প্রতিশ্রুতি কেউ রাখতে পারলনা আজ অব্দি,
তাই সুনীলের কবিতা লেখার উপকরণ
আজও রয়ে গেছে পলিমাটির পরতে-পরতে:
কাওরান বাজারের বেশ্যাকে দু'শ'’ টাকা দেবে
বলেছিল আমার বন্ধু বারেক।
কাজ শেষে একশ'’র একটি মাত্র নোট দু'’স্তনের
খাঁজে গুঁজে দিয়ে দিগ্বিজয়ীর
মতো হাসতে এতটুকু লজ্জা দেখিনি তার।
প্রেমিকার মাথা ছুঁয়ে শপথ নিয়েছিলাম :
আর কখনো স্ব-মৈথুন করব না—--
তাতে নাকি শরীরের ক্ষতি।
সে প্রেমিকা নিয়েছে বিদায়; তারপর
নিজের কাছেই কত-শত-বার শুদ্ধ থাকার
প্রতিজ্ঞা করে ঘুমাতে গিয়েছি আমি।
অবশেষে, তেপান্তরের ধু ধু বিস্তারে
শুয়ে, যখন শরীরের গন্ধে শরীর জেগে ওঠে,
সকল প্রতিজ্ঞা হাতের জোরে রেতঃ'র
মতই ছুড়ে ফেলে দিয়েছি আমি।
আরিফ ভাই বলতো—-- বিপ্লব অনিবার্য,
তোরা প্রস্তুতি নে। সেই নেশায়
চারুবাবুর প্রেতাত্মার পিছে ছুটে
কঙ্কাল হল কত মেধাবী মুখ: তাদের আজ
লেনিনের মূর্তি টেনে-হিঁচড়ে
নামাবার দঙ্গলে যেন দেখতে পাই।
আর, সারাটি জীবন সাম্যের গান গেয়ে, অবশেষে
ধর্মান্ধ দক্ষিণে নত-মস্তকে হাঁটু গাড়লেন
শ্রীযুক্ত ভূপেন হাজারিকা।
মন্ত্রী মশাই সফরে এসে নতুন রাস্তাটা
ঠিক করে দেবেন বলেছিলেন।
প্রতিদিন সকালে গাঁড় পীতবর্ণের কড়া প্রস্রাবে
জমে ওঠা ফেনার মতই সেই সব রাজনৈতিক
কসম পানি ঢেলে ধুয়ে দিতে দ্বিতীয়বার
ভাবতে হয় না তাকে।
মৌলানা-হুজুর পাগড়ী পাকাতে-পাকাতে শোনাতেন :
খেলাফত কায়েম হলে নাকি শান্তি আসবে দেশে।
সেই সুখে শরীরে মৃত্যু বেঁধে জনতার
স্রোতে বাঁধ হতো কতজন।
আজ ত্রিশঙ্কু থেকে হয়ত জন্মভূমির দৃশ্য
ঝাপসা দেখতে পায় তারা—--
গরুর গোস্তে হাত ডুবিয়ে ভুরিভোজ
শেষে মৌলানার দাঁত খিলাল ছাড়া
কিছুই পড়েনা চোখে।
ম্যাকনামারা সাহেব, ইন্দো-চীনে নিযুত
লোকের রক্তে গোসল শেষে ফুসরত পেলে,
দশটি বছর গরীবী হটাবার কত না
ছবক শোনালেন ওয়াশিংটনে বসে।
যদিও প্রতিরাতে ভূ-ভাগের আ'’ধেক শিশু
খেতে পাবার অপেক্ষার প্রহরে আজও
ঘুমিয়ে পড়ে ঋণের বোঝার ভারে।
কথা দিয়ে কথা রাখা কেবলই
মীর-জাফরের মতন সত্য :
এই একটি মাত্র উপপাদ্য প্রমাণ
করার নেশায় তামাম
জাহানের তাবৎ মাখলুকাত যেন
উঠে-পড়ে লেগে আছে
অনাদিকাল ধরে।
২১/০৯/১১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।