আকাশ ভরা গাঙচিল ১. শরতের শুভ্র আকাশে কতিপয় স্বপ্নের কষ্টের দিনযাপন
কোন এক শরতের মিষ্টি দুপুরে যখন সাদা মেঘমালা আমার ঘর ভাসিয়ে দেয়, যখন বিস্তীর্ণ শুভ্র কাশবাগান আমার ভাবনায় উড়ে বেড়ায়, যখন আমার প্রিয় জানালার পাশে দাঁড়িয়ে এ পৃথিবীর ব্যস্ত মানুষগুলোকে ধীর পায়ে হেঁটে যেতে দেখি, সবুজ গাছপালা, রোদ, নীলাকাশ, যান্ত্রিকতা, শুন্যতা আমার চোখে এক ঝাপসা ক্যানভাস তৈরি করে। হাতে আজ আমার কোন তুলি নেই। কোন রঙ, কোন দৃশ্যপট কিছুই নেই। অপলক তাকিয়ে থাকা ছাড়া আজ আমার কোন কাজ নেই। আমি তাকিয়ে থাকি দূর হতে দূরে, বহু দূরে।
সময় শেষ হয় আমার দৃষ্টির সীমা শেষ হয় না।
ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামে। অন্ধকারের চাদরে ঢেকে যায় আকাশ। পৃথিবীটা আরও ছোট হয়ে যায়। নিজের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠি, কি অদ্ভুত চাপা শুন্যতা বুকে নিয়ে বেঁচে আছে আমার প্রতারিত সত্ত্বা!!! দম বন্ধ হয়ে আসে।
স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতে ক্লান্ত স্বপ্নরা জোড় করেও আর স্বপ্ন হতে চায় না। বেঁচে থাকতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্নরাও একসময় আমাকে একা রেখে হারিয়ে যায়। বুঝিয়ে যায়, মারা যাও। তোমার বেঁচে থাকাটাই একটা প্রতারণা।
একটা ধোঁয়াশা। আমি মরতে পারি না। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকি জানালার পাশে। রাতের অন্ধকার শেষে ভোরের সোনালী আলো ভাসিয়ে দেয় এ পৃথিবীকে। আমার ঘর তখনও অন্ধকারে।
কখনো ভোর হয় না আমার। বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে। স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে কিন্তু স্বপ্নরা সেই যে হারিয়ে গেছে এখনো তাঁদের খুঁজে ফিরি আমি আমার এ শূন্য ঘরে।
২. অন্তরে হিমু রুপার বসবাস
নিজেকে হিমু ভাবতে শুরু করেছি অনেক আগে থেকে। মাঝে মাঝে হলুদ শার্টটা গায়ে দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়াই।
হিমুর মতো হাঁটলেও হিমুর মতো সুপার ন্যাচারাল বলে আমার মাঝে এমন কিছু নেই। গভীর দুপুরে অথবা গভীর রাতে রাস্তায় হাঁটি। এক অদেখা নগরীর অসাধারণ রুপ আমার চোখে ধরা দেয়। জীবনটা তখন সত্যি এক বিস্ময়কর ঘটনা বলে মনে হয়। নিজেকে খুঁজে ফিরি দিগ্বিদিক।
খুঁজে পাই না নিজের মাঝে। নিজেকে তখন ঘাস, লতা, হাসনাহেনা রাস্তার ধূলিকণার মতো এক একটি অংশ মনে হয়। আমি মুচকি হাসি। বিস্ময়কর সে হাসিতে অজস্র রহস্য লুটোপুটি খায়। আমি এগিয়ে যেতে থাকি।
ভালবাসাটা যখন অসহ্য পর্যায়ে চলে যায়, বিরক্তিকর ঘটনা ঘটতে থাকে একের পর এক তখন নিজেকে রুপা ভাবতে খুব ইচ্ছে করে। হয়তো বা তখন আমি রুপা হয়ে যাই। ভালবাসাকে বুকে চাপা দিয়ে রাখতে গিয়ে অদম্য অনুভূতিটাকে প্রকাশ করে ফেলি। রুপার মতো অপেক্ষা করি হিমুর জন্য বিশাল সারপ্রাইজ নিয়ে। যে সারপ্রাইজ হিমু কখনো গ্রহণ করে না আর আমারও দেয়া হয় না।
হিমু, রুপা আমার মস্তিষ্কের পুরোটাই দখল করে এক আজব খেলা খেলতে থাকে। তাদের দু জনকেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেই। যাদের মাথামুণ্ডু নেই তাদের আবার অস্তিত্ব! কিন্তু আশ্চর্য, তখনই নিজের ভেতর কার যেন ডাক শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখি আমার ভিতর অজস্র হিমু রুপা। আমি তাদের নিয়ে বেঁচে আছি।
কে জানে হয়তো তাদের মাঝেই বেঁচে আছি।
নোটঃ প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমদ এর সুস্থতা কামনা করি। যিনি বিখ্যাত চরিত্র সৃষ্টি করেছেন আর আমাকে ভাবিয়েছেন।
সবাইকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা। খুব ভাল থাকুক সবাই এই কামনা রইলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।