ভাল মন্দ দুই ভাই (তাদের নাম এমনটি রাখলে আমার কি করার আছে?)। তবে আধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের নামের সঙ্গে কাজের মিল থাকে না, যেমন কোটিপতির নাম গরীবুল্লাহ, কানা মেয়ের নাম পদ্মলোচন বা চোরের নাম ইজ্জত আলী, কিন্তু এদের ক্ষেত্রে নামের সঙ্গে কাজের হুবহু মিল আছে। ভাল অনেক কষ্ট ও ত্যাগের বিনিময়ে তার ছেলেকে ভাল লেখাপড়া শেখানোর যেমনটি চেষ্টা করেছে, তেমনি একজন ভালো মানুষ হতেও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। অন্যদিকে মন্দ তার ছেলেকে দায়-সারা গোছের লেখাপড়া করিয়েছে, কারণ তার লক্ষ্য টাকা, আর তার জন্য সে কোন অপকর্ম করতেও কুন্ঠিত হয়না। সর্বক্ষনই অসৎ সঙ্গে তার চলাফেরা।
ভাল তাকে অনেক বার বুঝিয়ে সু-পথে আনার চেষ্টা করলেও তা কোন কাজে আসেনি। মন্দের ছেলে ভালর ছেলের থেকে বছর চারেকের বড় হওয়া স্বত্বেও একই সাথে স্নাতকোত্তর পাস করেছে। একজনের ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট, চোখে বড় হওয়ার স্বপ্ন আর একজন পাশ ফেলের সমন্বয়ে কোনরকমে সার্টিফিকেট জোগাড় করেছে। সার্টিফিকেটের পিছনেও কোন কালো অধ্যায় আছে কিনা তাও সঠিক করে বলা কঠিন, কারন তার বাবা হল ‘মন্দ’। তারা একসময় দুজনেই একটি সরকারী চাকুরীতে দরখাস্ত করলো।
কিন্তু এজন-সেজনের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেল এই চাকুরীতে একমাত্র রিকোয়্যারমেন্ট হল পাঁচ লক্ষ টাকা। সার্টিফিকেট, রেজাল্ট, মেধা, পরীক্ষা এগুলো কোন বিষয় নয়। একটাই কথা-
“Give Five Lacs Taka, Get the Job or Get Out."
মন্দের টাকা আছে, আর আছে মন্দ সঙ্গ। সে মন্দ সঙ্গের একজন নেতাকে (বঙ্গীয় রাজনীতিবিদ!) ধরে টাকা দিয়ে তার ছেলের চাকুরীর ব্যাবস্থা করলো। ভাল তো সর্বস্ব ক্ষুইয়ে তার ছেলেকে মানুষ করেছে, মন্দ সঙ্গের ধার ধারিনি কখনো, তার ছেলের কপালে চাকুরী জুটলো না।
ভালোর ছেলে আরো অনেক বার চাকুরীর চেষ্টা করেছে, কিন্তু লাভ হয় নাই। মন্দ এখন ভালোর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার দিকে ফিরে মুচকি মুচকি তিরস্কারের হাসি হাসে। বিজয়ীর বেশে বীরদর্পে মাথা উচু করে ঘুরে বেড়ায়। সর্বস্ব হারানো ভাল এখন সর্বশান্ত। এমনকি ছেলের সামনেও সে মাথা নিচু করে থাকে।
সত্য দিয়ে ঘেরা সকল স্বপ্ন তার ভেঙ্গে গেছে। সে আজ সকলের কাছে একজন পরাজিত মানুষ।
ভালর ছেলে ও আমার প্রশ্ন, হে দেশ পরিচালনার কাণ্ডারিগণ, ভালকে চোখের জলে ভাসিয়ে, তার মাথা সবার সামনে নিচু করে দিয়ে আপনারা আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন, আপনারা এদেশের মাথা বিশ্বের বুকে সমুন্নত করবেন, এটিও কি আমাদের বিশ্বাস করে হাতে তালি বাজাতে হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।