আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনি টাকা দিয়ে নিজের গান এর অ্যালবাম বের করেছেন? আপনার অ্যালবাম সুপারহিট করার পদ্ধতিগুলো জেনে নিন (বিফলে মূল্য ফেরত)

প্রিয় সকল বন্ধুরা গতকাল আপনাদের বলেছিলাম কিভাবে অ্যালবাম বের করে জনপ্রিয় হবেন তার কিছু পদ্ধতি নিয়ে যাদের যোগ্যতা নেই তাদের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সেরা ও সহজ উপায়! (বিফলে মূল্য ফেরত) । আজ আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনার অ্যালবাম সুপারহিট করবেন তার প্রধান ৩ টি প্রধান ও সহজ পদ্ধতি। ১. চটুল কথার গান থাকতেই হবে- প্রিয় বন্ধ, আপনার প্রথম ও নতুন অ্যালবাম এর যদি সারাবাংলাদেশ এর সব শ্রোতার মাঝে জনপ্রিয় করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই ‘চটুল কথার গান কমপক্ষে ২/৩ টি রাখতেই হবে। অবাক হচ্ছেন বুঝি? যে লোকটা বলে কি! তাহলে শুনুন ‘চটুল কথার গান’ মানে কোন গালি-গালাজ করা না (অবশ্য গান শুনলে পাবলিক বলবে এর চেয়ে গালি দিলেও অনেক ভালো ছিল!) । আমাদের দেশের ৭০% শ্রোতা বাস করে গ্রামে-গঞ্জে।

আরও অনেক শ্রোতা আছে নিম্নশ্রেণীর (যেমন শ্রমিক, কুলি,রিকশাওয়ালা সহ ইত্তাদি) তারা আপনার ভাব গম্ভীর গান শুনলে অ্যালবাম কিনবেই না। তাদের কাছে গান একটা বিশেষ ও নিরমল আনন্দের ব্যাপার, যা শুনে তার সৃতি সিনেমার নায়ক নায়িকার মত কল্পনায় চোখে ভাসবে। এই বিশাল জনগোষ্ঠী যদি আপনার অ্যালবাম না খায় তাহলে আপনি কখনও পুরোপুরি সুপারহিট হতে পারবেন না। তাই আপনার টার্গেট প্রথমেই থাকতে হবে তাদের উপর। তাদের কাছে খুব সহজে পৌঁছার একটা রাস্তাই আছে তা হলো “চটুল কথার গান” আপনাকে গাইতেই হবে।

কেমন ‘চটুল কথার গান’ গাইবেন তার কতগুলো উদাহরণ দিই- “তুমি দিও নাগো বাসর ঘরের বাত্তি নিভাইয়া”, “ও টুনির মা তোমার টুনি কথা শুনে না,” “যৌবন একটা গোল্ড লিফ সিগারেট” “এতো সুন্দর লাউ গো ভাবী তোমার গাছে ধরছে, তুমি ভাইরে লইয়া খাইও ভাবী তোমার ভাগ্য লইছে” ইত্যাদি । যতগুলো গানের উদাহরণ দিয়েছি এগুলো কিন্তু এই দশকের ইতিহাস সৃষ্টি করা গান, যা খুব সুপারহিট ব্যবসা করেছে ঐ সব গানের অ্যালবামগুলো । এমনকি বড় বড় মোবাইল কোম্পানি গুলোর ‘ওয়েলকাম টিউন’,কলার তিউন,গুনগুন সবগুলোতেই শীর্ষস্থানে ছিল ঐ গানগুলো। আপনি আজো পত্রিকা খুলে দেখবেন ঐ গানগুলো এখনও সেই স্থান দখল করে আছে। তো, আর দ্বিধা কেন? আপনিও আপনার অ্যালবাম এই রকম চটুল গান ২/৩ টি আপনার অ্যালবাম এ রেখে দিন।

দেখবেন আগামী ১০ বছরে আপনার অ্যালবাম এর সফলতার ধারে কাছেও কেউ ঘেঁষতে পারবে না। আর অ্যালবাম সুপারহিট তো আপনি হিট। অ্যালবাম হিট না হইলে আপনি যতই গান গাইতে থাকেন সেগুলো আপনি ছাড়া আর কেউ শুনবে না। আমরা চাই আপনার বিনিয়োগ ও সাধনা যেন সফল হয়। ২. উঠতি তরুণ-তরুণীদের জন্য গান- বিশাল জনগোষ্ঠীর পর এবার আপনাকে যাদের কথা ভাবতে হবে তারা হলো আধুনিক উঠতি তরুণ-তরুণী, অর্থাৎ - সদ্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় (পাবলিক, প্রাইভেট) পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী যারা হিন্দি আর ইংলিশ গানে মশগুল।

বাংলা শুনে তাও আবার সব রক। তাদের জন্য আপনাকে গান করতে হবে এমন ভাবে যেন গানের কথারররররর চেয়ে বাদ্যযন্ত্র শুনা যাবে বেশি ,অর্থাৎ গান গাইবে বাদ্যযন্ত্র আর আপনি শুধু মাঝে মাঝে একটু জোরে চিৎকার করবেন এই আর কি! গানের কথা এমন হতে পারে “ইয়াবা ইয়াবা............ খেয়ে বলো মারহাবা মারহাবা............ ইয়া............বা...... ইয়া............বা...বা......বা) এই টাইপের। এসব গান এর সুর খুব মেলোডি হতে হবে তা নয়, আপনি চাইলে সদ্য হিট হওয়া হিন্দি গানের সুরও কপি করে দিতে পারেন তাতে কোন অসুবিধা নাই। কারন হিন্দি সুর ওদের বেশি প্রিয়। মনে রাখবেন এই শ্রেণীর শ্রোতারাই কিন্তু আপনার ব্র্যান্ড এম্বাসেডর এর কাজ করবে।

ওরা যদি আপনার গান খেয়ে ফেলে তাহলে কখন যে আপনার গান বাজার ছেড়ে ‘ইউটিউবে” চলে গেছে তা নিজেও টের পাবেন না। আর ‘ফেইসবুক’ কথা নাইবা বললাম। আপনি ওদের মনে ঠাই পাওয়া মানে ‘ফেইসবুক’ কোম্পানি দিনে হাজার বার আপনার নাম শুনতে শুনতে মুখস্ত করে ফেলবে। মনে হবে বাংলাদেশে “আসগর আলী/ভেড়া ঘোষাল” বলতে আপনি একজনই আছেন! সে সব শ্রোতাদের কল্যাণে আপনার গান সারা পৃথিবীর সব প্রান্তের হতভাগা বাংলাদেশিরাও শুনতে পারবে। তো এখন বুঝেছেন তো? এই শ্রেণীর শ্রোতাদের জন্য আপনার গান রাখতেই হবে তা বাধ্যতামূলক ।

এতে কোন রকম ভুল করবেন না। ৩.নতুন ঢঙে ‘রবীন্দ্র/ নজরুল/লালন এর গান ঃ এবার আপনাকে একেবারে ৩য় শ্রেণীর শ্রোতাদের কথা ভাবতে হবে। যারা এই যুগে খুব অবহেলিত ও বিরক্ত তাদের মনের মত গান না পেয়ে। এই শ্রোতারা হলো ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে থেকে একেবারে শেষ বয়স এর প্রান্তে যারা তাঁরা। এসব শ্রোতারা একটু বেশি মেলোডি গান শুনতে পছন্দ করেন।

তাই তাঁরা পুরনো গান, এবং রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গিত,লালন গীতি এই রকম গানগুলো বেশি শুনে থাকেন। তাই তাদের মন জয় করার একটা ভালো বুদ্ধি হলো তেমন ধরনের গান গাওয়া। আপনি ভাবছেন এতো মহা কঠিন! না, কোন কঠিন না। আপনি ঐগুলো জীবনে গাওয়া তো দূরের কথা শুনেন নি কখনও। তাতে কি হয়েছে? আপনি ঐ গানগুলোকে ড্রাম, লিড গিটার, বেস গিটার বাজিয়ে গাইবেন।

তার মানে হলো আপনি ঐ গানগুলোকে একটু নতুন আমেজে গাইলেন। এই বলে খুব সহজে চালিয়ে দিতে পারবেন। শুধু কোন টেলিভিশন ,পত্রিকাতে ইন্টার্ভিউ দেয়ার সময় একটু ভাব নিয়ে বলবেন “ আমি ছোট বেলা থেকেই এসব গান করতাম এবং এসব গানের প্রতি আমার প্রচণ্ড ভালোবাসা তাই এই গানগুলো নিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করলাম শুধু। ভবিষ্যতে পুরো একটা রবীন্দ্র সঙ্গীত এর অ্যালবাম বের করবো!” এইভাবে যদি বলতে পারেন তাহলে আর আপনারে পায় কে? আপনি তখন বাংলাদেশ এর একজন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ হয়ে যাবেন আর বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এর প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে প্রতিযোগীর ভুল ধরবেন! তো এবার নিশ্চয় বুঝলেন যে এই ৩য় শ্রেণীর শ্রোতার জন্য আপনাকে চিন্তা করতে হবে এবং তাদের জন্য আপনার অ্যালবাম এ গান রাখতে হবেই। যাই হোক বন্ধুরা ,অনেক কিছু বলে ফেললাম।

আজ আর বেশি কিছু বলবো না। কারন বেশি বললে মনে রাখতে পারবেন না। তাই উপরের ৩ টা পদ্ধতি অনুসরন করে আপনি আপনার সাফল্যর পথে এগিয়ে যান এই কামনা করি আর বাংলাদেশের সব গানের শ্রোতাদের যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন এই কামনা করে আজকের মত পরামর্শ দেয়া এখানে শেষ করলাম। বাংলাদেশের সব সেরা গান শুনতে চাইলে এখানে একটা খোঁচা দেন- (https://www.facebook.com/kokbd24) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.