আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃদুল কান্তির পরিবারকে ৫০ লাখ টাকার চেক প্রদান ও ল্যাবএইডের দুঃখ প্রকাশ

লোকসংগীত গবেষক, শিল্পী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক মৃদুল কান্তি চক্রবর্তীর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে মৃতের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকার চেক প্রদান করল ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। মৃদুল কান্তির মৃত্যুর কারণ হিসেবে ল্যাবএইড হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাকে দায়ী করে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী ব্যাপক আন্দোলনের মুখে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ এ চেক প্রদান করল। শিক্ষার্থীদের অপর দুটি দাবি_ ঘটনার দায় স্বীকার করে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষকে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং দোষী ডাক্তারের নাম প্রকাশ করে হাসপাতাল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের প্রথম দাবি ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও অপর দুই দাবির বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই বলেনি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সব দাবি বাস্তবায়ন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ল্যাবএইড চত্বর ঘেরাওসহ লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট পালন করবেন।

মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করেন। ওই দিন তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল এবং ল্যাবএইড হাসপাতাল ঘেরাও করেন। আন্দোলনের মুখে সেদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ল্যাবএইডের পরিচালক মাহবুবুল হক ও এমরান চৌধুরী। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ঘটনা তদন্তের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এদিকে গতকাল ৩টায় ক্ষতিপূরণের ব্যাপরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের আলোচনা শুরু হয়।

দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ল্যাবএইডের পরিচালক মাহবুবুল হক ৫০ লাখ টাকার একটি চেক সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকলিমা ইসলাম কুহেলীর কাছে হস্তান্তর করেন। আলোচনা চলাকালে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে দাবি আদায়ে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কে এম সাইফুল ইসলাম চেক প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে চেকের টাকা ৬ সেপ্টেম্বর উঠানো যাবে। এর আগে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ব্যাখ্যায় রাজধানীর দুই বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাবএইড ও ইবনে সিনার শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করেন হাইকোর্ট।

বুধবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ ওই দুটি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের ২৩ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া একই বেঞ্চ বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় দ্রুত ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিশ্চিতে ১৪ দিনের মধ্যে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ওই কমিটি এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা তৈরি করবে। তলব করা কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মৃদুল কান্তির চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে ল্যাবএইড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পরিষদের সব সদস্য, ওই চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা দুই চিকিৎসক রয়েছেন। মৃদুল কান্তির ভাগ্নে নির্ঝর ভট্টাচার্য তার মামার মৃত্যু সম্পর্কে বলেন, '১৫ আগস্ট সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে মামাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হয়।

প্রথমে ভর্তিপ্রক্রিয়ার জন্য ২০-২৫ মিনিট দেরি করা হয়। এরপর কেবিনে নিতে দেরি করা হয় আরও ২০-২৫ মিনিট। মামা ডায়রিয়ার ফলে পানিশূন্যতায় ছিলেন। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শুরুতে জরুরি ভিত্তিতে স্যালাইন দেওয়ার কথা বলেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংগীতশিল্পী পরিচয় দেওয়ার পরও তারা প্রক্রিয়ার দোহাই দিয়ে সময় নষ্ট করেন।

তখন মামার অবস্থা গুরুতর হয়ে যায়। পরে স্যালাইন দিলেও কোনো কাজ হয়নি। ' ল্যাবএইডের প্রক্রিয়াগত বিলম্ব ও অবহেলার কারণেই শেষ পর্যন্ত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান বলে অভিযোগ করেন নির্ঝর। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।