সত্য যেখানে অসহায় আমি সেখানে হতে চাই সহায় ও সঙ্গী। বাচাল, ভন্ড, ধর্মব্যাবসায়ীরা, মিথ্যাবাদী, সত্য গোপনকারী, অন্ধ দলীয় সমর্থকরা আমার ঘৃনার পাত্র।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কিংস পার্টি গঠনের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। বিশেষ করে বিএনপির দলত্যাগী নেতাদের ওই দলে ভেড়াতে 'টোপ' দেওয়া হলেও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের এতে ডাকা হয়নি। তবে এমন কোনো দল গঠনের উদ্যোগে সমর্থন ছিল জামায়াত নেতাদের।
এ ছাড়া তখন বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্ব। উইকিলিকসে প্রকাশ করা ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বার্তায় এমন কথা বলা হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস তাঁর বিদায়ের আগে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, আবদুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন। তখন আলোচনায় থাকা কিংস পার্টি ও বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক ও মনোভাব তুলে ধরে ২০০৭ সালের ১৭ জুন রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে ওই বার্তা পাঠান।
বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশে 'বন্ধুত্বপূর্ণ' অবস্থানের কারণে মতিউর রহমান নিজামী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাষ্ট্রদূত ভালো কিছু স্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। এ সময় নিজামী আলোচনা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যেকোনো সমস্যা সমাধানে তাঁর দলের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অন্যতম উন্নয়নসঙ্গী এবং আমরা সবসময় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করি।
বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মতামত জানতে চাওয়া হলে নিজামী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করা, রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নির্বাচনের সূচি ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর তেমন কিছু বলা বা করার নেই।
সাবেক সহযোগী দল বিএনপির সঙ্গে সম্প্রতি সৃষ্ট দ্বন্দ্বের উল্লেখ করে নিজামী তাঁদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করে এ ব্যাপারে তাঁদের ধীরে চলার নীতি অনুসরণের কথা জানান।
রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে বড় দলগুলোর হিংসাত্মক রাজনীতি ও দুর্নীতিগ্রস্ততার কারণে জামায়াতে ইসলামীর মতো ছোট দলগুলো লাভবান হবে_রাষ্ট্রদূতের কাছে এমন মতামত প্রকাশ করেন নিজামী। রাষ্ট্রদূত এ সময় জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের সহিংস কর্মকাণ্ডের কথা তুললে নিজামী কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, তাঁর দল রাজতন্ত্রভিত্তিক শাসনের চর্চা করে না, বরং তাঁর দলের ভেতর যথেষ্ট গণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে।
নিজামী দাবি করেন, সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় কিংস পার্টি গড়ে তোলার ব্যাপারে তাঁদের কাছে সরাসরি কোনো তথ্য নেই।
এ সময় মুজাহিদ যোগ করেন, তাঁদের দলের নেতারা এতটাই সৎ যে, এমন কোনো দলে যোগ দিতে তাঁরা আগ্রহী হবেন না। মুজাহিদ বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নিয়ে গড়ে তোলা কোনো দল আমাদের জন্য হুমকি। এ সময় নিজামী যোগ করেন, বাংলাদেশে সেনা-সমর্থিত আগের দুটি শাসনের (জেনারেল আইয়ুব খান ও এরশাদ) অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজামী বলেন, 'আমরা তৃতীয় এই দলের সাফল্য কামনা করি। অন্যথায় নির্বাচন বিলম্বিত হবে।
'
সূত্র: উইকিলিকস বার্তা-৩০/০৮/২০১১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।