আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় প্রতিবেশির গুরুত্ব

সবাইকে আমার নিজস্ব ব্লগ ভিজিট করার আমন্ত্রন রইলঃ www.islameraalo.wordpress.com আমাদের পুরো পৃথিবীটাই হল একটা সমাজ বা সংসার। এই সংসারের ক্ষুদ্র একক হল পরিবার। পৃথিবীতে এত অশান্তি, ঝামেলা, বিশৃঙ্খলা দূর করতে হলে আমাদের পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। আমাদের সমাজে এখনো পরিবার টিকে আছে। পশ্চিমি দেশ গুলোতে পরিবার তেমন ভাবে টিকে নাই।

মামা নেই, কাকা নেই, ফুফু বা খালাও নেই। বিয়ের আগেই ছেলেরা মা বাবাকে ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকে। পরিবারের পরেই আসে প্রতিবেশি। একজন মুসলমানকে প্রতিবেশির সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিত সে ব্যাপারে আলোকপাত করতে চাই। রাসুলুল্লাহ(সা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ইমান রাখে তার কর্তব্য হল সে যেন নিজ প্রতিবেশির সাথে একরামের ব্যবহার করে।

সাহাবায়ে কেরাম(রা) জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ(সা) প্রতিবেশির হক কি? নবীজী(সা) বললেন, ‘যদি সে তোমার কাছে কিছু চাই তাহলে তাকে সাহায্য কর, যদি সে নিজের প্রয়োজনে ধার চাই তাকে ধার দাও, যদি সে তোমাকে দাওয়াত করে তা কবুল কর, সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দেখতে যাও, যদি তার ইন্তেকাল হয়ে যায় তাহলে তার জানাযায় শামিল হও, যদি সে কোন মুসিবতে পড়ে তাকে শান্তনা দাও,নিজের পাতিলে গোস্ত রান্নার খুশবু দিয়ে তাকে কষ্ট দিয় না (কেননা হতে পারে অভাবের কারণে সে গোস্ত রান্না করতে পারে না)বরং কিছু মাংস তার ঘরে পৌছে দাও, আপন বাড়ীর ইমারত তার বাড়ীর ইমারত হতে এতটা উচু কর না যাতে তার ঘরে বাতাস বন্ধ হইয়ে যায় অবশ্য তার অনুমতিক্রমে হলে ভিন্ন কথা” (তারগিব)। একজন মুসলমানের উপর তার প্রতিবেশির কতটা হক তা উপরের হাদিসটা থেজেই বোঝা যাচ্ছে। একবার একব্যক্তি রাসুল(সা) কে বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী(সা) অমুক মহিলা অধিক পরিমানে নামায, রোজা ও দান-খয়রাত করে কিন্তু আপন প্রতিবেশিদেরকে নিজের জবানের দ্বারা কষ্ট দেয় অর্থাৎ গালিগালাজ করে। রাসুল(সা) বললেন সে দোজখে যাবে। আতঃপর সে ব্যক্তি আরজ করলেন হে আল্লাহর নবী(সা)! অমুক মহিলা নফল নামায, নফল রোজা ও দান-খয়রাত কম করে, বরং তার দান-খয়রাত পনীরের একটি টুকরোর থেকে বেশি নয়, কিন্তু নিজের প্রতিবেশিদেরকে জবানের দ্বারা কষ্ট দেয় না।

রাসুল(সা) বললেন সে জান্নাতে যাবে” (মুসনাদে আহমাদ)। একজন মুসলমান যদি নামায রোজা করে অথচ তার প্রতিবাশির সাথে উত্তম ব্যবহার না করে বা প্রতিবেশির খেয়াল রাখে না রাখে তাহলে সে ভালো মুসলমান হতে পারবে না। এই ব্যাপারটা এই হাদিসটি থেকে পরিস্কার হয়ে যাবে। রাসুল(সা) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তি (পুর্ণ) মুমিন হতে পারবে না যে নিজে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশি ক্ষুধার্ত থাকে” (তাবারানী, আবু ইয়ালা, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ)। প্রতিবেশির সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে, তাকে কোন ভাবেই পরিশান করা চলবে না।

নবীজী(সা) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না, যার উপদ্রব থেকে তার প্রতিবেশি নিরাপদে থাকতে পারে না’ (মুসলিম)। রাসুল(সা) আরও বলেছেন, ‘তোমরা যখন তরকারি পাকাও তখন তাতে জল দাও এবং ঝোল বাড়াও এবং কিছু অংশ তোমার প্রতিবেশির কাছে পৌছে দাও’ (তিরমিযী)। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) হতে বর্নিত একবার একব্যক্তি রাসুল(সা)কে জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ(সা)! আমি কিভাবে জানতে পারব এই কাজটি ভালো করেছি বা এই কাজটি খারাপ করেছি? রাসুল(সা) বললেন, ‘যখন তোমার প্রতিবেশিকে বলতে শুনবে তোমার কাজকর্ম ভালো তখন নিশ্চয় তোমার কাজকর্ম ভালো। আর যখন তোমার প্রতিবেশি বলবে তোমার কাজকর্ম খারাপ তখন নিশ্চয় তোমার কাজকর্ম খারাপ’ (তাবারানী, মাযমায়ে যাওয়ায়েদ)। আল্লাহ তা’আলা সুরা নিসার মধ্যে বলেছেন, “তোমরা সকলেই আল্লাহ তা’আলার সাথে কোন জিনিসকে শরিক করিও না এবং মা বাবার সাথে ভালো ব্যবহার কর এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথেও এবং এতিমদের সাথেও মিশকিনদের সাথেও এবং নিকটবর্তী ও দুরবর্তী প্রতিবেশিদের সাথেও এবং নিকটে যারা বসে তাদের সাথেও (অর্থাৎ যারা দৈনিক আসা যাওয়া ও সঙ্গে উঠা বসা করে) এবং মুসাফিরের সাথেও এবং ঐ গোলাম (দাস) দের সাথেও যারা তোমাদের অধিনে আছে।

নিসন্দেহে আল্লাহ এমন লোকদের পছন্দ করেন না যারা নিজেদেরকে বড় মনে করে ও অহংকার করে”। আল্লাহ আমাদের সকলকে প্রতিবেশির সাথে উত্তম ব্যবহার করার তৌফিক দান করুন আমীন! সবাইকে আমার ব্লগসাইট ভিজিট করার আমন্ত্রন রইলঃ http://islameraalo.wordpress.com/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.