গ্রুপ কমান্ডার বাহাউদ্দিন
=================
গল্পটি এক নবম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোরের। নাম তার বাহাউদ্দিন রেজা।
বসত কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। যুদ্ধ শুরু হলে বাহাউদ্দিনও যোগ দিল
মুক্তিবাহিনীতে। তার অবশ্য মুক্তিবাহিনীতে যোগ
দিতে কোনো সমস্যা হয়নি।
কারণ, ও যে আগেই চৌদ্দগ্রাম থানা থেকে অস্ত্র লুট করে এনেছিল!
কাঁঠালিয়া ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে ও নেমে পড়লো যুদ্ধে। আটজনের
একটি গ্রুপের গ্রুপ কমান্ডার ও নিজেই। ওদের টার্গেট- স্থানীয় কমার্স
ব্যাংকে গেরিলা হামলা চালানো। একটা নৌকায় করে ওরা পার
হলো গোমতী নদী। মাঝিও ওদেরই লোক।
আটজনের দল ভাগ
হয়ে গেলো চারটি ছোট দলে। প্রতি দলের একজনের কাছে শুধু
গ্রেনেড, আরেকজনের কাছে পিস্তল আর গ্রেনেড। বাহাউদ্দিনের কছে একটি পিস্তল আর দু’টি গ্রেনেড।
সকাল সাড়ে দশটায় ওরা ঢুকলো কমার্স ব্যাংকে। বাহাউদ্দীন ঢুকেই
ছুঁড়ে মারলো তার হাতের গ্রেনেডটি।
প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হলো।
কিন্তু ও নিজেও তো ব্যাংকের ভেতরে। স্পিন্টার এসে বিঁধলো ওর
গায়েও। আহত হয়ে দ্রুত ব্যাংক থেকে বেরিয়ে পড়লো ও।
পট্টি বেঁধে রক্ত ঝরা একরকম বন্ধ
করে দৌড়োতে লাগলো খেয়াঘাটের দিকে।
কিন্তু বিধি বাম। রাস্তায় মুখোমুখি হয়ে গেলো এক রাজাকারের
সঙ্গে। সে খবর পেয়েছে কমার্স ব্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আর
বাহাউদ্দিনের শরীর থেকে রক্ত ঝরছে দেখে বললো, ও নিশ্চয়ই
বোমা ফাটিয়েছে। বাহাউদ্দিন কিছুই বললো না, ঠাণ্ডা মাথায় পাশের
ধানখেতে নেমে আঁজলা ভরে পানি দিলো মুখে।
রাজাকারটার সন্দেহ
তাতে আরো বেড়ে গেলো। এগিয়ে এসে কলার ধরে বসলো। আর যায় কোথায়, এক লাথিতে রাজাকারটাকে ধান
ক্ষেতেফেলে দিলো বাহাউদ্দিন। তারপর পকেট থেকে পিস্তল বের
করেই- দুম!
এরপর আবার ছুট। একছুটে খেয়াঘাটে।
আবারও রাজাকারের
সামনে পড়তে চায় না বাহাউদ্দিন। মাঝিও তাড়াতাড়ি ওকে গোমতী পার
করে পৌঁছে দিল হাসপাতালে। আর সেই হাসপাতাল পরিদর্শনে সেদিন
কে এসেছিলেন জানো? আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু,
ভারতের সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সব
শুনে তো তিনি যাকে বলে রীতিমতো হতভম্ব! এইটুকুন একটা ছেলে, সে কিনা এত্তো বড়ো একটা কাণ্ড ঘটিয়ে এসেছে! (ক িপ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।