জাতীয় দলে এক সঙ্গে খেলছেন অনেক বছর ধরে। দলের বহু জয়োৎসবও উদযাপন করেছেন এক সঙ্গে। একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে খেলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। কিন্তু এবারই প্রথম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্ধারিত কোনো টুর্নামেন্টে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে খেললেন মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। দুজনে আবার দুই নির্ধারিত দলের অধিনায়ক।
টাইগার অধিনায়ক মুশফিক আবাহনীর এবং তামিম ইউসিবি বিসিবি একাদশের। গতকাল বিসিবি আয়োজিত বিজয় দিবস টি-২০ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে পরস্পরের প্রতিপক্ষ ছিলেন জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটার। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় তামিমের ইউসিবি বিসিবি একাদশ শেষ বলে হারিয়েছে মুশফিকের আবাহনীকে। ইউসিবি বিসিবি একাদশ ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে শুভ সূচনা করেছে টুর্নামেন্টে।
জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ইউসিবি বিসিবি একাদশের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান।
১৯ নম্বর ওভারে শুভাশীষ রায়ের বোলিং থেকে ম্যাচ সেরা মিথুন আলী ও নাঈম ইসলাম নেন ৮ রান। ফলে শেষ ওভারে বিসিবি একাদশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১১ রান। জাতীয় দলে ফিরতে মরিয়া ফরহাদ রেজার ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মারেন মিথুন। পাঁচ বলের সমীকরণ দাঁড়ায় পাঁচ রানে। ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক পরিবর্তন করেন মিথুন।
তৃতীয় বলে রান নিতে ব্যর্থ হন নাঈম। ফলে শেষ তিন বলে জয়ের জন্য বিসিবি একাদশের দরকার ৪ রান। চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নেন নাঈম। পঞ্চম বলে দুই রান নিয়ে স্কোর টাই করেন মিথুন। শেষ বলে জয়ের জন্য সিঙ্গেল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন মিথুন ও নাঈম।
আবাহনীর অধিনায়ক মুশফিক ফিল্ডারদের সিঙ্গেল আটকানোর জন্য ছাতার মতো ঘিরে ধরেন প্রতিপক্ষ দুই ব্যাটসম্যানকে। টাইয়ের উত্তেজনায় সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ১২ হাজার ক্রিকেটপ্রেমী উঠে দাঁড়ান সিট ছেড়ে। ফরহাদের ইয়ার্কার লেন্থের বলটি কোনোরকমে খেলেই দ্রুত প্রান্ত বদল করেন মিথুন ও নাঈম। জিতে যায় ম্যাচটি। তামিম ইকবালের কাছে হেরে যান মুশফিকুর রহিম।
তারকা ক্রিকেটারদের পিছনে ফেলে ম্যাচসেরা মিথুন খেলেন ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪৩ বলের ইনিংসটিতে ৫টি চার ছাড়াও ছিল ৪টি ছক্কা।
শুধু ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই হারেননি মুশফিক। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের লড়াইয়েও হেরেছেন। টাইগার অধিনায়ক করেছেন শূন্য।
তামিম খেলেছেন ৪৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৯ রান করে মুশফিকের আবাহনী। দ্বিতীয় ওভারে সৌম্যকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আফতাব আহমেদ ও মিজানুর রহমান ৩৪ রান যোগ করে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় রোধ করেন। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন বোলিংয়ে আসার পর ৬৬ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে আবাহনী। এরমধ্যে জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিক ও সহ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছিলেন।
দুজনেই করেছেন শূন্য রান। দেলোয়ারের স্পেল শেষ হওয়ার পর সপ্তম উইকেট জুটিতে সোহরাওয়ার্দী শুভ ও জিয়াউর রহমান যোগ করেন ৪৪ রান। শুভ করেন ৩১, জিয়া ২০ এবং শেষ দিকে ফরহাদ ১০ বলে ১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। দেলোয়ার ১৮ রানে নেন ৪ উইকেট।
১৪০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বিসিবি একাদশ।
সে অবস্থান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে তামিম ও মিথুন ৮৯ রান যোগ করে জয়ের ভিত গড়ে দেন। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে তামিম বিদায় নিয়ে খেলা জমে উঠে। তবে শেষ পর্যন্ত মিথুন সময়োপযোগী ব্যাটিং করে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।
আবাহনী: ১৩৯/৮, ২০ ওভার ( সৌম্য সরকার ১, আফতাব আহমেদ ৩৩, মিজানুর রহমান ১৮, মুশফিকুর রহিম ০, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ০, নাজমুল হোসেন মিলন ৭, সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩১, জিয়াউর রহমান ২০, ফরহাদ রেজা ১৭*, অতি. ১১। আল-আমিন ১/৩২, দেলোয়ার হোসেন ৪/১৮, মুক্তার আলী ১/৩৪)।
ইউসিবি বিসিবি একাদশ : ১৪০/৪, ২০ ওভার ( তামিম ইকবাল ৪৩, ইমরুল কায়েশ ১৪, রনি তালুকদার ০, মিথুন আলী ৬৭*, মার্শাল আইয়ুব ৫, নাঈম ইসলাম ৪*। শুভাশীষ রায় ২/২৪, ফরহাদ রেজা ১/২৭, নাবিল সামাদ ১/২০)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।