দল মত ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে আমরা আত্মসুদ্ধির মাধ্যমে প্রো-একটিভ সৎ সহনশীল উদার সমমর্মী সৃজনশীল কর্মঠ সময়ানুবর্তী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়োগে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরিত হবো। দেশকে ভলোবাসবো। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ জাতির অন্তর্ভূক্ত হবো। ভালো থাকার নামই সুস্বাস্থ্য। আর এ ভালো থাকা হতে হবে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক।
এজন্যে প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা ও ব্যায়ামসহ শরীরের যথাযথ যত্ন। প্রয়োজন পুষ্টিবিজ্ঞানসম্মত খাবার যা মেদ নয়, বাড়াবে কর্মশক্তি। যা রোগগ্রস্ত না করে ভেতর থেকে ঘটাবে রোগমুক্তি। প্রাকৃতিক পুষ্টি পূরণ করবে দেহের সকল ঘাটতি। গড়ে তুলবে কমনীয় সুঠাম স্বাস্থ্য।
র নামই সুস্বাস্থ্য। আর এ ভালো থাকা হতে হবে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক। এজন্যে প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা ও ব্যায়ামসহ শরীরের যথাযথ যত্ন। প্রয়োজন পুষ্টিবিজ্ঞানসম্মত খাবার যা মেদ নয়, বাড়াবে কর্মশক্তি। যা রোগগ্রস্ত না করে ভেতর থেকে ঘটাবে রোগমুক্তি।
প্রাকৃতিক পুষ্টি পূরণ করবে দেহের সকল ঘাটতি। গড়ে তুলবে কমনীয় সুঠাম স্বাস্থ্য।
সুস্বাস্থ্যের কোয়ান্টাম ভিত্তি
নবীজী (স.) বলেছেন, সুস্বাস্থ্য স্রষ্টার সবচেয়ে বড় নেয়ামত। আর কয়েকটি ছোট ছোট পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা অনায়াসে সুস্বাস্থ্যের অধিকার হতে পারে। সুস্বাস্থ্যের কোয়ান্টাম ভিত্তি হচ্ছে ৫টি।
এই ৫টি ভিত্তিকে ব্যবহার করে আমরা অনায়াসে জীবনকে সুস্বাস্থ্যের নতুন ছন্দে ছন্দায়িত করতে পারি।
দম
দম হচ্ছে জীবনের মূল ছন্দ। এই দমই শরীরের বাকি সকল ছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করে। সঠিক ও পরিপূর্ণ দম প্রতিটি জীবকোষকে প্রকৃতির ছন্দে ছন্দায়িত করে। আর বুক ফুলিয়ে দম নেয়ার মাধ্যমেই আমরা পরিপূর্ণ দম নিতে পারি।
বুক ফুলিয়ে দম নেয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে দিনে ৫ দফা ১৯ বার করে দম নিন। বুক ফুলিয়ে দম নেয়ার ক্ষেত্রে দম নাক দিয়ে নেবেন, বুক ফুলবে, মুখ দিয়ে ছাড়বেন। প্রথমবার ধীরে ধীরে নাক দিয়ে দম নিয়ে বুক ফোলাতে থাকুন। বুক পুরো ফুলে গেলে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে দম ছাড়ুন। দম ছেড়ে মনে মনে গুণুন :।
আবার একইভাবে দম নিয়ে দম ছেড়ে গুণুন : দুই। এভাবে উনিশ পর্যন্ত গুনে দম নেয়া শেষ করুন। সারাদিনে এরকম ৫ দফা দমের চর্চা করলে আপনার দেহের প্রতিট কোষ পর্যাপ্ত অক্সিজেন লাভ করবে। আপনি প্রাণবন্ত ও প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠবেন। বহুক্ষণ একনাগাড়ে কাজ করতে পারবেন।
সহজে ক্লান্ত ও অবসন্ন হবেন না।
আহার
দমের পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আহার। সবসময় সুপাচ্য সহজ খাবার গ্রহণ করবেন। অতিরিক্ত মশলা, তেল, ঝাল ও ভাজাপোড়া বর্জন করবেন। খাবারের ব্যাপারে তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম, কী খাবেন? দ্বিতীয়ত, কতটা খাবেন, তৃতীয়ত, কখন খাবেন?
কী খাবেন?
সবকিছু খাবেন। যা কিছু আপনার ধর্মবিশ্বাস ও আপনার রুচি অনুমোদন করে, তা সবই খাবেন।
কোয়ান্টাম খাবার
প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারই কোয়ান্টাম খাবার। দৈনন্দিন খাবার তালিকায় মাছ, গোশ্ত-এর পরিমাণ সীমিত, ডাল পরিমিত এবং শাক-সবজি পর্যাপ্ত থাকা উচিত। বাঁধাকপি, ডাঁটা, লালশাক, পুঁইশাক, সজনে ও আঁশ জাতীয় সব্জি পর্যাপ্ত থাকা উচিত।
শীতকালে নিয়মিত পালংশাক, ব্রোকোলি ও গাজর খান।
পুষ্টির জন্যে নিয়মিত এক চা চামচ মধু, এক গ্লাস দুধ, একটি ডিম খান।
শাক-সব্জি অতিরিক্ত সিদ্ধ না করে আধাসিদ্ধ খান। প্রতিদিন খাবারে সালাদ খান। সালাদে লেটুস, টমেটো, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, গাজর, শশা, রেড ক্যাবেজ, ক্যাপসিকাম ব্যবহার করুন।
নিয়মিত দই খান। তবে মিষ্টি দই খাবেন না। সাধারণ চিনি ছাড়া দই (ইয়োগার্ট) খাবেন।
প্রতিদিন খাবারে ডাল রাখুন। মসুরি, মুগ, মাশ, বুট মটর, অডহর ডাল এক সাথে মিশিয়ে রান্না করুন।
প্রতিদিন সকালে উঠে এক মুঠি ভিজানো কাঁচা ছোলা, এক টুকরো আদা ও এক চিমটি বিটলবণসহ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় লিটার বা ৬ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মৌসুমী ফল সবসময় পর্যাপ্ত খাওয়া উচিত। যে মৌসুমে যে ফল হয়, তা সে মৌসুমের রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। আম, কাঁঠাল, কলা, কুল, পেয়ারা, আমরা, আনারস, চালতা, জাম্বুরা, আমলকি অর্থাৎ দেশীয় ফল প্রচুর পরিমাণে খাবেন।
ফ্লু বা ভাইরাস জ্বরের আক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই বাজারে আনারাস চলে আসে। তখন পরিমিত আনারস খেলে ফ্লু আক্রমণ করা সুযোগ পায় না। সেজন্যেই বলা হয়, মৌসুমের ফলের মধ্যেই মৌসুমের রোগের দাওয়াই রয়েছে। যাদের ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা বেশি তারা শীত আসার একমাস আগে থেকে প্রতিদিন একটি মাঝারি সাইজের জাম্বুরার অর্ধেক খেলে ঠাণ্ডা-সর্দি থেকে অনায়াসে রেহাই পেতে পারেন।
খাবারের ব্যাপারে বিশ্বের সচেতন মানুষেরা এখন প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
পাশ্চাত্য স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ এখন টিনজাত, প্রক্রিয়াজাত ও পরিশোধিত খাবারের বদলে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, ‘প্রক্রিয়াজাত খাবার বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি এমন কি ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হচ্ছে। তাই ময়দার পরিবর্তে লাল আটা খাবেন। চিনির পরিবর্তে গুড় খাবেন। দুধ-চায়ের পরিবর্তে গুড় দিয়ে হালকা রঙ-চা খাবেন।
টিনজাত খাবার পুরোপুরি বর্জন করবেন। ফলের রসের পরিবর্তে টাটকা ফল খাবেন। গুঁড়ো দুধ পুরোপুরি বর্জন করবেন। গরুর খাঁটি দুধ প্রতিদিন এক গ্লাস করে খাবেন। হরলিক্স, ওভালটিন ইত্যাদি তথাকথিত পুষ্টিকর খাবার পুরোপুরি বর্জন করে পুষ্টির জন্যে নিয়মিত দুধ, কলা, ডিম খাবেন।
মিষ্টি খাবেন না। বিশেষত রঙিন মিষ্টি পুরোপুরি বর্জন করবেন। কারণ খাবারে যে রঙ ব্যবহার করা হয়, তা ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
তথাকথিত কোমল পানীয় এবং এনার্জি ড্রিংকস পান করবেন না। কারণ এই পানীয়ের মধ্যে নেশা রয়েছে।
আর এই তথাকথিত কোমল পানীয় ডায়াবেটিস এবং কিডনী ও মূত্রব্যাধির কারণ। কোমল পানীয়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের দেশের বিশিষ্ট কিডনি ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার সিরাজ জিন্নাত ১৯৯৪ সালের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের আলোচনা সভায় সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেছেন। কোমাল পানীয় আপনার কিডনি ও মূত্রাশয়ের জন্যে অত্যন্ত কঠিন প্রমাণিত হতে পারে তাই কোমল পানীয়ের পরিবর্তে সবসময় ডাব খাবেন। ডাবের পানিতে ১৯টি প্রাকৃতিক খনিজ দ্রব্য রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। ডাব পাওয়া না গেলে লেবুপানি খান।
কতটুকু খাবেন?
সবসময় পরিমিত খাবার খাবেন। বেশি খেলে আপনার রোগ ব্যাধি বেশি হবে। । এ ব্যাপারে নবীজীর (স.) একটি হাদিস আমরা অনুসরণ করতে পারি। তিনি বলেছেন, তুমি তোমার পাকস্থলীর এক-তৃতীয়াংশ খাবার ও এক-তৃতীয়াংশ পানীয় দ্বারা পূর্ণ কর।
আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখো। দীর্ঘ নিরীক্ষায় দেখা গেছে যে, এভাবে খাবার গ্রহণ করলে পাকস্থলীর ব্যাধি থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকা যায় এবং শরীরের ওজন সবসময় নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কখন খাবেন?
সকালবেলা ভরপেট নাশতা করুন, দুপুরে তৃপ্তির সাথে খান এবং রাতে খুব হালকা খাবার গ্রহণ করুন।
ব্যায়াম
আহারের পর আসে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার প্রযোজনীয়তা। ব্যায়ামের মধ্যে যোগব্যায়াম বা কোয়ান্টাম ব্যায়াম হচ্ছে সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম।
এরপরই হচ্ছে হাঁটা। প্রতিদিন ২৫/৩০ মিনিট ব্যায়াম করা বা হাঁটা প্রয়োজন। হাঁটলে ঘণ্টায় ৪ মাইল গতিতে হাঁটতে হবে।
হজম
যা খেলেন তা হজম হওয়া প্রয়োজন। খাবার হজম না হলে খেয়ে লাভ কী! আর হজমের সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের কারণটা শারীরিক নয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানসিক। কারণ পাকস্থলীতে যে এসিড উৎপন্ন হয় তাতে লোহা দিয়ে দিলে লোহা গলে হজম হয়ে যাবে। এই এসিড এত শক্তিশালী যে, পাকস্থলী যাতে নিজেই হজম না হয়ে যায়, সেজন্যে প্রতি ৫ দিনে পাকস্থলীর আবরণ বদলে যায়, তাই খাওয়ার আগে সবসময় বলবেন, ‘যা খাবো মজা করে খাবো, যা খাবো সব হজম হবে। ’ তাহলেই দেখবেন হজম খুব ভালো হচ্ছে।
রেচন
শরীরের বর্জ্য বসু্ত শরীর থেকে সবসময় বের করে দিতে হবে।
শারীরিক সুস্থতার এটা হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তাই যাদের কোষ্টকাঠিন্য আছে তারা প্রচুর শাক ও আঁশযুক্ত সবজি খাবেন। এতে অন্ত্রের ক্যান্সার থেকেও আপনি রেহাই পাবেন। আর পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। সবসময় স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করবেন গরম পানিতে কখনও গোসল করবেন না।
এ ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ হচ্ছেন ডা. কাক্কার। তিনি উনিশ বছরের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে, গরম পানিতে গোসল করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, আর ঠান্ডা পানিতে গোসল দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শীতকালেও স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা উচিত। পানি বেশি ঠান্ডা হলে তাতে কিছু গরম পানি মিশিয়ে পানির ঠান্ডা ভাবটা কমানো যেতে পারে। কিন্তু তারপরও খেয়াল রাখতে হবে যেন পানির তাপমাত্রা শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে কম থাকে।
সুস্বাস্থ্যের জন্যে এ ৫টি ধাপ অনুসরণ করুন। আপনি এক প্রাণবন্ত শরীরের অধিকারী হবেন।
সূত্র: কোয়ান্টাম মেথড http://quantummethod.org.bd ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।