রফিকুল ইসলাম ঃঃঃঃ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১, ১০ আশ্বিন ১৪১৮-----
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪/৯/১১ তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৬তম বার্ষিক অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে " বিশ্বশান্তির নতুন মডেল " উপস্থাপন করেছেন ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তির নতুন মডেল উপস্থাপন করে বলেছেন, এটি একটি বহুমাত্রিক ধারণা যেখানে গণতন্ত্র এবং উন্নয়নকে সবার আগে স্থান দেয়া হয়েছে। এতে আছে ৬টি পরস্পর ক্রিয়াশীল বিষয় যা শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ক্রিয়াশীল এই ৬টি বিষয় হচ্ছেÑ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোচন, বৈষম্য দূরীকরণ, বঞ্চনা লাঘব, সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ত্বরান্বিত ও সন্ত্রাস নির্মূল। বিশ্বের কাছে শান্তির নতুন মডেল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "জীবনব্যাপী আমার অভিজ্ঞতাই আমাকে শান্তির নতুন এই মডেল নিয়ে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আমি এর নাম দিয়েছি 'জনগণের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি কেন্দ্রিক উন্নয়ন মডেল'। এতে জনগণকে সমানভাবে মূল্যায়ন এবং মানবিক সামর্থ্য উন্নয়নকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে যা একমাত্র শান্তির মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব। " গতকাল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৬তম বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণকালে শেখ হাসিনা আরো বলেন, সমৃদ্ধি অর্জন তখনই সম্ভব যখন সমাজ থেকে অবিচার এবং মানুষের মতাহীনতা দূর হবে। কিন্তু এ জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রকে আন্তরিকভাবে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেও এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তিনি সকলের প্রতি জনগণের ক্ষমতায়নের মডেল প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এর মাধ্যমে সাতশ' কোটি জনগণের এই বিশ্বকে আমরা এমনভাবে গড়তে সক্ষম হব যেখানে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। '
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩০ কোটি লোকের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য পুনরায় আবেদন জানান। সেই সংগে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান সকল সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান এবং সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও চরমপন্থার মধ্যকার যোগসূত্র ভেঙে দিতে তিনি তার দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ বছর সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য 'আন্তর্জাতিক বিরোধ নিরসনে শান্তিপূর্ণ মধ্যস্থতা'। প্রধানমন্ত্রী এরকম প্রাজ্ঞ ও সময়োচিত প্রতিপাদ্য নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের প্রশংসা করেন।
এছাড়া তিনি ২০০০ সালে তার প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শুরু করা বাংলাদেশের বার্ষিক ফ্যাগশিপ রেজুলেশন 'এ কালচার অব পিস' এর জন্য সমর্থন কামনা করেন। ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ১৯৩তম সদস্যপদ লাভ করায় দক্ষিণ সুদানকে স্বাগত এবং স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের জন্য নতুন এ রাষ্ট্রের জনগণকে অভিনন্দন জানান।
শান্তিকে উন্নয়নের সোপান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি তখনই বিরাজ করে যখন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। এ লক্ষে শান্তিপূর্ণ মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্বদেশে এবং বিদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দমন এবং আইনের শাসনের অনুপস্থিতির মতো অবিচার নিরসনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
অসাম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, বঞ্চনা, দারিদ্র্য, সাম্প্রদায়িকতা, নারী ও ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকারহীনতা এবং সরকারি কাজে স্বচ্ছ্বতা ও জবাবদিহিতার অভাব মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করে। আর এসব অন্যায্য কর্মকান্ডের ফলে গোটা বিশ্বে ১৯৬৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়' এবং 'সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান' নীতি গ্রহণ করেছিলেন। সাঁইত্রিশ বছর আগে এই মঞ্চ থেকেই তিনি এ কথা উচ্চারণ করেছিলেন। শান্তির এ বাণী শুধু উচ্চারণই করেননি, তিনি তার মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শান্তির জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল আদর্শ শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আইনের শাসনের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরা মিশনে এ দেশের অংশ গ্রহণও একই নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়ের পরিক্রমায় জাতিসংঘের ভূমিকায় পরিবর্তন এসেছে। আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা রাই এখন জাতিসংঘের প্রধান কাজ নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্ত:রাষ্ট্র জাতিগত সংঘাত নিরসন, সন্ত্রাসবাদ দমন, আন্ত:সীমানা অপরাধ দমন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা, দারিদ্র্য বিমোচন, পানি ও জ্বালানী নিরাপত্তা তৈরি এবং ধনী ও গরীবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য বিলোপ।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে জাতিসংঘের সাফল্যে আমাদের এই বিশ্বাসই জন্মেছে যে একবিংশ শতাব্দীতে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সকলের সম্মিলিত ইচ্ছাকে আরও জোরদার করার মত সক্ষমতা সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত ও বৈধ একমাত্র আর্ন্তজাতিক সংস্থা জাতিসংঘেরই রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন অর্জনে জাতিসংঘের নানা উদ্যোগের অংশীদার বাংলাদেশ, যা সংঘাত নিরসনে দেশটির কঠোর অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। তিনি বলেন, হাইতির জাতিসংঘ পুলিশ ইউনিটসহ শান্তিরী বাহিনীতে ৩৬টি দেশের ৫২টি মিশনে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১লাখ ২২ হাজার ৯৪ জন শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছে। এসব মিশনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ১শ' ৩ জন শান্তিরী শহীদ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের শান্তি স্থাপন কমিশনে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম)-এর সমন্বয়কারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সমবসময়ই সংঘাত পরবর্তী সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন ও প্রতিকারমূলক কূটনীতির পক্ষে মত দিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং নারী, শিশু, সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ঝুঁকিপ্রবণ গোষ্ঠীর সমানাধিকার অর্জনে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের নির্বাহী সংস্থা ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউনিসেফ, ইউনেস্কো ও ফাওয়ের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব নীতি ও মান বজায় রেখে উন্নয়ন অর্জনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে তিনি দু:খ করে বলেন, জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিসকিপিং অপারেশনস (ডিপিকেও)সহ কৌশল প্রণয়ন পর্যায়ে বাংলাদেশের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নেই। প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম মেয়াদে (১৯৯৭-২০০০১) দায়িত্বপালনকালে দুটি বড়ো সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করেন। এর একটি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি এবং অপরটি ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি।
এছাড়া তিনি ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরপরই সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, 'আমি আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করি। এতে আরও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়। '
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ফলে প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রাণ সংহারকারী দুই দশকের সংঘাতের অবসান ঘটে। তিনি বলেন, একই সময়ে আমি প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ত্রিশ বছর মেয়াদী গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষর করি। আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সকল সমস্যা সমাধানে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'আমার বর্তমান মেয়াদে এই চলতি মাসেই ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।
এই অমীমাংসিত বিষয় বিগত ৬৪ বছর ধরে আমার জনগণের দৈনন্দিন ভোগান্তির কারণ ছিল। '
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সনদের অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আমরা অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অতীত ভুলের সংশোধনের এটিই একমাত্র পথ।
এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য সুসংহত হবে।
তিনি তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে যেসকল সন্ত্রাসী ঘটনার শিকার হয়েছেন সেসব স্মরণ করে সব ধরণের সন্ত্রাস দমনে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সন্ত্রাসের ব্যাপারে সরকার 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছে। শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'নাইন/ইলেভেন'সহ অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলার যারা শিকার তাদের কথা মনে হলে আমি ব্যথিত হয়ে পড়ি। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই এ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে তাঁর সরকার জনগণের আশা আকাক্সার বাস্তবায়ন করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি এমডিজি-৪ অর্জনে সাফল্যের জন্য গত বছর তার জাতিসংঘ পুরস্কার লাভের কথা উল্লেখ করে বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত এমডিজি-১, সার্বজনীন প্রাথমিক শিায় এমডিজি-২, লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসে এমডিজি-৩ এবং মাতৃমৃত্যু হার হ্রাসে এমডিজি-৫ অর্জনেও সরকার যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে মিল রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে। এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০১৫ সালের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ লোককে দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, তাঁর সরকার সুষম উন্নয়নের জন্য জাতীয় নীতিমালায় সমন্বিত নারী শিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করেছে।
এ ছাড়া স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত নারীদের শিক্ষা অবৈতনিক করার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। নারীরা এখন মন্ত্রিসভা, উচ্চআদালত, প্রশাসন ও জাতিসংঘ শান্তিরা মিশনসহ ব্যবসা বাণিজ্যে ও উচ্চপদে বহাল রয়েছেন। মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১১ হাজার কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জনগণকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি শিশুদের অটিজম এবং 'ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার' বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
এছাড়া অটিজম আক্রান্ত শিশুদের সহায়তা দেয়ার লক্ষে গত জুলাই মাসে ঢাকায় গ্লোবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ উদ্বোধন করার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের এসব উদ্যোগ সফল করতে এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন। তিনি বলেন, 'উন্নত বিশ্বের বাজারে আমাদের পণ্যের অবাধ প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি, বাণিজ্য বাধা অপসারণ, বৈদেশিক সাহায্যের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে এসব সহায়তা আসতে পারে। ' জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের জন্য এ ধরনের সহায়তার নিশ্চয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময়।
প্রধানমন্ত্রী গ্রীন হাউজ গ্যাস হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনামূল্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে স্থানান্তরের লক্ষে চলতি বছরের শেষ দিকে ডারবানে একটি বাধ্য-বাধকতা চুক্তির জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।
অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাতীয় সংসদের হুইপ মির্জা আজম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।