আইজ আমারে আনিয়া দেও রে আছমানেরি চঁান................................. আহারে মোবাইল ফোন
২০০৬ সালে আমার হাতে প্রথম মোবাইল ফোন আসে। নকিয়া ১২০০ মডেল। ব্যবহার সহজ বলে মোবাইলটা ভাল লেগে যায়। ব্যবহার করতে থাকি। তখন অবশ্য এই মোবাইলটির ব্যবহারই মনে হয় সর্বাধিক ছিল।
সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটতে থাকে।
প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে মানুষও তার রুচির পরিবর্তন করে ফেলে। সহজ সস্তা নকিয়া ছেড়ে সবার হাতে হাতে শোভা পেতে থাকে দামি আর ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া মোবাইল ফোন। সেগুলোর নানা আকার, নানা ধরন, নানা নকশা এবং নানা কলাকৌশল। আমি সাদাসিদা গোবেচারা মানুষ।
প্রযুক্তির এতসব জটিলতা মাথায় ঢুকতো না আমার। ফলে যক্ষের ধনের মতো আমার ঐ নকিয়া ১২০০ টাকেই আগলে রাখতাম। কল আসতো রিসিভ করতাম, প্রয়োজন হলে কল করতাম। এর বাইরে এই মোবাইল দিয়ে আর কিছুই করার আমার প্রয়োজন হতোনা। সত্যি বলছি অন্য কিছু আর আমি আশাও করতাম না তার কাছ থেকে।
বেচারা এমনিতেই যা দিচ্ছে তা-ই অনেক , শুধু শুধু ওর ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেয়াটা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ ছিল।
বন্ধুরা বলতো অনেক, কি রে দোস্ত আর কতদিন। এবার একটু মডার্ন হ।
আমি মুচকি হাসতাম। সেই হাসি যথেষ্ট রহস্যময়।
তারা বুঝতে পারতোনা আমি মডার্ন হবো কি হবোনা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারা গেলনা। বিশ্বাস করুন আমার কোন ইচ্ছাই ছিলনা। আমি ওকে নিয়েই সুখি ছিলাম এবং আমার দিন বেশ কেটে যাচ্ছিলো। কিন্তু হলোনা ।
শেষ রক্ষা হলোনা। গতকাল আমার ২৫তম জন্মদিনে ওরা আমাকে অবাক করে দিয়ে প্যাকেট টা খুললো আমার সামনে। পকেটে তখনো আমার সেই যক্ষের ধন, আমার পাঁচ বছরের সুখ-দুঃখের সাথি নকিয়া ১২০০। বেচারা পকেটে ছিল বলে বাইরের নিষ্ঠুরতা কিছুই দেখতে পারলোনা। বুঝতেও পারলোনা।
বন্ধুরা ততক্ষণে সুদৃশ্য প্যাকেট থেকে বের করে নিয়ে এসেছে একটি দামি এবং তথাকথিত মডার্ন, বহু বর্ণিল, সুদৃশ্য একটি মোবাইল সেট। ঘোষনা দিল আমাকে নাকি এখন থেকে ওটাই বয়ে বেড়াতে হবে এবং দয়া করে একটু মডার্ন হতে হবে।
বুঝুন ঠ্যালা। একজন আবার তড়িঘড়ি করে পকেট থেকে আমার নকিয়া বেচারাটাকে টেনে হিচরে বের করে তাৎক্ষণিক পোষ্ট মর্টেম করে ওর প্রাণ ভ্রমরাটা বের করে আনলো। তার পর সেটা নতুন মোবাইলে ভরে সেটাকে প্রাণ দিল।
আমি তো নির্বাক। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি কিছুটা হতভম্বও। তাকিয়ে আছি আমার নকিয়া বেচারার দিকে। ভাঙ্গাচোরা, বিধ্বস্ত আর বিপর্যস্ত এক মন নিয়ে বেচারা টেবিলে পড়ে আছে। যেন কোন কালে, কখনো ওর এতটুকু মুল্যও ছিলনা।
নতুন মোবাইল নিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। গান শুনছি, ভিডিও ক্লিপ দেখছি, গেম খেলছি। আহা কত কত জিনিষ। কত কত মজা । এই ছেড়ে আমি এতদিন কোথায় ছিলাম? কি বোকাই ছিলাম আমি।
রাতে বাসায় এসে মনে মনে এসব বলতে বলতে টেবিলের দিকে তাকালাম। বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো পুরাতন নকিয়াকে দেখে। বেচারা নির্বিকারভাবে পড়ে আছে। আমার এই হাত, এই আঙ্গুলগুলো আর কখনো তার দেহে খেলা করবেনা। সযত্নে তাকে আর আমি পেকেটে ভরে রাখবোনা।
কানে চেপে ধরবো না। এসব ভাবতেই মনটা এক অজানা মায়ায় সিক্ত হয়ে গেল। যন্ত্রের প্রতি এই মায়ার কোন ব্যাখ্যা নেই। মানুষই পারে যুগে যুগে এতটা নিষ্ঠুর হতে। এতটা স্বার্থপর হতে।
কি সেটা যন্ত্রের প্রতি, কি সেটা মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি।
২০০৬ সালে আমার হাতে প্রথম মোবাইল ফোন আসে। নকিয়া ১২০০ মডেল। ব্যবহার সহজ বলে মোবাইলটা ভাল লেগে যায়। ব্যবহার করতে থাকি।
তখন অবশ্য এই মোবাইলটির ব্যবহারই মনে হয় সর্বাধিক ছিল। সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটতে থাকে।
প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে মানুষও তার রুচির পরিবর্তন করে ফেলে। সহজ সস্তা নকিয়া ছেড়ে সবার হাতে হাতে শোভা পেতে থাকে দামি আর ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া মোবাইল ফোন। সেগুলোর নানা আকার, নানা ধরন, নানা নকশা এবং নানা কলাকৌশল।
আমি সাদাসিদা গোবেচারা মানুষ। প্রযুক্তির এতসব জটিলতা মাথায় ঢুকতো না আমার। ফলে যক্ষের ধনের মতো আমার ঐ নকিয়া ১২০০ টাকেই আগলে রাখতাম। কল আসতো রিসিভ করতাম, প্রয়োজন হলে কল করতাম। এর বাইরে এই মোবাইল দিয়ে আর কিছুই করার আমার প্রয়োজন হতোনা।
সত্যি বলছি অন্য কিছু আর আমি আশাও করতাম না তার কাছ থেকে। বেচারা এমনিতেই যা দিচ্ছে তা-ই অনেক , শুধু শুধু ওর ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেয়াটা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ ছিল।
বন্ধুরা বলতো অনেক, কি রে দোস্ত আর কতদিন। এবার একটু মডার্ন হ।
আমি মুচকি হাসতাম।
সেই হাসি যথেষ্ট রহস্যময়। তারা বুঝতে পারতোনা আমি মডার্ন হবো কি হবোনা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারা গেলনা। বিশ্বাস করুন আমার কোন ইচ্ছাই ছিলনা। আমি ওকে নিয়েই সুখি ছিলাম এবং আমার দিন বেশ কেটে যাচ্ছিলো।
কিন্তু হলোনা । শেষ রক্ষা হলোনা। গতকাল আমার ২৫তম জন্মদিনে ওরা আমাকে অবাক করে দিয়ে প্যাকেট টা খুললো আমার সামনে। পকেটে তখনো আমার সেই যক্ষের ধন, আমার পাঁচ বছরের সুখ-দুঃখের সাথি নকিয়া ১২০০। বেচারা পকেটে ছিল বলে বাইরের নিষ্ঠুরতা কিছুই দেখতে পারলোনা।
বুঝতেও পারলোনা।
বন্ধুরা ততক্ষণে সুদৃশ্য প্যাকেট থেকে বের করে নিয়ে এসেছে একটি দামি এবং তথাকথিত মডার্ন, বহু বর্ণিল, সুদৃশ্য একটি মোবাইল সেট। ঘোষনা দিল আমাকে নাকি এখন থেকে ওটাই বয়ে বেড়াতে হবে এবং দয়া করে একটু মডার্ন হতে হবে।
বুঝুন ঠ্যালা। একজন আবার তড়িঘড়ি করে পকেট থেকে আমার নকিয়া বেচারাটাকে টেনে হিচরে বের করে তাৎক্ষণিক পোষ্ট মর্টেম করে ওর প্রাণ ভ্রমরাটা বের করে আনলো।
তার পর সেটা নতুন মোবাইলে ভরে সেটাকে প্রাণ দিল। আমি তো নির্বাক। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি কিছুটা হতভম্বও। তাকিয়ে আছি আমার নকিয়া বেচারার দিকে। ভাঙ্গাচোরা, বিধ্বস্ত আর বিপর্যস্ত এক মন নিয়ে বেচারা টেবিলে পড়ে আছে।
যেন কোন কালে, কখনো ওর এতটুকু মুল্যও ছিলনা।
নতুন মোবাইল নিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। গান শুনছি, ভিডিও ক্লিপ দেখছি, গেম খেলছি। আহা কত কত জিনিষ। কত কত মজা ।
এই ছেড়ে আমি এতদিন কোথায় ছিলাম? কি বোকাই ছিলাম আমি। রাতে বাসায় এসে মনে মনে এসব বলতে বলতে টেবিলের দিকে তাকালাম। বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো পুরাতন নকিয়াকে দেখে। বেচারা নির্বিকারভাবে পড়ে আছে। আমার এই হাত, এই আঙ্গুলগুলো আর কখনো তার দেহে খেলা করবেনা।
সযত্নে তাকে আর আমি পেকেটে ভরে রাখবোনা। কানে চেপে ধরবো না। এসব ভাবতেই মনটা এক অজানা মায়ায় সিক্ত হয়ে গেল। যন্ত্রের প্রতি এই মায়ার কোন ব্যাখ্যা নেই। মানুষই পারে যুগে যুগে এতটা নিষ্ঠুর হতে।
এতটা স্বার্থপর হতে। কি সেটা যন্ত্রের প্রতি, কি সেটা মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।