বৃহস্পতিবার এই সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্বায়নের প্রভাবে উন্নত বিশ্ব পৃথিবীর সব জায়গা থেকে মেধাবীদের খুঁজে নিচ্ছে, দক্ষ কর্মীর চাহিদাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো তৈরির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তার সুপারিশগুলো হলো- জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিটি দেশে অভিবাসীদের কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে; স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অভিবাসীদের গড়ে তুলতে হবে দক্ষ করে; অভিবাসীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট দুটি দেশেরই লাভজনক অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
এ সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বলেন, সবাইকে অনুধাবন করতে হবে যে অভিবাসীরা সমাজ বিনির্মাণে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করছেন।
বিশ্বব্যাপী ২৩ কোটি ২০ লাখ অভিবাসীর অধিকার ও মর্যাদা সংরক্ষণের ওপর জোর দেন তিনি।
ইতালি উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় আফ্রিকার শতাধিক অভিবাসীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মহাসচিব বলেন, “এ ঘটনা আমাদের এ সংলাপের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিল। এইসব অসহায় মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের আরো জোরালোভাবে ভাবতে হবে। ”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহাসচিব অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় ৮ দফা পরিকল্পনা সম্বলিত ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন এবং উন্নয়ন’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রতারণা ও নির্যাতন বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া, অভিবাসনের খরচ কমিয়ে আনা, সরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি, অভিবাসীদের ব্যাপারে জনসাধারণের ধারণায় পরিবর্তন আনা এবং বৈষম্য দূর করার কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের এই পরিকল্পনায়।
এই সংলাপ সামনে রেখে বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশিত এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিবাসীরা এ বছর ৪১৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন, যা গত বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
রেমিটেন্স প্রবাহের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৬ সালে তা ৫৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে অভিবাসীর সংখ্যা ২৩ কোটি ২০ লাখ।
অভিবাসীদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে জাতিসংঘে ৫ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এর অংশ হিসাবেই আয়োজন করা হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের এ সংলাপের।
‘পিপল গ্লোবাল অ্যাকশন অন মাইগ্রেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ শিরোনামে এ সম্মেলনের শ্লোগান হলো- ‘পিপল, পাওয়ার অ্যান্ড কম্যুনিটিজ: বিল্ডিং ব্রিজেস ফর মাইগ্রেন্ট, লেবার অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।
শতাধিক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, নাগরিক অধিকার সংগঠক, শ্রমিক ইউনিয়ন, এনজিও, অভিবাসী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন, ধর্মীয় নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ সচিব জাফর আহমেদ খানসহ বাংলাদেশ মিশনের কূটনীতিকরাও অংশ নিচ্ছেন সম্মেলনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।