আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবীর কক্ষপথে জঞ্জাল বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি

পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা জঞ্জালের ব্যাপারে নাসাকে সতর্ক করেছে বিজ্ঞানীরা। এসব জঞ্জাল যেকোনো সময় মহাকাশযানে আঘাত হেনে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। খবর বিডিনিউজের। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এসব জঞ্জাল যেকোনো সময় কোনো মহাকাশযানে ছিদ্র সৃষ্টি করার পাশাপাশি কৃত্রিম উপগ্রহকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের চৌম্বক জাল ও বৃহৎ ছাতা আকৃতির যন্ত্রাংশ মহাকাশে পাঠানোর ব্যাপারে আন্তর্জাতিক নীতিমালা এবং এসবের উপযুক্ত ব্যবহারের বিষয়ে আরো গবেষণা চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

এসব জঞ্জালের মধ্যে রয়েছে মহাকাশে ফেলা আসা অতি ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে পুরনো রকেটের বুস্টার ও কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটালাইট) পর্যন্ত বিভিন্ন আকার ও আকৃতির বস্তু। সংস্থাটি জানায়, কম্পিউটারের মাধ্যমে পাওয়া কিছু চিত্রে দেখা গেছে যে কক্ষপথে এসব জঞ্জাল এতো বেশি পরিমাণে জমেছে যে, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে তারা আরো খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশে জঞ্জাল কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা শুরু হলেও তা সফল না হওয়ার পিছনে দুটি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০০৭ সালে চীন একটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এতে একটি আবহাওয়া স্যাটেলাইট বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত দেড় লাখ খণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিটি খণ্ডের আকার ১ সেন্টিমিটার বা তার কাছাকাছি। এর দুই বছর পর মহাকাশে একটি সচল এবং অপর একটি অচল স্যাটেলাইট বিধ্বস্ত হয়। এতে জঞ্জালের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। এ গবেষণার প্রধান ডোনাল্ড কেসলার বলেন, এ দুটি ঘটনাতেই কক্ষপথে গত ২৫ বছরে যা জঞ্জাল জমেছিলো তা দ্বিগুণ হয়েছে। কক্ষপথে প্রায় ২২ হাজার বৃহৎ আকারের জঞ্জাল ছড়িয়ে আছে, তবে ক্ষুদ্র কোনো অংশ থেকেও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনকেও মাঝে মাঝে কিছু জঞ্জালের সাথে সংঘর্ষ হওয়া থেকে রক্ষা করতে হয়। এগুলোর গতি কখনো কখনো ঘণ্টায় ২৮ হাজার ১৬৪ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। গত জুনে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এধরনের কিছু জঞ্জালের সাথে সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ওই সময় স্টেশনটিতে অবস্থানরত ছয় মহাকাশচারী পৃথিবীতে জরুরি অবতরণের জন্য প্রস্তুতি পর্যন্ত নিয়ে ফেলেন। কেসলার বলেন, পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক।

কারণ সংঘর্ষের ফলে জঞ্জালের সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। এতে আমরা সেখানকার পরিবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। এ প্রতিবেদনে নতুন কোনো সুপারিশ না করা হলেও পেন্টাগনের ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সির (ডারপা) বিজ্ঞানীদের দেওয়া একটি সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ডারপা’র বিজ্ঞানীরা এসব জঞ্জাল সরিয়ে আনার জন্য হারপুন, জাল ও ছাতাআকৃতির কিছু প্রযুক্তির সাহায্যে ‘ক্যাচার্স মিট’ নামে একটি যন্ত্রের কথা বলেন। এর সাহায্যে জঞ্জালগুলো টেনে আরো দূরের নিরাপদ একটি কক্ষপথে ছেড়ে দিয়ে আসার কথা বলা হয়।

অথবা পৃথিবীর আরো কাছাকাছি নিয়ে আসার কথা বলা হয়, যাতে বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে এগুলো পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.