আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

`হ্যালো ডার্লিং’র পর এবার `হাম তুম শাবানা’য় বাংলাদেশকে অবমাননা

আমি আছি সেইখানে............যেখানে নই তোমরা...তাই বলে নই আমি একা মুভি প্রেমিক হিসেবে বন্ধুমহলে বন্ধু রাকিবের বেশ বদনাম আছে। সুনাম না বলে বদনাম বলার কারণ হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা মুভি দেখার কারণে রাকিব প্রায়ই রাত জাগে এবং অনেক জরুরি কাজের কথা ভুলে যায়। রাকিবের সাথে মুভি দেখা নিয়ে প্রায় রাগারাগি করলেও এই রাকিবই বন্ধু মহলের সবার ভরসা। রাকিব যেকোনো মুভি দেখে নাম বলতে বললে আমরা বিনাবাক্যে দেখি। হিন্দি সিনেমার প্রতি গত ৫ বছর ধরে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।

তাই রাকিব আমাকে হিন্দি ছবির খবর দেয় না বললেই চললে। গত একবছরে রাকিব আমাকে যে তিনটি হিন্দী মুভির ডাউনলোড লিংক দিয়েছে তার মধ্যে দুটি মুভিতেই বাংলাদেশকে নিয়ে চরম আপত্তিজনক মন্তব্য করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে উপরস্থ বসদের কাছে তরুনীদের সেক্সুয়াল হ্যারেজমেন্টসহ কর্মজীবি তরুনীদের বস, এরকম বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে নির্মিত মনোজ তেওয়ারীর `হ্যালো ডার্লিং` ছবিটিতে জঘন্যভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে। `হ্যালো ডার্লিং` ছবিতে প্রধান তিন নারী চরিত্র সেলিনা জেটলি, দিব্বিয়া দও, গুল ফানাগ তাদের বস জাভেদ জাফরির কাছে বিভিন্নভাবে সেক্সুয়াল হ্যারেজমেন্টের শিকার হয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। সেলিনা জেটলি জাভেদ জাফরীর জন্য কফি বানাতে গিয়ে ভুলে র‌্যাট কিলার মিশিয়ে দেয়।

চেয়ার থেকে পড়ে জাভেদ জাফরি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিন্তু প্রধান তিন নারী চরিত্র হাসপাতালে গিয়ে অন্য একটি লাশকে জাভেদ জাফরি ভেবে মনে করে কফি খেয়ে জাভেদ জাফরির মৃত্য হয়েছে। তাই লাশটি তারা বের করে আনে হাসপাতাল থেকে। এই দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করে জাভেদ জাফরি প্রধান তিন নারী চরিত্রকে ব্ল্যাকমেইল করে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করে। ছবির শেষে এসে সব ফাঁস হয়ে যায় আগমন ঘটে কোম্পানির মালিক সানি দেওলের।

তিনি জাভেদ জাফরির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির একটি অফিস বাংলাদেশে আছে এবং ওখানে তোমার মত লম্পট, দুশ্চরিত্র বসের প্রয়োজন’। এর মানে কি? ভারতে নারীদের যৌন হয়রানি না করে বাংলাদেশে চলে যাও ওখানে গিয়ে যা করবে তাই জায়েজ! যে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের সাথে ২ লাখ নারীর অত্যাচারিত হওয়ার ইতিহাস আছে, সেই দেশের নারীদের জন্য `হ্যালো ডার্লিং` ছবির জাভেদ জাফরির মত চরিত্র দিয়ে অত্যাচার করতে পাঠানোর ঘৃন্য মানসিকতার পাশাপাশি জাভেদ জাফরি এবং তানিয়া (জাভেদ জাফরির কুকর্মের সহযোগী) বাংলাদেশে ট্রান্সফারের কথা শুনে `বাংলাদেশ` শব্দটি এমন বিকৃত ভংগিতে উচ্চারণ করে যে বাংলাদেশ মানেই জাহান্নাম। চোখে মুখে চরম অবজ্ঞা ফুটিয়েও শেষে বাংলাদেশে আসতে রাজী হওয়ার পর `বাংলাদেশ` শব্দটি স্ক্রিনে ভেসে উঠে। এরপর বাংলাদেশের অফিসে বসে জাভেদ জাফরী নারীর প্রতি ইঙ্গিতমূলক আচরণ করে মন্তব্য করতে গিয়ে দেখে যে বাংলাদেশীর সাথে কথা বলছে সে আসলে সমকামী। `হ্যালো ডার্লিংয়ে`র সেই ঘটনাটি বিভিন্ন বাংলা ব্লগে সামনে আসার পর ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

এরই মাঝে ভারতের তারা টিভিতে বাংলাদেশের পতাকা পদলিত হওয়ার ঘটনাটি ইন্টারনেট জগতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। উল্লেখ্য তারা টিভিতে ২১ আগস্টের ঘটনায় শেখ হাসিনার মৃত্য হয়েছে এমন প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল; বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার কয়েকদিনের মাথায় কিছু ব্যক্তির নাম জড়িয়ে উদ্দেশ্যেমূলক খবর প্রচার করেছিল। `হ্যালো ডার্লিং` ছবিতে বাংলাদেশের নাম চরম ঘৃনার সঙ্গে উচ্চারণ, তারা টিভিতে ৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা পদলিত হওয়ার ঘটনার পর গতকাল রাকিবের কল্যাণে দেখলাম ‘হাম তুম শাবানা’ ছবিটি। এ ছবির এক জায়গায় বাংলাদেশকে বিকৃত করে ‘আংলাদেশি বাংলাদেশি’ বলা হয়েছে । অথচ একই ডায়লগে পাকিস্তান, চায়নার নাম ঠিক ভাবে উচ্চারণ করা হয়েছে।

ছবির কাহিনীতে দেখা যায় এক গডফাদারের ভাতিজীর প্রেমে পড়া দুই নায়ককে ধরে ক্রিমিনাল হওয়ার ট্রেনিং দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে আসে। দীর্ঘ ৯ মাসের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকধারী প্রিয় বাংলাদেশকে নিয়ে নিয়ে অপমান করা সব ঘটনার প্রতিবাদ করছি। সে সাথে বর্তমান ডিজিটাল সরকারের ‘মহান বন্ধু’ ভারতের ইলেকট্রনিক এবং মুভি মিডিয়ায় বাংলাদেশকে নিয়ে নানা সময়ে অপমানকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহবান জানাচ্ছি সরকারিভাবে যেন আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে নিয়ে কোনরকম কুটুক্তি করার, লাল-সবুজের পতাকা পদলিত করার সাহস না পায় এইখান থেকা নেয়া  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।