আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মতিনকে ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ গুণতে হবে

ইসলামের পথে থাকতে চেষ্টা করি...। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যোগাযোগ ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় যুগ্ম-জেলা জজ মো. মোহসিনুল হক এ নির্দেশ দেন। মামলার অপর বিবাদী হলেন, তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব একে মোতাহার হোসেন। চট্টগ্রামের বার্থ অপারেটর প্রতিষ্ঠান এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাদাত হোসেন সেলিমের দায়ের করা একটি ক্ষতিপূরণ মামলায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০০৯-এর ১ সেপ্টেম্বর ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে শাহাদাত হোসেন সেলিম বাদী হয়ে এমএ মতিন ও মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। রায়ে আদালত বিবাদী দুজনকে ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন, এ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে তা নিলামে বিক্রির মাধ্যমে আদালত আদায় করতে পারবে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিবাদী দুজনকে দেওয়ানী কারাগারে আটক রাখা যাবে বলেও নির্দেশ দেন। রায়ের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন শাহাদাত হোসেন সেলিমের আইনজীবী মো. আশানুর রহমান। রায় প্রদান কালে বিচারক অভিমত প্রকাশ করেন যে, বিবাদীদ্বয় বাদীর দরপত্র বেআইনীভাবে বাতিল করেছেন।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) ২০০৮ এ ৩৩ বিধিতে যেভাবে একটি দরপত্র বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে তা অনুসরণ করা হয়নি। টেকনিক্যাল কমিটি ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ তিনবার বাদীর পক্ষে সুপারিশ করা সত্ত্বেও বিবাদীদ্বয় নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। এতে একদিকে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে বাদী প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিচারক আরও অভিমত প্রকাশ করেন যে, পিপিআর এর ৬৬(৫) বিধি অনুযায়ী ন্যূনতম ৪২ দিন সময় দিয়ে নতুন দরপত্র আহবান করতে হবে।

এক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করে ৩৯ দিনের মাথায় নতুন দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যা বিধি সম্মত হয়নি। বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০০৮ সালে বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে বাদীর প্রতিষ্ঠানসহ ১১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক বাদীর প্রতিষ্ঠান এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজসহ ৫টি প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত বিবেচিত হয়। বাদীর প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় মূল্যায়ন কমিটি তাকে কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশও করে।

কিন্তু বিবাদীগণ চতুর্থ সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স এছাক ব্রাদার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দিতে গত বছর ২০ নভেম্বর দরপত্রটি বাতিল করে ডিসেম্বরে নতুন দরপত্র ডেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান এছাক ব্রাদার্সকে সর্বনিম্ন দরদাতা করে কাজ দেয়। বাদীকে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং পিপিআর এর ধারা অনুসরণ না করে দরপত্র বাতিল করা হয়। বাদীর দাবি দরপত্র বাতিলে বিবাদীদের বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল। এর মাধ্যমে বিবাদীরা বাদীর ২৫ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন। উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত এই টেন্ডার কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্ত করে প্রধানমন্ত্রী এবং নৌ-মন্ত্রী ও সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

প্রতিবেদনে জেনারেল মতিন ও শেখ মোতাহারসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছিল। এছাড়াও এছাক ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করেছিল স্থায়ী কমিটি। এ মামলায় মতিন জবাবও প্রদান করেন। কিন্তু পরে আর আদালতে আসেননি। মামলায়ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।

বিচারক বাদীপক্ষের একজন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ করেই এ রায় প্রদান করেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী শাহাদাত হোসেন সেলিম বাংলানিউজকে জানান, ‘সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। জেনারেল এমএ মতিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আজকের রায়ের মাধ্যমে তার অপরাধ প্রমানিত হয়েছে।

’ http://banglanews24.com/news.php?nssl=66946 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।