১.
“আবীর ভাই , আপনাকে আমি ভালবাসি । আবীরের চোখে চোখ রেখে বলল রাশা। আবীর অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাশার দিকে , বলে কি এই মেয়ে ? কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না আবীর। একবার চিন্তা করলো গেম খেলবে নাকি একটা? নাহ ,থাক শুধু শুধু কষ্ট দিয়ে কি লাভ ? চিন্তা করলো মেয়েরে ফাফর দেয়া লাগবে ; কত্তো বড়ো সাহস আমারে প্রপোজ করে ? ফাযিল মাইয়্যা। চোখে মুখে রাগের আভা ফুটিয়ে বলল –
-“রাশা তোমার বয়স কতো ?”
-“জানেন না মেয়েদের বয়স জিজ্ঞেশ করতে নেই ? ”উত্তরে বলল রাশা ।
বোল্ড হয়ে গেলাম নাকি ? চিন্তা করছে আবীর । এ প্রশ্ন কেন করলো সে? সে তো জানেই যে এই প্রশ্নোর উত্তর যে এটাই । বলদ একটা - মনে মনে বলল সে। যাই হোক মুখের ভাব আগের মতই রেখে বলল আবীর –
-“হুমম , তাহলে বলো যে তোমার আমার বয়স এর ডিফারেন্স কতো ?”
-“তাতো আপনিও জানেন আমিও জানি , তাহলে শুধু শুধু এই প্রশ্ন কেন ?” রাশা বলল। “আমি আপনাকে আমার মনের কথা জানিয়েছি বাকিটা আপনার ব্যাপার।
তবে আমার উত্তরটা জলদি দিলেই খুশি হবো । ”
বলেই হাটা দিলো রাশা । আবীর দাঁড়িয়ে রইলো আর ভাবতে লাগলো , মাইয়্যা কি উলটা ফাফর লইলো নাকি ?
২
আবীর ভার্সিটিতে পরে ,থারড ইয়ার। সামারের বন্ধ থাকায় বাড়িতে এসেছে। বাসায় কত্তো কাজ তার।
পুরনো বন্ধুদের সময় দিতে হয়, এলাকায় সবকিছু ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হয় , পাশের বাসার আপুটা হঠৎ এত সুন্দরী হয়ে উঠলো কিভাবে তার খবর নিতে হয় আরও কতো কি! আর এই সময়ে এই ঘটনা । আবীরের তুলনায় রাশা ছোটই ! এইচ . এস . সি পরীক্ষা দিয়েছে মাত্র । ভার্সিটিতে এডমিশন এর অপেক্ষায় আছে। বিকেলে মাঠে বসে সিগারেট টানতে টানতে আবীর ভাবছে রাশার কথা। মেয়েটা তো খারাপ না , ভালই।
সুন্দরিই বলা চলে। পরে ভাবলো আবীর কচু চেনো তুমি , রাশা তো অতীব সুন্দরী একটা মেয়ে । তুমি এতদিন ভালো করে খেয়াল করো নাই। তার মতো সুন্দরী শহরে দুইটা নাই। সেই মেয়ে তোমারে প্রপোজ করছে আর তুমি মিয়া পার্ট লইতোছো ? পরক্ষণেই আবার চিন্তা করলো জীবনে কতো মেয়ে আইলো আর গেলো, এই মেয়ের কাছে কাত হওয়া যাইবো না! এক ধরনের মিশ্র অনুভুতি , বেসামাল মন আর ভয় থেকে পরদিন আবীর ফোনে জানালো রাশাকে যে সে তার ব্যপারে আগ্রহী নয় !
৩
ছুটি শেষ করে ভার্সিটিতে এসে পড়ালেখায় মন দিতে পারলো না আবীর।
সবসময় রাশার কথা মনে পরে! সিগারেট খাওয়া বেড়ে গেলো। কেনো? এর উত্তর পেলো কয়েকদিন পরে যখন সে বুঝলো যে সে আসলে ভালোবেসে ফেলেছে রাশাকে এবং তাকে ছাড়া আবীরের চলবে না। সিধান্ত নিয়ে ফেলল যে সে এই মেয়েকেই জীবন সাথী করবে। ফোন করলো রাশাকে । ও প্রান্ত থেকে ভেসে এলো সুরেলা আওয়াজ , “ …….. মোবাইল সংযোগ দেয়া সম্ভব হছে না ”।
সারাদিন ট্রাই করলো ,বুঝলো নম্বর পালটিয়েছে রাশা । অভিমানে? আর দেরি করলো না আবীর। বারবার তার মনে হচ্ছিলো আর দেরি করলে হয়তো সে জীবনের খুব মুল্যবান সম্পদ হারিয়ে ফেলবে। পরদিন সকালের বাসে করে নিজ শহরে আর হাত-মুখ ধুয়েই রাশাদের বাসায় হাজির আবীর । আন্টী বলল -কেমন আছো বাবা ? এইতো আন্টী ভালোই বলল সে।
একটু পরে রাশা আসলো । রাশাকে দেখে আবীর অবাক। ইশ! কি চেহারা হয়েছে মেয়েটার ; চোখের নিচে কালি পরেছে , চুলের যত্ন নাই । আহারে মেয়েটা !
-“কেমন আছেন আবীর ভাই ?”
-“ ভালই , তুমি ?”
-“আমিও ভালই । ”
-“হুমম , তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
যাই হোক তুমি কি আজ বিকালে আমার সাথে দেখা করতে পারবা ? ”
-“কেনো ?” -“ একটু কথা ছিলো । প্লিজ এসো ; আমি আজ রাতের বাসেই চলে যাবো । ” -“আচ্ছা । ”
৪
-“বলেন কি বলবেন ? রাশা বলল। ”
অনেক সাহস নিয়ে এসেছিলো আবীর যে অনেক কথা বলবে , গুছিয়ে বলবে রাশাকে ।
কিন্তু তার কিছুই বলতে পারলো না সে । শুধু বলল -
-“ তোমাকে আমার ভালো লাগে রাশা , ভালোবাসি তোমায়”। তাকিয়ে আছে আবীরের দিকে । বলল –
“মানে কি এসবের ? ফাজলামি পাইছেন ? একবার বলবেন ভালোবাসেন না,একবার বলবেন বাসেন। গেম নাকি?” এতুটুকু বলে দম নিলো রাশা ।
“ শোনেন আমি যেন তেনো মেয়ে না । আমার জন্য কতো ছেলে পাগল আপনার ধারনা নাই। আর সেই আমি লজ্জার মাথা খেয়ে আপনাকে প্রপোজ করলাম আর আপনি পাত্তাই দিলেন না ?”
-“আমি আসলে তখন বুঝিনি ...। ”
-“আপনি জানেন আপনার ওই ফোনের পর কতো রাত আমি ঘুমাতে পারি নাই …। ”
-“আই এম সরি....।
”
-“সরি বললেই কি সব ঠিক হয়ে যায় নাকি ?”
-“নো ,নো আই রীয়ালি মীন ইট । তোমাকে যে আমি ভালোবাসি তা আগে বুঝি নাই । প্লিজ আজকে ফিরেয়ে দিয়ো না আমাকে । ” তার পর দুজনেই চুপচাপ , কারো মুখে কোনো কথা নাই । রাশাই মুখ খুললো , বলল
-“ আবীর ভাই আপনি যদি আজও আমাকে বলতেন যে আপনি আমাকে ভালবাসেন না তবূও আমি সারাজীবন আপনাকেই ভালবেসে যেতাম ।
” কি করবে ভেবে পেলো না আবীর ; শুধু আলতো করে রাশার হাতটা ধরলো ।
পাদটীকা
নাম দিলাম ভালবাসার সাইন্স ফিকশন । কারণ আজকালকার যুগে এ রকম ভালবাসার কাহিনী আর কোথায় পাবেন ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।