আবাসক এলাকা হলেও প্রায় এক বছর ধরেই পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই চলছিলো লেগুনাগুলো। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোড দিয়ে রিং রোড-শ্যামলী হয়ে মিরপুর-১। এলাকাবাসী জানায়, চারটি কোম্পানীর নামে চলছে কয়েকশ লেগুনা। গভীর রাত পর্যন্ত লেগুনার শব্দে এলাকাবাসী এখন শান্তিতে ঘুমোতেও পারেন না। তারা জানান, এসব লেগুনার রুট পারমিট নেই।
ফিটনেস নেই। অধিকাংশ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। অধিকাংশ চালক অল্প বয়স্ক। ফুঁসে উঠছিলো এলাকাবাসী: ভেতরে ভেতরে ফুঁসে উঠলেও এলাকাবাসী অনেকদিন ধরেই লাগানমহীন এসব লেগুনার ব্যাপারে একদমই চুপ ছিলেন। কাকে বলবেন? এলাকার কেউ বললেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকের কাছে যাবো বিচার চাইতে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে কেউ বললেন, পুলিশের কাছে যাই। হতাশ কেই কেউ বললেন: গিয়ে কী লাভ! পরিবহন ব্যবসাতো রাজনীতিবিদদের মদদ ছাড়া হয় না। আর এসব লাগামহীন লেগুনা তো চলছে পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই। তাহলে? দীর্ঘদিনের ক্ষোভে জ্বলতে থাকা নিরীহ এলাকাবাসী কোরবানী ঈদের পরদিন ফেটে পড়লেন প্রতিবাদে। ঈদের পরদিন: দোকান থেকে সদাইপাতি কিনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন ৪৫ বছরের খাদিজা।
ঈদের পরদিন। রাস্তা তাই একদমই ফাঁকা। হঠাৎ কি হলো! লাগামহীন এক লেগুনা চাপা দিয়ে চলে গেলো তাকে। মারাত্মক আহত খাদিজাকে নেয়া হলো ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে। প্রায় প্রতিদিনই সরু রোডে লেগুনার চাপায় আহত হচ্ছে অনেকে।
খবর পেয়ে রাস্তা অবরোধ করলো এলাকাবাসী। আটক করা হলো কমপক্ষে ৩০টি লেগুনা। পুলিশের ঘুম ভাঙলো? এতোদিনে নড়েচড়ে বসলো পুলিশ। দাঙ্গা পুলিশ ছুটে আসলো। আনা হলো র্যাকার।
আটক লেগুনাগুলো র্যাকার দিয়ে টেনে নেয়া হলো থানায়। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান পারমিট বিহীন কিছুই চলতে দেয়া যাবে না। ডিসি-ট্রাফিক (পশ্চিম) জানান বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবেন। প্রায় এক বছর ধরেই রুট পারমিট ছাড়া এসব চললেও পুলিশ এতোদিন কিছুই করেনি। বরং যানজট কমাতে নুরজাহান রোডের মাথায় মোতায়েন করা হয় ট্রাফিক পুলিশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ এসব লেগুনার মালিকানা রয়েছে কিছু কিছু পুলিশ সদস্যের। তাছাড়া নিয়মিত মাসোহারা নেয়ার অভিযোগও করেন এলাকাবাসী। তবে পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। সন্ত্রাসীদের মহড়া শনিবার বিকেল। হঠাৎ প্রায় ৫০টি লেগুনার এক মিছিলে দ্রুতগতিতে ঢুকলো নুরজাহান রোডে।
লেগুনায় ভেতর লাঠিশোটা হাতে বসা যুবকরা শ্লোগান দিতে লাগলো: নুরজাহান রোডে লেগুনা চলবে। তবে, রুখে দাড়ালো এলাকাবাসী। ধাওয়া করে কয়েকটি লেগুনা আটক করা হলো। পাওয়া গেলো লাঠিশোটা। কিন্তু, পুলিশ এসে সেগুলো নিয়ে গেলো।
পরিবতন সন্ত্রাসীদের হাতে কি জিম্মি হয়ে থাকবে এলাকাবাসী? এলাকাবাসীর প্রশ্ন এভাবে কতোদিন তারা জিম্মি হয়ে থাকবেন পরিবহন সন্ত্রাসীদের কাছে? তবে, পরিবহন মালিকদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।