আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেটুক বড় বিলাইয়ের ঈদের খানাপিনা

ঈদ গিয়েছে সেই কবে। (অবশ্য টিভি চ্যানেলগুলোর ঈদ এখনও চলে। ) এতদিনে আমি এলাম ঈদের গপ্প করতে। তাও আবার খানাপিনার। এবার ঈদটা একটু অন্যরকম হয়েছে আমার জন্য।

সারা দিন-রাত হাসপাতালেই কেটেছে। তাই যা করার আগের দিনই করে রাখতে হয়েছে। মানে রান্নাবাটির কথা বলছিলাম আর কি। বাজার করার জন্যও খুব বেশি সময় পাইনি, ঈদের আগের দিন সকালে যতটুকু পেরেছি তা-ই সম্বল। সারা দুপুর-বিকাল-সন্ধ্যা ধরে রান্নাবাটি আর ঘর পরিষ্কার করলাম।

এরপর বসলাম মেহেদী দিতে, যা না দিলে ঈদই হবে না আমার। কিন্তু এবার তো আমার ভাগ্নী নেই, তাই নিজেই হাবিজাবি একটা ডিজাইন করে নিলাম। মেহেদীর রঙটা শুরুতে ভালোই ছিল। পরদিন হাসপাতালে বারবার হাত ধুতে ধুতে প্রায় অদৃশ্যই হয়ে গেল। ঈদের দিন ভোরবেলা উঠেই ফিরনি তৈরী করে ফেললাম।

আফসোস কিসমিস কিনতে পারিনি। তাই দেখতে একেবারেই সাদা-মাটা হয়েছে। সাথে শাশুড়ীর পাঠানো লবুনি আর পাঁপড়ও ভেজে নিলাম। দুপুরে হাসপাতালে যারা ডিউটিতে আছে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হল। তাই দিয়ে চলল দুপুরের খাবার।

মেনু ছিল পোলাও আর মুরগীর রোস্ট। সাথে একটু সালাদ করে নিয়েছিলাম। রাতে বাসায় ফিরে ফ্রিজ থেকে নিজের রান্না বের করলাম। আমার মেনুও আহামরি কিছু না। প্রথমে ফ্রাইড রাইস।

কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন মরিচ বেশি দিয়ে ফেলেছি। যদিও ঝাল হয়নি একটুও। তারপর আছে মিক্সড সবজি। এখানে মনে হয় মশলা একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। যদিও কেউ অভিযোগ করেনি।

এর সাথে থাই চিকেন কারি। সুইট এন্ড সাওয়ার করার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু রান্নার সময় লেবুর রস দিতে ভুলে গিয়েছি। পরেও দেয়া যেত, কিন্তু আর দিলাম না। যা হয়েছে একেবারে খারাপ হয়নি। পরদিন দুপুরে দাওয়াত ছিল বাড়িওয়ালার বাসায়।

আইটেম বিফ তেহারী, ডেজার্টে মিষ্টি দই। বোনাস হিসেবে এক পিচ্চির জন্মদিনের কেকও খাওয়া হয়ে গিয়েছে। বিকালে খালা আর এক ভাতিজী বেড়াতে এলে নাস্তা হিসেবে দিলাম বিফ হালিম। খালা কিন্তু খালি হাতে আসেননি। সঙ্গে ছিল সেমাই-পায়েস, পোলাও-মাংস।

এই দিয়ে চলল রাতের খাবার। পেট ততক্ষণে জানান দিয়ে দিয়েছে যে অনেক হয়েছে, এইবার থামো। কিন্তু তাই কি আর থামা হয়? যতই চাই যে ফ্রিজের পোলাও শেষ হয়ে যাক, বিভিন্ন উৎস থেকে খাবার-দাবার এসে আবার ভরে যায়। বহু কষ্টে কালকে সব শেষ করলাম, আজকেই আবার চলে এল আরেক দফা। আমার ঈদের খানা-পিনা আর শেষই হচ্ছে না।

পেটটা এবার রাগ করে কাজই না বন্ধ করে দেয়। সবচেয়ে বড় আফসোসটার কথাই বলা হল না। আমার নিজের দেয়া কুরবানীর মাংসই এখন পর্যন্ত চোখে দেখলাম না। ঐটা না খেলে কি আর কুরবানী ঈদের খানা-পিনা হয়? সবাইকে ছেড়ে ঈদ করতে কেমন লেগেছে সেটা আর না-ই বললাম। কিন্তু যে বেচারা আমাকে সঙ্গ দেবার জন্য সবাইকে ছেড়ে ঈদের আগের রাতে চলে এসেছিল, ঈদের দিন তাকেই সঙ্গ দেবার কেউ ছিল না।

সারাদিন একলা একলা বাসায় বসে আমার ব্লগ মুখস্থ করেছে। রাতে আমি বাসায় ফেরার পর বলে, বাকবাকুমের ডিউটি কেমন হল?  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।