আমাদের দেশের প্রখ্যাত কিছু পরিচালক যারা আমাদের এই বাংলা চলচিত্রকে আলোকিত করে গেছেন, তাদের নিয়ে সামান্য কিছু আলোচনা:
১) জহির রায়হান:[/sb
মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ যিনি জহির রায়হান নামে পরিচিত
(জন্ম ফেনী জেলায়, ১৯ আগস্ট, ১৯৩৫)।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স করেন।
তিনি কর্মজীবনে অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন। তাদের মধ্যে “কখনও আসেনি, সোনার কাজল, কাঁচের দেয়াল, বেহুলা, আনোয়ারা, দুই ভাই, জীবন থেকে নেওয়া। ” উল্লেখযোগ্য।
লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন অসাধারণ।
“সূর্য গ্রহণ, শেষ বিকেলের মেয়ে, হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, আর কত দিন, কয়েকটি মৃত্যু” তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি।
বর্তমানে তাঁর “হাজার বছর ধরে” উপান্যাসটি ৯ম-১০ম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি ব্যক্তিগত জীবনে শহিদুল্লাহ কায়সারের ভাই, অভিনেত্রী সুচান্দার স্বামী, এবং অভিনেত্রী ববিতা ও চম্পার দুলাভাই। তিনি অভিনেত্রী সুমিতা দেবীরও স্বামী ছিলেন।
এই মহান ব্যক্তি ১৯৭২ সালে ভাই শহিদুল্লাহ কায়সারের মৃত দেহের খোঁজে গিয়ে নিখোঁজ হন।
পরে তিনি আর ফিরে আসেন নি।
২)খান আতাউর রহমান:
খান আতাউর রহমান যিনি খান আতা নামে বহুল পরিচিত । তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে ডিসেম্বর ১১, ১৯২৮ জন্মগ্রহণ করেন। ডিসেম্বর ১, ২০০৪ তিনি ইন্তেকাল করেন।
)
১৯৪৬ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরেই মেডিকেল ছেড়ে চলে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
তিনি একাধারে সুরকার, গায়ক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার, প্রযোজক, সংলাপ রচয়িতা, কাহিনীকার। অসংখ্য চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে জীবন থেকে নেয়া উল্ল্যেখযোগ্য।
তিনি -“অনেক দিনের চেনা , সিরাজউদ্দৌলা, সাত ভাই চম্পা, অরুণ বরুণ কিরণমালা, আবার তোরা মানুষ হ , সুজন পাখি, দিন যায় কথা থাকে, জোয়ার ভাটা, মনের মত বউ, আরশিনগর, পরশ পাথর, এখনো অনেক রাত” নামের বিখ্যাত বাংলা সিনেমার পরিচালক ছিলেন।
তিনি- “ এ দেশ তোমার আমার, কখনও আসেনি, কাঁচের দেয়াল, সাত ভাই চম্পা, মনের মত বউ, জীবন থেকে নেওয়া, আবার তোরা মানুষ হ, সুজন সুখি্” নামের বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমানের দুই স্ত্রী মাহবুবা রহমান ও নীলুফার ইয়াসমীন। খান আতা ও নিলুফারের ঘরে জন্ম নেন বর্তমান প্রজন্মের গায়ক ও অভিনেতা আগুন। অপরদিকে মাহবুবা রহমান ও খান আতার ঘরে জন্ম নেন কণ্ঠশিল্পী রুমানা ইসলাম।
৩)আলমগীর কবির:
তিনি ২৬ ডিসেম্বর ১৯৩৮ সালে রাঙ্গামাটিতে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Physics এ অনার্স করেন। পরে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান।
তিনি -“ধীরে বহে মেঘনা, সূর্য কন্যা, রুপালী সৈকত, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা, মহানায়ক” নামের বিখ্যাত বাংলা সিনেমা নির্মান করেন।
তিনি অনেক শর্ট ফিল্ম নির্মান করেন।
ব্যক্তি জীবনের প্রথমে তিনি মাঞ্জুরা বেগমকে বিয়ে করেন।
পরে তাঁরা আলাদা হয়ে যান। পরে তিনি অভিনেত্রী জয়শ্রী কবিরকে বিয়ে করেন।
এই মহান ব্যক্তি ২০জানুয়ারী, ১৯৮৯ সালে এক দুর্ঘটনায় মারা যান।
৪)আব্দুল্লাহ আল-মামুন:
তিনি ১৩ জুলাই ১৯৪২ সালে জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
তিনি ব্যক্তিজীবনে ফরিদা খাতুনকে বিয়ে করেন।
তিনি একাধারে একজন চলচিত্র নির্মাতা, অভিনেতা। সেই সাথে তিনি অনেক নাটক লিখেছেন।
তিনি- “অঙ্গিকার, সারেং বউ, এখনই সময়, দুই জীবন, সখি তুমি কার, বিহঙ্গ” নামের অনেক সিনেমা নির্মান করেন।
তাছাড়া তিনি সংশপ্তক, জীবন ছবি, বাবা নামের নাটক্ও নির্মান করেছেন।
এই মহান ব্যক্তি আমাদের ছেড়ে ২১ আগস্ট ২০০৮ সালে পরলোক গমন করেন।
৫)তারেক মাসুদ:
তিনি ৬ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
ব্যক্তি জীবনে তিনি ক্যাথেরিন মাসুদের জীবনসঙ্গি ছিলেন।
তিনি-“মুক্তির গান, মুক্তির কথা, সোনার বেড়ী, ভয়েসেস অফ চিল্ড্রেন, মাটির ময়না, A Kind of Childhood রানওয়ে” নামের অনেক চলচিত্র নির্মান করেন।
এই মহান মানুষ ১৩ আগস্ট ২০১১ এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
আমার বলার মাঝে কোন ভুল থাকলে, অবশ্যই জানাবেন এবং তা ক্ষমাযোগ্য দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরাধ করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।