আজ আমি আমার নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু অদ্ভুত ঘটনা শেয়ার করবো যার ব্যাখ্যা আমি আজো খুজে পাইনি।
সাল ২০০২। তখন আমরা মোহাম্মাদপুরের মোহাম্মাদিয়া হাউজিং লিমিটেড এ থাকি। আমার বাবা তখন একটা ট্যুর এ ঢাকার বাহিরে গেছে। ইঞ্জিনিয়ার হবার সুবাদে প্রায়ই তাকে ঢাকার বাহিরে যেতে হত।
তখন ঢাকা অনেক ফাঁকা ছিল। এতো লোকজন ছিল না। বাসায় তখন আমার বড় ভাই, আমি, আম্মা আর আমার ছোট বোন আর দুইটা ছোট কাজের মেয়ে। বড় ভাই তখন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টার এ । আমি কেবল এস.এস.সি দিয়েছি আর আমার বোন ২ কি ৩য় ক্লাস এ পড়ে।
বাসাটা ছিল বিশাল। তো রাতের খাবার পর আমরা সবাই একঘরে থাকব বলে মনস্থির করলাম। ওই ঘরটা মাস্টার বেডরুম। শুয়ে পরার আগে আম্মা দুই কাজের লোক কে রান্না ঘরে রেখে দরজা বাহির দিক থেকে লাগিয়ে দিয়েছিল। শুনতে হয়ত একটু খারাপ লাগবে, কিন্তু এই ছাড়া কোন উপায়ও ছিল না।
কারণ, কাজের ছোট দুই মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার একটা ব্যাপার জড়িত ছিল আর তখন বাসাবাড়িতে নিরাপত্তা এখনকার মত এতো মজবুত ছিল না। তো শুয়ে পরার আগে আম্মা মাস্টার বেডরুম এর দরজাটাও ভেতর দিক দিয়ে লক করে দিয়েছিল। শুয়ে পরলাম একসময়। আমি আর ভাইয়া নিচে, আর আম্মা আর আমার ছোট বোন খাটে। তখন রাত কয়টা বাজে ঠিক মনে নাই, আমার ঘুম ভেঙে গেল।
আমি প্রথমে বুজতে পারলাম না কেন ঘুম ভাঙল। তারপর দেখি মাস্টার বেডরুম এর দরজাটা কেউ একজন প্রচণ্ড শক্তিতে ঠেলতেসে। লক করা ছিল, তারপরও দরজার নীচের দিকটা ফাঁক হয়ে যাচ্ছিল। আমি কথা বলার শক্তি হারায় ফেললাম। আস্তে করে ভাইকে ডাকলাম।
যখন ভাই উঠলো তখন কিছুক্ষণের জন্য ধাক্কানো বন্ধ হল। ভাই উঠেই তো আমাকে ধমক দিল। কিন্তু তারপর আবার, এইবার মনে হচ্ছিল দরজা ভেঙে ফেলবে। ভাই আর আমি তো ভয়ে আম্মাকে ডাকলাম। আম্মা উঠে ভয় পেল এই ভেবে যে, মনে হয় চোর বা ডাকাত এসেছে।
তো কি করা যায়। তখনো ধাক্কানো চলছিল। আম্মা ,আমি আর ভাই সবাই দোয়াদরুদ পড়তে শুরু করলাম। তার ১০-১৫ মিনিট পর ধাক্কানো বন্ধ হল। এরপর আমি আর ভাই সাহস করে দরজা খুললাম।
হাতে একটা ক্রিকেট খেলার ব্যাট নিয়েছিলাম যেটা মাস্টার বেডরুম এর সাথে লাগানো রেলিং এ রাখা ছিল। তো বাহিরে বের হয়ে দেখি যে সব কিছু নরমাল, মেইন দরজা ঠিক আছে, রান্না ঘরের দরজা আম্মা যেভাবে বন্ধ করছিলো ওইভাবেই আছে। আমরা রান্না ঘরের দরজা খুললাম। ছোট মেয়ে দুটো কে আমরা আর ডাকি নাই। তবে দরজা খুলেই রেখেছিলাম।
রুম এ এসে সারারাত আর ঘুমাই নাই। Nat-west series এ England VS. India র মধ্যে ফাইনাল ম্যাচ হচ্ছিল তাই দেখে কাটিয়ে দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।