুদিন পরই দেখা গেল এরা প্রকাশ্যে আ.লীগের দালালী করে বেরাচ্ছে। চট্টগ্রাম যাবার পথে অবৈধ অস্ত্রসহ রাবের হাতে ধরা পরার পরও কোন অভিযোগ আনা হয়নি এটা তার ছোট্ট একটা প্রমাণ। এরপর তো টিভিতে বলেই দিল যে আ.লীগের দ্বারা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, কাজেই একই চেতনা থাকলে সমস্যা নাই। আন্দোলনের ১০ দিনের মাথায়, যখন শাহবাগে, দল-মত নির্বিশেষে সাধারন মানুষের আগমন হতে থাকল, আন্দোলন যখন আ.লীগের জন্য নিজের মত করে চালনা করা একটু বেকায়দার হয়ে পড়ল, কেননা সাধারণ মানুষের এত সমাগমের মাঝে দলীয় করন করাটা বেশ কঠিন।
ঠিক সেই মূহুর্তে রাজীব হায়দার খুন হল। সেই রাতে তার সাথে আমার কথা হয়েছিল ফেসবুকে। এই নিয়ে আমি একটা পোষ্ট করেছি। তখন তার কথা বার্তায় আমার কাছে পরিস্কার হল যে, আন্দোলনের স্বার্থ দেখাটা তার মূল উদ্দেশ্য নয়। অনেকেই তাকে পরিস্কার ভাবে বলেছে যে, রাজিবকে নিয়ে বাড়াবাড়ি আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
তারপরও জেনে শুনেই সব করা হয়েছে। এবং ফলাফল সবার সামনে। পরোক্ষভাবে এরাই সাধারন মানুষকে দ্বিধান্বিত করেছে। কেননা এরা ভালভাবেই জানে আসিফ এবং রাজিব ধর্মবিদ্বেষী লেখা লিখেছিল। এবং তাকে সামনে আনা মানেই সাধারন মানুষকে ভাগ করে দেয়া।
আন্দোলনরত ব্লগারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফেমস্লাট হল এই লোকটা। আন্দোলনটা যেন আ.লীগের পক্ষে থাকে তার জন্য সকল প্রচেষ্টাই করেছে। এখন কতগুলো নিরপেক্ষ ছেলে অনশন শুরু করাতে এর মত ফেমস্লাট রা বেকায়দায় পরে গিয়েছে, এবং এত কাঠখড় পুড়িয়ে যে আন্দোলন আ.লীগ কে বাচানোর জন্য করা হচ্ছে, সেই আন্দোলন যেন আবার সাধারন মানুষের হাতে না চলে যায় সেজন্য কিছু মিথ্যা ধোঁয়া তুলছে। মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুজি করে খাওয়ার অভ্যাসটা আ.লীগ বা তার দালালদের পুরোনো স্বভাব। সেটা পর্ন সাইটের বিজ্ঞাপনের জন্যই হোক আর সাধারন মানুষের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলা করে, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্যই হোক।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে জাতির সাথে এমন প্রতারণা করা, সেই চেতনাকে বলাৎকার করে হত্যা করার মতই। এদের এখনি প্রতিহত না করা হলে এমন একটা সময় আসবে যখন মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই শঙ্কা জাগবে, এও আবার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করতে আসেনিতো? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।