আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমকে উৎসর্গ করা একটি ব্লগ পোস্ট!!!...

blog_id: 85969 আমীর আল-মুমীনীন আব্দুল্লাহ ইবন আবু খুহাফা আল আবু বকর-এর ওফাত দিবস-এ... সামান্য এক নাস্তিক-এর... শ্রদ্ধাঞ্জলি... >>> >>> >>> 'দুনিয়াতে আমি প্রত্যেক মানুষের এহসানের পরিপূর্ণ বদলা আদায় করেছি কিন্তু সিদ্দিকে আকবরের ত্যাগের প্রতিদান আদায় করতে পারিনি। হাশরের ময়দানে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে ওই প্রতিদান দান করবেন। ' ---রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)... রওজা সমূহ... বাম থেকেঃ... মুহাম্মদ (সাঃ.)... আবু বকর (রাঃ.)... ওমর (রাঃ.)... আজ ২৩ অগাষ্ট... নবীদের পর... উম্মতকুলে... সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা সর্বোচ্চ বলেই বিবেচিত হয়... আর... সেই সাহাবিদের মধ্যে... যাঁর নাম অগ্রগণ্য... সে-ই... হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)... -এর ওফাত দিবস... পুরো নামঃ আবদ-আল্লাহ ইবন উতমান ইবন আমির ইবন আমর ইবন ক্বা’ব ইবন সা’দ ইবন তামিম ইবন মুররাহ ইবন ক্বা’ব ইবন লু’আই ইবন গালিব ইবন ফিহর আল-কুরাইশী আত-তামিমী... সংক্ষেপেঃ আব্দুল্লাহ ইবন আবু খুহাফা... ডাক নামঃ আব্দুল্লাহ (ইসলাম পূর্ব-যুগে)... এবং... আবু বকর (ইসলাম পরবর্তী-যুগে)... উপাধীঃ আতিক (ইসলাম পূর্ব-যুগে)... এবং... সিদ্দিকী (ইসলাম পরবর্তী-যুগে)... পিতাঃ উতমান আবু খুহাফা (সংক্ষেপেঃ আবু খুহাফা)... মাতাঃ সালমা উম-মুল-খায়ের (সংক্ষেপেঃ উম-মুল-খায়ের)... বংশ ও গোত্রঃ কোরাইশ বংশের বানু তাইম গোত্র... জন্মঃ ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দ (তারিখ অজ্ঞাত)... মদীনায় অবস্থিত আবু বকর (রাঃ.)-এর ঘর... আবু বকর নামের উৎস... শিশুকালে অন্যান্য ধনী পরিবারের সদস্যদের মতো তার বাল্যকাল-ও কাটে বেদুইন পরিবারে... সেখানে তিনি উটের শাবকদের সাথে খেলা করতে খুব ভালো বাসতেন... যার ফলে তাকে ডাকা হতো “আবু বকর”... উষ্ট্র শাবক-এর পিতা... মুহাম্মদের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ... ৫৮৩ খ্রীস্টাব্দে... বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে বহর ইনয়ে পিতার সাথে সিরিয়ায় যাওয়ার সময়... ১০ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ-এর সাথে প্রথম পরিচয় হয় ইবন আব্দুল্লাহ-এর... যিনি তার চাচা আবু তালিব-এর সাথে উক্ত সফরে গমন করছিলেন... আল কোরআন-এ আবু বকর... “যদি তোমরা তাকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহ তো তাকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফেরগণ তাকে বহিষ্কার করেছিল এবং সে ছিল দুইজনের দ্বিতীয়জন, যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিল, সে তখন তার সাথীকে বলেছিল, বিষণ্ন হয়ো না, আল্লাহতো আমাদের সাথে আছেন। ” (৯ : ৪০) হাদিস-এ রাসুল-এ আবু বকর... ১. হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, “আমার উম্মতের মাঝে আবু বকরই বেশি দয়ালু”... ২. নবী করিম (সাঃ) বলেন, “বন্ধুত্ব ও সাহায্য আবু বকরই আমাকে বেশি করেছিলেন। ইহজগতে যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বকরকেই করতাম”... ৩. একদিন রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) হযরত আবু দারদা (রাঃ) কে হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর আগে আগে চলতে দেখে সতর্ক করে বললেনঃ “তুমি কি এমন ব্যক্তির আগে আগে চলো, যিনি ইহকাল ও পরকালে তোমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ?” তিনি আরো বলেনঃ “দুনিয়ায় এমন কোনো ব্যক্তির ওপর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়নি, যে পয়গম্বরদের পর হজরত আবু বকর থেকে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ”... (রূহুল বয়ান)... ৪. একবার রাসুল করীম (সাঃ) হযরত উমরকে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “আপনি স্বীয় পরিবারের জন্য কি রেখে এসেছেন?” তিনি উত্তরে বলেছিলেনঃ “উহারই ন্যায় (আমার পূর্ণ সম্পত্তির) অর্ধেক”... হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে বললেনঃ “আপনি স্বীয় পরিবারের জন্য কি রেখে এসেছেন?” হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ “আল্লাহ এবং তার রাসুলকে”... তখন নবী করীম (রাঃ) বললেনঃ “আপনাদের পদমর্যাদা আপনাদের উত্তরের ভেতরই নিহিত”... আবু বকর(রাঃ.)-এর তরবারী... ব্যক্তি আবু বকর... তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও সত্যনিষ্ঠ... একবার এক ব্যক্তি তাকে গালি দিলে তিনি জবাবে বলেছিলেনঃ “যদি তুমি সত্যবাদী হও এবং আমি অপরাধী ও মন্দ হই, তাহলে আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করেন।

পক্ষান্তরে যদি তুমি মিথ্যা বলে থাকো তাহলে আল্লাহ যেন তোমাকে ক্ষমা করেন”... (কুরতুবি)... খলিফা আবু বকর... মুহাম্মদ-এর ওফাত-এর পর... খলিফা নির্বচিত হয়ে... সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি যে ভাষণ প্রদান করেন... স্বচ্ছতা, প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে আজো প্রতিভূত হয়... “ভাইসব, তোমরা আমাকে তোমাদের আমীর বা নেতা নির্বাচন করেছ। কিন্তু আমি তোমাদের চেয়ে উত্তম নই। আমি ভাল করলে তোমরা আমাকে সহযোগিতা করবে। মন্দ কাজ করলে আমাকে বারণ করবে। সত্য হচ্ছে আমানত মিথ্যা হচ্ছে খেয়ানত।

তোমাদের দুর্বল লোকটি আমার নিকট শক্তিশালী, যতক্ষণ না তার ন্যায্য প্রাপ্য আমি তাকে প্রদান করতে পারি। তোমাদের নিকট শক্তিশালী লোকটি আমার নিকট দুর্বল, যতক্ষণ না তার নিকট থেকে প্রাপ্য আদায় করতে পারি। যে জাতি আল্লাহর পক্ষে জিহাদ বন্ধ করে দেয়, আল্লাহ তার ওপর অপমান চাপিয়ে দেন। যে জাতির মধ্যে নির্লজ্জতা ছড়িয়ে পড়ে, আল্লাহ তার উপর বিপদ-আপদ ও শাস্তি ব্যাপক করেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুগত থাকব, তোমরা আমার প্রতি অনুগত থাকবে।

আল্লাহ এবং তার রাসুলের অবাধ্যতামূলক কোন কাজ যদি আমার দ্বারা হয়, আমার অনুগত থাকা তোমাদের উপর বাধ্যতামূলক নয়”... আবু বকর (রাঃ.)-এর সময় মুসলিম বিশ্বের পরিধি... মৃত্যু... মুসলিম জাহানের চার খলিফার মধ্যে... একমাত্র হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর মৃত্যুই স্বাভাবিক-ভাবে হয়েছিলো... হযরত আবু বকর (রাঃ) কামনা করেছিলেন রাসুল (সাঃ)-এর মৃত্যু দিবস যেন তার-ও মৃত্যু দিবস হয়... ঠাণ্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে... হিজরী ১৩ সনের জমাদ-উল-সানী মাস-এর ২২ তারিখ রোজ “সোমবার” (২৩ অগাষ্ট ৬৩৪ খ্রীস্টাব্দ)... দিবাগত রাতে... ৬২ বছর বয়সে... তিনি তার কামনাকেই চরিতার্থ করেছেন... মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর রওজা মুবারক-এর পাশেই তাকে দাফন করা হয়... আবু বকর (রাঃ.)-এর রওজার গেট... ... ... ... ... ... ... ... ... ... দু’টি গল্প-কথা দিয়ে লেখাটি শেষ করি... প্রথম ঘটনা... রাসূল (সাঃ) বলেছেন, কেউ যখন মুসলমানদের কোন কাজের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়ে দায়িত্বে অবহেলা করে, তাদের প্রয়োজন ও অভাব সম্পর্কে উদাসীন থাকে তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহও তার প্রতি উদাসীন থাকবেন এবং তার অভাব ও প্রয়োজনের ব্যাপারে অমনোযোগী থাকবেন। -আবু দাউদ, ইবনে মাজা হযরত আবু বকর (রাঃ) মুসলিম জাহানের প্রথম “আমিরুল মুমেনিন” বা বিশ্বাসীদের নেতা নির্বাচিত হলেন। নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে তিনি কাপড়ের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন; আমিরুল মুমেনিন নির্বাচিত হওয়ার পরও প্রতিদিনের মতো তিনি রুটি রুজির আশায় কিছু কাপড় হাতে ঝুলিয়ে বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। বাজারের কাছেই দেখা হয় ওমর ফারুক (রাঃ) এর সাথে। আমিরুল মুমেনিন শুধু বিশ্বাসীদের নেতাই নন, সারা মুসলিম জাহানের শাসনকর্তা।

মুসলিম বিশ্বের শান্তি শৃংখলা, নিরাপত্তা, অন্ন, বস্ত্র বাসস্থানসহ মৌলিক প্রয়োজন পূরণের নিশ্চয়তা বিধানের গুরু দায়িত্ব তার কাঁধে। আ’মিরুল মু’মেনিন যদি নিজের রুটি রুজির জন্য বাজারেই সময় কাটাবেন তবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজের তদারকি করবে কে? তাই হযরত ওমর (রাঃ) তাকে নিয়ে গেলেন হযরত আবু ওবায়দার (রাঃ) কাছে, বায়তুলমালের দায়িত্ব তার হাতে। আ’মিরুল মু’মেনিনের জীবিকা নির্বাহে ভাতা নির্ধারণ করে দিলেন তিনি। মদীনার সাধারণ মুহাজির যতটুকু ভাতা পান রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে, রাষ্ট্রের প্রধানের পরিবারের ক্ষুধা নিবারণে ঠিক ততটুকুই নির্ধারিত হলো বায়তুল মাল থেকে। আমিরুল মুমেনিনের ভাতা ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্যই যেখানে পর্যাপ্ত নয়, মন চাইলেই তো আর সেখানে পিঠা পায়েস খাওয়ার সুযোগ মেলে না।

তবুও আমিরুল মুমেনিনের বেগমের ইচ্ছে প্রাণপ্রিয় স্বামীকে কিছু মিষ্টান্ন তৈরী করে খাওয়াবেন। অনেক দিন থেকেই অল্প অল্প করে আটা আলাদা করে রাখেন তিনি, পর্যাপ্ত পরিমাণে জমলেই পিঠা বানাবেন। অবশেষে ঠিকই পিঠা তৈরী হয়। পিঠা হাতে অবাক বিস্ময়ে আমিরুল মু’মেনিন তাকান বেগমের পানে। কোথা থেকে এলো পিঠে, কোথা থেকে এলো পিঠে তৈরীর উপায় উপকরণ? যেটুকু ভাতা মেলে বায়তুলমাল থেকে তাতে তো কোন বেলায় ঠিক মতো পেটই ভরে না তার।

আবু বকরের (রাঃ) পেরেশানী বুঝতে পারেন বেগম, বলেন, তিল তিল করে পিঠা তৈরীর উপকরণ জমানোর কথা। তবু শান্ত হয় না আমিরুল মু’মেনিনের মন। বিশ্বাসীদের নেতা হয়ে যদি তিনি বায়তুল মালের ভাতায় পিঠা পায়েস খেয়ে বেড়ান তবে কি জবাব দেবেন তিনি প্রিয় বন্ধু রাসুল (সাঃ) এর কাছে? কি করে দাড়াবেন তিনি মহান প্রভূ আল্লাহর দরবারে? নিত্যদিনের খাওয়া দাওয়ার পরেও যেটুকু তিল তিল করে জমা করেছেন পিঠা তৈরীর আশায়, সে বাড়তি ভাতা ছাড়াই তো তবে চলতে পারে তার সংসার। তবে কেন আমিরুল মুমেনিন হয়েও তিনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভাতা নেবেন? আমিরুল মু’মেনিনের দায়িত্ব কুসুমাস্তীর্ণ নয়, নয় এ দায়িত্ব আরাম আয়েশ আর পিঠা পায়েশের। পরবর্তী মাস থেকেই তাই কমিয়ে নিলেন তার ভাতা।

দ্বিতীয় ঘটনা... শরহুল আকায়িদ গ্রন্থানুসারে, “সাহাবায়-এ কিরাম-গণ, সমলোচনার বাহিরে; তাঁদের দোষ বর্ণনা করা হারাম ও গুনাহ-এ-কবীরাহ... (পৃ. নং. ৩৫২)... বিপরীতে মাওলানা মওদুদী বলেনঃ... “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য ইহা যদি জরুরী মনে করা হয় যে কোন ভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলউৎপাটন এর জন্য জামাতে ইসলামির জন্ম”... (তরজুমানুল কুরআন; ৩৫শ’ সংখ্যা, পৃ. নং. ৩২৭)... এবং... এর সূত্র-ধরে মাওলানা মওদুদী হযরত আবু বকর সম্বন্ধে বলেনঃ... ১. “হযরত আবু বকর (রাঃ) দুর্বলমনা ও খেলাফতের দায়িত্ব বহনে আযোগ্য ছিলেন”... (তাজদিদ ও ইহয়ায়ে দ্বীন; পৃ. নং. ২২)... ২. “নবী করীম (সঃ) এর ওফাতের সময় ব্যাক্তি সম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ)কে পরাভূত করেছিল”... (তরজুমানুল কুরআন; প্রকাশ কালঃ রবিঃ সানিঃ ৩৫৭হিঃ)... ... ... ... ... ... ... ... ... ... সূত্র... উইকি-তে... আবু বকর-এর জীবনী... আবু বকর ও সুন্নাহ... আবু বকর. অরগ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... উৎসর্গ... আমার অর্ধাঙ্গীনী-কে... যদি ধর্ম-আল্লাহ-কোরআন-মুহাম্মদ-বেহেস্ত-দোযোখ সত্য হয়... আরাফাহ-এর হাশর-এ সেই শেষ বিচারের দিন... যে “আমাকে” কামনা করলে মহান আল্লাহ তাঁর ওয়াদা পূরণের জন্য কি করবেন তা ভেবেই আশ্চর্য্য হই!!!... >>> >>> >>> আমার কথাঃ মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.