মহান ভাষা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক তিনি, স্বাধীনতার ৪০ বছর পেরুলেও সনদ ব্যতীত আজও তার কপালে ভাতা জোটেনি। ফলে সব আশা ছেড়ে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী রাজের জোগালি ও ইট ভাঙার কাজ করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তাঁর জন্মস্থান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জের জয়দেবপুরে। ইটভাঙা কাজ করেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে জানান, স্বাধীনতার পূর্বে তিনি ঢাকায় ছিলেন।
ইকবাল হলের পেছনে এক প্রফেসরের বাসায় থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে রাতের বেলায় স্বাধীন বাংলা হ্যান্ডবিল ও চরমপত্র বিলি করতেন। এরপর রামগঞ্জে এসে অপারেশনে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প ছিল রামগঞ্জের পানিয়ালা বাজারে। এ ক্যাম্প থেকেই এলএমজি রব, কাশেম সুবেদার, জহুরুল হক পাঠান, সাখায়েত উল্যা, বিএম কলিম উল্যা, এছাক সুবেদারসহ অন্যদের সঙ্গে রুস্তম আলী অপারেশন চালাতেন। অপারেশনের প্রয়োজনে ঢাকায় এলে অক্টোবরের শেষে রাজাকার-আলবদর বাহিনী তাকে ফকিরাপুল এলাকা থেকে ধরে রাজাকার কমান্ডার ফিরোজ মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে গরম পানি ঢেলে, হাত-পা ভেঙে নানা অত্যাচার করা হয় তার ওপর। ওই সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা থানা উড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলে তাকে পুরান জেলে পাঠানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে মুক্তিযোদ্ধারা জেলখানা ভেঙে তাকে নিয়ে আসে। পরে বিজয় মিছিলে রাজাকারদের গুলিতে ২৯ মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী মতিঝিল অফিস পাড়ায় অভিযান চালিয়ে ৮০ রাজাকার, আলবদর বাহিনীর সদস্যকে নিজে হত্যা করেন। স্বাধীনতার পূর্বে ৬ দফা আন্দোলনের সময় ১৯৬৫ সালে রুস্তম আলী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পুরান হাজতে জেল খাটেন।
পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধু দেওয়ানিতে ছিলেন এবং রুস্তম আলী ছিলেন বিশসেলে। ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালে জীবনবাজি রেখে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রুস্তম আলী বিগত ২০০৬ সালে মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র পেলেও আজও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা কার্ড পাননি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।