মাঝে মাঝে...জীবনটাকে অন্যভাবে দেখতে চাই... অধিনায়কত্ব হারানোর পর আপনার প্রতিক্রিয়া দিয়েই শুরু করি। এক বছরের জন্য দায়িত্ব দিয়ে যেভাবে আট মাসের মাথায় আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হলো, এর পরও এটাকে এত সহজভাবে নিতে পারলেন কীভাবে?
সাকিব আল হাসান: আমি সহজেই কোনো কিছুতে বিস্মিত, মর্মাহত কিংবা আনন্দে আত্মহারা হই না। এটা আমার অভ্যাস বলতে পারেন। নেতৃত্ব চলে গেছে ঠিক আছে, না গেলে ভালো হতো, এই আর কি। তবে খারাপ তো একটু লেগেছেই।
যেকোনো রক্ত-মাংসের মানুষেরই খারাপ লাগার কথা। তবে সবার আগে আমি একজন প্লেয়ার। আমার কাজ হচ্ছে মাঠে খেলা। দলের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা। আর ওটা করার সুযোগ যতক্ষণ পাচ্ছি, আমার কোনো সমস্যা নাই।
যখন খবরটা শুনলেন, ওই মুহূর্তের অনুভূতিটা কী ছিল?
সাকিব: মাগুরায় থাকলে সাধারণত আমি বাড়ির বাইরে যাই না। কিন্তু সেদিন বাইরে ছিলাম। ফোন আসতে শুরু করলে আমি বুঝে যাই, কোনো খবর আছে হয়তো। এরপর আমি রাবীদ ভাইকে (বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম) ফোন দিই। তিনিই খবরটা বলেছেন আমাকে।
কী হয়েছে, কী কারণে বাদ, এমন কোনো চিন্তা আমার মাথায় আসেনি। তবে হ্যাঁ, তাৎ ক্ষণিকভাবেই বুঝতে পেরেছিলাম, খবরটা শুনে বাসার সবারই মন খারাপ হবে। কিন্তু আমি এ নিয়ে বেশি মন খারাপ করিনি।
এটা কীভাবে পারেন, মানে এমন একটা খবর পেয়েও কীভাবে স্বাভাবিক থাকা সম্ভব?
সাকিব: এটা আসলে বলা মুশকিল। ব্যাপারটা আমি নিজেও ঠিক বলে বোঝাতে পারব না।
ক্যাপ্টেনসি হারানোর পরও আমি অনুশীলন করেছি। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না যে আমার মন খারাপ ছিল কিংবা অনুশীলনে আন্তরিক ছিলাম না। অধিনায়কত্বটা থাকল না—এমন একটা চিন্তা কখনোই আসেনি আমার।
এর মধ্যে কি আপনি মানসিকভাবে খুব শক্ত—এটা দেখানোর কোনো সচেতন চেষ্টা আছে?
সাকিব: থাকতে পারে। আমি নিশ্চিত নই।
দু-একজন ফ্রেন্ড বলেছে, ‘দ্যাখ্, আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন। ’ ওরা এমনও বলছে, অধিনায়কত্ব না থাকাটা আমার জন্য ভালো হয়েছে। আমি আরও ভালো পারফর্ম করতে পারব। সেটা হলে তো ভালোই। আর আমিও বিশ্বাস করি, আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন।
খারাপ কিছুর পরই ভালো কিছু আসবে, এই বিশ্বাসও আছে আমার। এই কারণেই আমার আর টেনশন হয় না।
আপনার যে বয়স, যে পারফরম্যান্স—তাতে মনে করা হয়েছিল অধিনায়ক হিসেবে অনেক দিন থাকবেন। আপনার নিজেরও কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল। ঠিক হোক কিংবা বেঠিক, বোর্ড তো একটা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আপনাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে আপনি নেতৃত্ব হারানোর কারণটা কী বলে মনে করেন? আপনি কি মনে করেন, কোথাও ভুল ছিল আপনার?
সাকিব: আমি বলব না যে আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট ঠিক ছিলাম। হয়তো কিছু ভুল ছিল। কিছু কিছু ব্যাপার, কোনো কোনো পরিস্থিতি ছিল, যেগুলো আরও ভালোভাবে সামলাতে পারলে আমার জন্য হয়তো ভালো হতো। অনেকের ভুল ধারণাও প্রক্রিয়াটাকে ত্বরান্বিত করেছে। যা শুনেছেন, সেটাকেই সত্যি বলে মেনে নিয়েছেন অনেকে।
কাছ থেকে দেখা কিংবা তা যাচাই করার চিন্তা করেননি। আমার মনে হয়েছে, এ ক্ষেত্রে মিডিয়ারও একটা ভূমিকা আছে। যেমন ধরেন, গত বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর আমি কোনো বিষয়ে একটা মজা করেছিলাম, কিন্তু সেটা ছাপা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারার পর। মানুষ তো ওটাকেই সত্যি মনে করবে। তারা তো আর বুঝবে না যে আমি ওই কথাগুলো (‘লাঞ্চটা খুব ভালো ছিল।
তাই ব্যাটসম্যানরা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে ফিরে এসেছে’) বলেছিলাম আয়ারল্যান্ড ম্যাচের পর।
কেউ হয়তো বলছে, দলের মধ্যে দলাদলি আছে। এ কথা শোনার পর দূর থেকে দলের পাঁচজনকে আলাদা গল্প করতে দেখে তারা হয়তো ভাববে, এই পাঁচজনই একটা গ্রুপ। কিন্তু পাঁচজন মিলে কোনো বিষয়ে স্বাভাবিক আলাপও হতে পারে—সেটা তাদের মাথায় না-ও আসতে পারে। খোলা মন নিয়ে চিন্তা করা এক রকম আর পূর্ব ধারণা নিয়ে চিন্তা করাটা আরেক রকম।
এই ব্যাপারগুলোই আমার বিপক্ষে কাজ করেছে। তবে শুধু প্রেসের দোষ, শুধু আমার দোষ কিংবা বোর্ডের দোষ—কোনো একটার কথা বলব না। সবকিছু মিলিয়েই এটা হয়েছে।
কিন্তু আপনার সঙ্গে বোর্ডের টুকটাক ঝামেলা লেগেই ছিল। এটা কি যোগাযোগের সমস্যার কারণে?
সাকিব: আমার সঙ্গে বোর্ডের সম্পর্ক খারাপ ছিল বলব না।
বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কটা ভালোই ছিল বলে মনে করি আমি। উনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছে। হ্যাঁ, কোনো বিষয়ে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু আমি বলব, বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালোই ছিল। উনি সব সময়ই আমাকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন।
তবে হয়তো অনেকেই অনেক রকম চিন্তা করছেন। যাঁরা চিন্তা করেছেন, তাঁদের সঙ্গে হয়তো আমার কথাই হয়নি। আসল তথ্যটা জানার জন্য তাঁরা কখনোই আমার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি। এটাও একটা ব্যাপার ছিল। তাঁদের সঙ্গে কথা হলে অনেক কিছুই ক্লিয়ার হয়ে যেত, কিন্তু কথা হয়নি।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সামনাসামনি বসিয়ে দুই পক্ষেরই কথা শোনা হলে মনে হয় আসল ব্যাপারটা বেরিয়ে আসত। কিন্তু হয় উনারা কথা বলেছেন কিংবা আমি বলেছি...তবে সেটা কারও মাধ্যমে, বেশির ভাগই মিডিয়ার মাধ্যমে।
আপনার সম্পর্কে অনেকের ধারণা, আপনি উদ্ধত-দুবির্নীত। এটার কারণ কী বলে মনে হয়?
সাকিব: যারা আমার সঙ্গে মিশেছে, আমার সম্পর্কে তারা কী মন্তব্য করে, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যারা আমার সঙ্গে মিশেছে, আমার বিশ্বাস, তারা আমার সম্পর্কে খুব কমই নেগেটিভ কিছু বলবে।
আমি মনে করি, আমার কোনো টিমমেট যদি কখনো বলে, কোচিং স্টাফের কেউ নেগেটিভ কিছু বলে, তাহলে আমি মনে করব হয়তো আমার কোনো ভুল হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যার সঙ্গে আমার দেখা-সাক্ষাৎ ই হয়নি, দূর থেকে দেখে সে একটা কমেন্ট করে দিল।
কারণ যেটাই হোক, দেশের মানুষ যদি ভুল বুঝেও আপনাকে উদ্ধত মনে করে, সেটা কি আপনাকে কষ্ট দেয় না?
সাকিব: এই ব্যাপারগুলো আমাকে খুব বেশি ফেস করতে হয় না। কারণ, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তো সেভাবে মেশার সুযোগ হয় না। সমস্যা হয় আমার কাছের মানুষদের।
কথার কথা, মাগুরায় আব্বুর কোনো বন্ধু কিংবা পরিচিত কেউ হয়তো মাগুরার ভাষায় বলল, ‘আরে, তোর ছেলে নাকি এই করিছে?’ এটা শুনে আব্বু তো একটু মন খারাপ করবেই। মাগুরা ছোট শহর, সবাই সবাইকে চেনে। এই কথাগুলো সেখানে বেশি হয়। আম্মা হয়তো কোনো বাসায় গেল, কেউ তাকে বলল, ‘তোমার ছেলের নামে এ রকম শুনলাম। পেপারে দেখলাম।
এ রকম হয়েছে নাকি?’ আমার সঙ্গে পরিবারের কারও ক্রিকেট নিয়ে বেশি কথা হয় না। তারা তো অত বোঝেও না। উত্তরও ঠিকভাবে দিতে পারে না। সমস্যাটা হয় তাদেরই। অধিনায়কত্ব যাওয়ায় আমি হয়তো পাঁচ পারসেন্ট কষ্ট পেয়েছি।
কিন্তু তারা পেয়েছে শতকরা আশি ভাগ।
আপনি এত ভালো প্লেয়ার, এত ভালো খেলছেন। সবার আপনাকে মাথায় তুলে রাখার কথা। কিন্তু আপনাকে নিয়ে মানুষের মধ্যে এই যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, এতে খারাপ লাগে না?
সাকিব: মাঝেমধ্যে এই চিন্তাটা আসে। মানুষ আমার সম্পর্কে একটা ভুল জানবে কিংবা ভুল ধারণা করবে, এটা কেন হবে? আমি যেমন, তাদের ধারণাটা যদি সে রকম হয়, তাহলে ঠিক আছে।
কিন্তু এখন তো বেশির ভাগই নেগেটিভ নিউজ আসছে। ওর আচরণ ভালো না, এটার অর্থ কী? সবাই তো এটাই ভাববে, ও বেয়াদব-টাইপের। অনেকে বলে, আমি নাকি অ্যারোগ্যান্ট। কিন্তু কী কারণে? ইন্টারভিউ না দিলে আমি অ্যারোগ্যান্ট? কিংবা কারও সঙ্গে কথা না বললেই অ্যারোগ্যান্ট? কে যেন আমাকে বলছিল, আমাদের দেশে অ্যারোগ্যান্টের সংজ্ঞা এক রকম, বাইরের দেশগুলোতে এক রকম। আমাদের দেশে যে কারণে আমাকে অ্যারোগ্যান্ট মনে হয়েছে, অন্য দেশ হলে হয়তো এটা কোনো ব্যাপারই হতো না।
কখনো কি এমন মনে হয়, জেনারেশন গ্যাপের কারণে আপনার বা তামিমের মতো নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমাদের সাংবাদিক বা কর্মকর্তাদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে?
সাকিব: হতে পারে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা দুজন—দুজন বলব না, আরও হয়তো এক-দুজন আছে—একটু আলাদা-টাইপের। একই সঙ্গে আমরা অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলায় একটা ব্যাপার যেভাবেই হোক আমাদের মধ্যে এসেছে যে নিজেদের দলের মধ্যে কখনোই তোমরা প্রতিযোগিতা করবে না। তুমি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবে তোমার জায়গায় অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দলে যে আছে তার সঙ্গে। আমরা যখন এ রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছি, তখন আমাদের মনমানসিকতায় পুরো না হলেও কিছু পরিবর্তন তো আসছে।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় কী হয়, ইন্টারভিউ নিতে গেলে অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। ঠিক কিনা? ও সব দেশে এটা নরমাল। কিন্তু আমাদের দেশে এ রকম কালচার গড়ে ওঠেনি।
এখন আপনি চিন্তা করেন, আমার আচরণে সমস্যা কী। হয়তো কেউ বলবে, আমি প্র্যাকটিস বাদ দিয়ে শুটিং করতে গিয়েছিলাম।
আমি টানা আড়াই-তিন মাস ক্রিকেট খেললাম। আমার বিশ্রামের দরকার ছিল। ক্রিকেটের বাইরে থাকার দরকার ছিল। আমি ভেবেছিলাম, ইংল্যান্ড থেকেই যেহেতু দলের সঙ্গে পরে যোগ দেওয়ার কথা বলা আছে, আমার আর কথা বলার দরকার নাই। পরে পেপারে যখন অন্য রকম দেখেছি, খবরে শুনেছি, তখন মনে হয়েছে তাহলে হয়তো আমার চিঠিটিঠি দেওয়া লাগবে।
তখন আমি তা জমা দিয়েছি।
এবার জিম্বাবুয়ে সফরের প্রসঙ্গে আসি। আমার চোখে সিরিজটা ছিল ভালো প্রস্তুতি নেওয়া একটা দলের বিপক্ষে অপ্রস্তুত একটা দলের লড়াই। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। আপনি কি মনে করেন, হারের জন্য সাকিব-তামিমকে দায়ী করে ব্যর্থতার আসল কারণটা চাপা দেওয়া হয়েছে?
সাকিব: যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা তো হয়েছেই।
তবে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত, কোনো সিরিজের আগে যেন আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি না থাকে। আজও আমার এক টিমমেট আমাকে বলছিল যে জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে আমাদের প্রিপারেশনই হয় নাই। বিকেএসপিতে আমরা অনেক দিন ফিটনেস ট্রেনিং করেছি, কিন্তু স্কিল ট্রেনিং করেছি মাত্র ১৫ দিন। কিন্তু সাড়ে তিন মাস ম্যাচ না খেলার ঘাটতি ১৫ দিন ব্যাটিং-প্র্যাকটিস করে পোষানো যায় না। নেট প্র্যাকটিস আর ম্যাচ এক না, ম্যাচে কেউ ৫০ রান করলে তার কনফিডেন্স অন্য রকম থাকবে।
আমরা আসলে আসল কারণটা বাদ দিয়ে অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করি। এখন এই যে সবাই বলে গ্রুপিং-গ্রুপিং। ধোনি একবার একটা ভালো কাজ করেছিল। গোটা দল নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলে গিয়েছিল। আমারও মনে হয়েছে, ও রকম যদি পুরো দল নিয়ে সবার সামনে হাজির হওয়া যায়, তাহলে ভালো হয়।
দলের কোনো সদস্য যদি বলে যে আমার কাছে এ রকম মনে হচ্ছে...মনে হচ্ছে বললেও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু বাইরে থেকে, দলের ভেতরে না থেকে কেউ যদি এ রকম বলে, তখন তো মুশকিল।
বাইরে একটা ধারণা আছে যে আপনি আর তামিম আলাদা, দলের বাকি সবাই আলাদা...
সাকিব: তামিমের সঙ্গে আমি অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে খেলছি। ২০০৩-এ মনে হয় প্রথম খেলেছি, তাহলে আট বছর। আট বছরের এই সম্পর্কের মতো সম্পর্ক তো দলের আর সবার সঙ্গে হবে না।
তার মানে এই নয় যে অন্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ। জিম্বাবুয়ে সফরে তো তামিম, নাসির, সুহাস (শফিউল), রুবেলদের সঙ্গেই সারাক্ষণ থেকেছে। আমাকে আর কতক্ষণ ওর সঙ্গে দেখেছেন, শুধু ডিনারের সময়। তা-ও সব দিন না। আমাদের দলের বেশির ভাগ সদস্যই ইন্ডিয়ান ফুড পছন্দ করে।
আমার আর তামিমের আবার নানা রকম খাওয়া পছন্দ। হয়তো ওর ইচ্ছা হলো আমরা আজকে স্টেক খাব, আরেক দিন বারবিকিউ খেলাম, নান রুটি খেলাম। ওই সময়গুলোতেই ওর সঙ্গে থেকেছি। রুমেও আমরা একসঙ্গে বেশি সময় কাটাইনি। তার পরও আমি বুঝলাম না যে এ ধরনের কথা কেন ওঠে।
একাদশ নির্বাচনের ব্যাপারে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। ভবিষ্যতে অধিনায়কের ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার আলোচনাও শোনা যাচ্ছে এ কারণে...
সাকিব: ব্যাপারটিকে আমি এ রকমভাবে দেখি, কাউকে যদি আপনি নেতৃত্বই দেবেন, সেটা তার ওপর ভরসা করেই দেবেন। দেন না আপনি তার ওপর সব কিছু ছেড়ে। ভালো ফলাফল না হলে, প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে, তখন নেতৃত্ব বদলানোর বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু নেতৃত্ব দিয়ে যদি আপনি ভরসা করতে না পারেন...যদি ভাবেন ও যদি এমন এমন করে, ও মনে হয় ঠিক করবে না, তাহলে তো অধিনায়কত্ব দেওয়ার কোনো দরকারই নেই।
কাউকে যখন দায়িত্ব দেবেন, তার ওপর আস্থা রাখতে হবে।
আপনি কি সব ব্যাপারে পুরোপুরি পক্ষপাতহীন ছিলেন বলে দাবি করবেন?
সাকিব: আমার মনে হয়, আমি সব সময়ই ফেয়ার ছিলাম। হারারে টেস্টে আশরাফুল ভাইকে খেলাতে চাইনি বলে কথা উঠেছে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, ওই টেস্টে জুনায়েদের দরকার ছিল। এখন এ নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে।
নির্বাচনের নিয়মই তো এটা—চারজনের মধ্যে বিতর্ক হবে, তার পরে ডিসিশন হবে। ডিসিশন হওয়ার পরে কিন্তু আমি কখনোই বলি নাই যে ওটা হলে ভালো হতো।
আশরাফুলের ব্যাপারটা নিয়ে বেশি কথা হয়েছে, কারণ সবাই জানত আশরাফুল টেস্টে নিশ্চিত। এর আগে মাশরাফির সঙ্গেও আপনার একটা ঝামেলা হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। এ থেকে অনেকে দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে ধরে নিয়েছে, সিনিয়র প্লেয়ারদের আপনি দলে চান না...
সাকিব: কেন আমি এমন ভাবব? আমি যদি চিন্তা করি, দলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কে হতে পারে...বোলিংয়ে যদি চিন্তা করি, তাহলে রাজ ভাই (রাজ্জাক)।
উনার সঙ্গে কখনোই আমার কিছু হয়নি।
দলে জায়গা নিয়ে কারও সঙ্গেই আপনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। কিন্তু ওই যে অনেকের ধারণা, আপনি চাননি দলে কোনো সিনিয়র খেলোয়াড় থাকুক....
সাকিব: এটা ক্লিয়ার করার কোনো ভাষা আমার জানা নাই, সত্যি কথা। কারণ আমার মনে এ রকম কোনো চিন্তা থাকলে এই কাজ আমি করতেই পারতাম। আমার ওই ক্ষমতাটা ছিল।
সত্যি বলছি, আমি যদি এই সিরিজেও চাইতাম যে এই প্লেয়ারটারে আমি নেব না, কারও ক্ষমতা ছিল না তাকে নেওয়ার।
তাহলে আপনার ওই ক্ষমতাটা ছিল?
সাকিব: আমি বললাম তো সিরিজে কাউকে যদি না খেলাতে চাইতাম, সেটা পারতাম। এমনকি আমি যদি মনে করতাম আশরাফুল ভাইকে টেস্ট খেলাব না, তাহলে উনার খেলা হতো না। বাকি তিনজন এক দিকে হলেও সেটা সম্ভব ছিল না। আমি না চাইলে উনি শেষ ওয়ানডেতেও খেলতে পারতেন না।
শেষ ওয়ানডের আগে মনে হয়েছিল, উইকেটে স্পিন ধরবে। বেশি রান হচ্ছিল না বলে একজন ব্যাটসম্যান খেলাব, না একজন স্পিনার নেব এ নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলাম। আমি যদি ঘাড় তেড়ামি করতাম যে, না, আমার একজন স্পিনারই লাগবে, কোচ তখন কী করত? এমন তো না যে কোচ এক-দুই বছর ধরে আছে, সবাইকে চেনে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তার তো সমস্যা ছিলই। আমি যদি সত্যি চাইতাম যে উনি খেলবেন না, খেলা সম্ভব ছিল না।
তার মানে সিনিয়র খেলোয়াড়রা দলে থাকলে আপনার একচ্ছত্র রাজত্ব থাকবে না, এ রকম চিন্তাভাবনা আপনার কখনোই ছিল না?
সাকিব: উনারা দলে থাকলে তো আমার আরও ভালো লাগে। কারণ আমি উনাদের সঙ্গে অনেক বেশি ফ্রি। অনেক কথা বলতে পারি। কথার কথা, মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কী। আমি যখন প্রথম খেলা শুরু করি, আমি প্রথম ক্যাম্প করেছি নড়াইলে।
মাশরাফি ভাই তখন মাত্র জাতীয় দলে খেলা শুরু করেছেন। যে কোচ ছিলেন উনি মাগুরারই, বাপ্পি স্যার। মাশরাফি ভাই যখন এক মাসের ক্যাম্পটা করছিলেন, তখন মাগুরার সে ক্যাম্পেও উনি ছিলেন। তো বাপ্পি স্যারের কাছে উনি প্রতিদিনই আসতেন। আমি উনার সঙ্গে গার্ডার দিয়ে মারামারি খেলতাম।
উনিও মারতেন, আমিও মারতাম। অন্যরা মার খেলে চুপ হয়ে যেত, আমি মেরে দৌড় দিতাম। আমার সঙ্গে উনার সম্পর্কটা ছিল এ রকমই। তখন আমি ব্যাটসম্যান ছিলাম, আমার বোলিং দেখে উনিই প্রথম কমেন্ট করেন যে আমি ভালো বোলার। ওই সময় থেকেই উনার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক।
মাশরাফি ভাইকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, উনি আমাকে যত মেরেছেন, আর কাউকে এত মেরেছেন কি না । আমি মনে করি না, এখানে আমার দিক থেকে কোনো সমস্যা আছে। এখন উনার মনে যদি কিছু থাকে সেটা উনার ব্যাপার।
প্রথম আলোয় মাশরাফি তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘সাকিব আমার ছোট ভাইয়ের মতো’...
সাকিব: আমার কাছে এ রকমই মনে হয়েছে। উনার চোখে যদি কখনো আমার কোনো সমস্যা চোখে পড়ে, সিম্পলি আমাকে উনার শাসন করা উচিত।
উনার সঙ্গে আমার সম্পর্কটাকে এভাবেই দেখি আমি। আমি যখন হাফ প্যান্ট পরি, তখন থেকেই উনাকে চিনি।
আপনার বিরুদ্ধে আরেকটা অভিযোগ ছিল, আপনি অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে খুব একটা মেশেন না, কথা বলেন না। এটা কি ঠিক?
সাকিব: সত্যি কথা, আমি অত বেশি কথা বলি না। তবে যখনই মনে হয়েছে, কারও সঙ্গে কথা বলা দরকার, আমি কিন্তু কথা বলেছি।
জিম্বাবুয়ে সিরিজেরই একটা উদাহরণ দিই। একজন খুব খারাপ করছে, মন খারাপ করে আছে। আমি ওকে বললাম, তুই কীভাবে এটা চিন্তা করিস যে তোর ড্রপ পড়ার চান্স আছে, তুই তো পাঁচ ম্যাচই খেলবি। তুই তোর মতো খেল। তুই যদি ড্রপ পড়ার চিন্তা করিস, কীভাবে ভালো খেলবি?
কে সেই সৌভাগ্যবান?
সাকিব: সে যে-ই হোক।
যেমন এই ট্যুরেই আমি একজন বোলারকে বলেছি, ‘দ্যাখ, তোরে আমি যখন বল দিই, কেন দিই? তোর ওপর আমার ভরসা আছে বলেই তো দিই। ’ কথার কথা, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওভারে রুবেল যেদিন উইকেট নিয়ে আমাদের জিতিয়ে দিল...আগের ওভারে ও ছয় খেয়েছিল। শেষ ওভারের আগে যখন আমি আর মুশফিক ভাই আলোচনা করছিলাম, তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের প্রসঙ্গটা উঠে এল। ওই ম্যাচে ও মার খেয়েছিল। আমি বললাম, যেটা খারাপ সেটা তো হয়েই গেছে।
যদি কেউ পারে, তাহলে ও-ই পারবে। আমার যদি কারও ওপর এমন আস্থা থাকে, তাহলে তো তাকে খুব বেশি কিছু বলার দরকার নেই। দু-একটা কথা বললেই হয়ে যায়।
হয়তো একদিন মুশফিক ভাইয়ের মন খারাপ। আমি উনারে বললাম, ‘আপনি বেশি খারাপ কী করবেন, জিরো মারবেন! এতে কি মারা যাবেন? মারা তো যাবেন না।
আপনি কী করতে পারেন...চেষ্টা করতে পারেন। এভাবে চিন্তা করলে খেলাটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যায়। ’ এই কথাটা উনার অনেক কাজে এসেছে বলে আমার ধারণা।
দলের ১১ জন সবাই তো এক রকম না। অনেকে চায়, সব সময় তার সঙ্গে কথা বলি।
কেউ আবার মনে করে, আমি কি কিছুই বুঝি না? কিছু না বুঝলে জাতীয় দলে কেন নিয়েছে আমাকে? এত বোঝানোর কী আছে?
কাকে কখন কী বলতে হবে, কতটা বলতে হবে—এটাও তো খুব গুরুত্বপূর্ণ...
সাকিব: হ্যাঁ, আমার তো সারা দিন কথা বলার দরকার নাই। দুই মিনিট একটা কাজের কথা বললেই যথেষ্ট। আমি হয়তো জিম্বাবুয়ে ট্যুরে সবার সঙ্গে অত বেশি কথা বলিনি। তার পরও আমার মনে হয়, যাকে আমার যা বলার প্রয়োজন ছিল, আমি বলেছি।
আপনি যখন অধিনায়ক, চান বা না চান সব সময় কোনো না কোনো বিতর্ক ছিলই।
এর কারণ কী?
সাকিব: এটা একটা হতাশাজনক ব্যাপার ছিল।
কারও কারও তো এমনও ধারণা হয়ে গেছে যে, আপনি বিতর্কে থাকতে পছন্দ করেন...
সাকিব: কেন আমি ইচ্ছা করে বিতর্কে জড়াব? আসলে হঠাৎ হঠাৎ এমন সব কথা শোনা যায়, যা শুনে নিজেকে কন্ট্রোল করাই মুশকিল। যদি এমন হতো যে তিলকে তাল বানাচ্ছে কেউ...কিন্তু যেখানে তিলই নাই, সেখানে তাল বানানোটা মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়। ধরেন এই যে দলে গ্রুপিংয়ের কথা বেশ কিছুদিন ধরেই চলে আসছে। কিন্তু কেন এটা বলা হচ্ছে, দলের মধ্যে আমরা ভেবেই পাই না।
একসময় শুনি, বিকেএসপি গ্রুপ। কিন্তু এই দলে যারা বিকেএসপি থেকে এসেছে, দেখবেন বিকেএসপি থেকে না আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গেই ওদের সবচেয়ে ভালো খাতির। আমার ভালো খাতির কার সঙ্গে, তামিমের সঙ্গে। মুশফিক ভাই বেশির ভাগ সময়ই থাকেন রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গে। রাজ ভাই কার সঙ্গে থাকেন, মাশরাফি ভাই আর রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে।
তো বিকেএসপি গ্রুপ কীভাবে হলো? আমি তো এটা বুঝলাম না। এখন আবার শুনছি বিকেএসপি গ্রুপ নাই, আমার আর তামিমের গ্রুপ। আমি আর ও যদি বেস্ট ফ্রেন্ড হই, স্বাভাবিকভাবেই আমরা একটু বেশি সময় একসঙ্গে কাটাব। তার মানে তো এই নয় যে দলের অন্যদের নিয়ে আমি খারাপ আলাপ করছি। যারা বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেছে, তারা কিন্তু বাইরে বাইরে ছিল।
ভেতরে কী হচ্ছে এটা বোঝা দরকার। আর আমার মনে হয়, তামিমের মতো সাপোর্টিভ টিমমেট খুব কমই আছে। যে প্লেয়ারের যে জিনিস লাগে, মোজা থেকে শুরু করে হেলমেট-ব্যাট—সবকিছু ও জোগাড় করে দেয়। খাবার মেন্যু পর্যন্ত ও ঠিক করে দেয়।
জিম্বাবুয়ে সফরের আগে নির্বাচকদের সঙ্গে আপনার যে ঝামেলাটা হলো, সেটির ব্যাখ্যা কী?
সাকিব: ওটা এমন কিছু ছিল না।
আমার মনে হয়েছে, আকরাম ভাই এটা খুবই স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। এতে উনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে। উনি ব্যাপারটা অন্যভাবে নিলে আমার জন্য কঠিন হয়ে যেত। আমার একটা ভুল হতেই পারে। কিন্তু এমনও হতে পারে, উনিও একটা ভুল করেছেন।
এটা তো ভুল-শুদ্ধর ব্যাপার ছিল না। আকরাম বলেছেন, আপনাকে দল জানানো হয়েছে, আপনি বলেছেন জানানো হয়নি...দুজনের কথা তো আর ঠিক হতে পারে না...
সাকিব: তিনি আমাকে অবশ্যই জানিয়েছেন। টিম দেওয়ার আগে জানিয়েছেন যে এই টিম তাঁরা সিলেক্ট করছেন। ‘আমরা একে একে নিয়েছি। ’ আমি ফোন পেয়ে ঘুম থেকে উঠেছি।
বললাম, ঠিক আছে। শুনলাম কেউ কেউ আবার কমেন্ট করেছে, আমি তখন ড্রাংক ছিলাম। যে আমি জীবনে বিয়ারই ধরলাম না, সেই আমিই নাকি ড্রাংক! এ রকম অনেক বিতর্ক হয়েছে। তবে সেটা কতটা সত্য, সেটাই জানা দরকার।
কিন্তু আপনি তো বলেছেন, নির্বাচকেরা আপনার সঙ্গে কথা বলেননি...
সাকিব: না, না, না, এটা আমি কখনোই বলিনি।
আমি বলেছি, আলোচনা হয়নি। পেপারে টিম দেওয়ার আগেই আমাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু জানানো আর আলোচনা করা তো এক না। আপনি-আমি বসে একে নিলে ভালো হয়, ওকে কেন দরকার এ রকম একটা আলোচনা করা যায়। কিন্তু উনি বলছেন, আমরা একে একে দলে নিয়েছি।
টেস্টের জন্য এ রকম চিন্তা। যখন আমাকে জানানো হলো, তখন ইংল্যান্ডে সকাল আটটা-সাড়ে আটটা হবে। ওখানে টি-টোয়েন্টি হয় সন্ধ্যা সাতটা থেকে। আমি তাই একটু রাত জাগতাম, পরদিন একটু দেরি করে উঠতাম। আমি তখন ঘুমিয়ে ছিলাম।
এটাই হলো ব্যাপার।
জিম্বাবুয়ে সফরে ‘হেড অব ডেলিগেশন’ কখনো আপনার সঙ্গে আলাদাভাবে বসেছেন? কখনো বলেছেন, ‘সাকিব, তোমার এই সমস্যা, এটা ঠিক করো?’
সাকিব: না।
আপনার ব্যাপারে উনি অসন্তুষ্ট, এমন কোনো আভাসও পাননি?
সাকিব: না। কখনোই তো এমন মনে হয়নি।
তাহলে উনি যে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, এতে বিস্মিত হননি?
সাকিব: বিস্মিত একটা ব্যাপারেই হয়েছি, যখন উনি বলেছেন, আমি আর তামিম নাকি টিম আগে থেকেই করে নিয়ে এসেছি।
সব মিলিয়ে আপনার যে অভিজ্ঞতাটা হলো, এটা সচরাচর দেখা যায় না। আপনার পারফরম্যান্স ভালো ছিল, দলও একেবারে ভয়াবহ খারাপ কিছু করেনি, অথচ এভাবে অধিনায়কত্ব হারালেন...
সাকিব: কে যেন বলছিল, সম্ভবত আমিই শেষ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে বরখাস্ত হওয়া প্রথম অধিনায়ক। অধিনায়ক নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে পারেন, কিন্তু এমনটা দেখা যায় না ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার পরও অধিনায়ক বরখাস্ত হয়েছেন।
আপনাকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে তো বলা হচ্ছে নেতৃত্বে ব্যর্থতার কথা...
সাকিব: অভিযোগ যদি এটা হয়, তাহলে তাদের কাছে হয়তো এমন মনে হয়েছে। আমার কোনো আপত্তি নাই।
কিন্তু কী করলে ভালো হবে, সেটা জানতে পারলে আমার জন্য ভালো। ভবিষ্যতের জন্য ভালো।
সব মিলিয়ে কী মনে হচ্ছে, আপনাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সরিয়ে দেওয়াটা কি অন্যায় হয়েছে?
সাকিব: ন্যায়-অন্যায় বলব না। আপনি যদি এখনই চিন্তা করেন, তাহলে অনেক জিনিস অনেক ক্লিয়ার। এখন যদি একই সিদ্ধান্তটা নিতে হয় কারও, তাহলে দুবার চিন্তা করবে।
এটা হয়তো সেই সময় করেনি। এটা হলো আমার ধারণা। ঠিক নাও হতে পারে।
পুরো ঘটনাটাকে যদি এক শব্দে বলতে বলি, কী বলবেন?
সাকিব: দুঃখজনক। তবে এক শব্দে ব্যাপারটা বোঝানো খুব কঠিন।
নতুন অধিনায়ক যে-ই হোক, তার অধীনে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে খেলবেন?
সাকিব: আমার তো মনে হয়, এখন আমার আবার বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করার সুযোগ আসবে। উড়ে উড়ে ফিল্ডিং করব।
সূত্র: প্রথম আলো ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।