শুক্রবার সকালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল বলেন, “লন্ডনে চিকিৎসাধীন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা জেনেছি। তার শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন। ’’
তারেক শিগগিরই রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নির্ভর করছে তারেকের ‘চিকিৎসকদের পরামর্শের’ ওপর।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে যান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানেই আছেন তিনি।
পাঁচ বছরের এই প্রবাস জীবনে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো তারেককে লন্ডনে দলের এক রাজনৈতিক সভায় দেখা যায়, যেখানে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগকে চাপ দিতে প্রবাসীদের আহ্বান জানান।
তারেকের ওই বক্তব্যের পর দেশে তার বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তারেকের তীব্র সমালোচনা করেন এবং দুদকের আবেদনে মুদ্রা পাচারের অভিযোগে এক মামলায় তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য পরোয়ানা জারি করে ঢাকার জজ আদালত।
যুক্তরাজ্যে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সুশাসন’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিতে সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে তারেকের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ওই বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের অবস্থা নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, “দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিয়েছি। রাজনীতির খবর জানতে চেয়েছেন, তা জানানো হয়েছে।
”
ওই বৈঠকে আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে- গণমাধ্যমের এমন খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “এটি সঠিক সংবাদ নয়। আমাদের গণমাধ্যম মাঝে মধ্যে মনের মাধুরী দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। আমি কোনো কাগজ নিয়ে নিয়ে তার কাছে যাইনি। ”
তারেকের স্ত্রী ডা. জোবাঈদা রহমান রাজনীতিতে আসবেন কি না জানতে চাইলে ‘তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই’ বলে বিষয়টি উড়িয়ে দেন ফখরুল।
‘লন্ডন সফর সফল’
বৃটিশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ হাউজ অব লর্ডসে ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ওই সেমিনারে অংশ নিতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলটি গত ১৫ জুলাই লন্ডনে যায়।
গত ১৭ জুলাই ওই সেমিনারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়, যার নেতৃত্ব দেন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
সেমিনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “এই সফর সফল হয়েছে। আর্ন্তজাতিক সেমিনারে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচনের ভবিষ্যৎ, সংখ্যালঘু পরিস্থিতি প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ”
আগামী নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে কেমন নির্বাচন হবে, তা নির্ধারণ করবে জনগণ। বৃটেন গণতন্ত্রের সূতিকাগার এবং তারা আমাদের একটি উন্নয়ন সহযোগী দেশ।
বিশ্ব জনমতের কাছে আমাদের দেশের রাজনীতি ও বর্তমান অবস্থা আমরা তুলে ধরেছি। ওই সেমিনারে আমরা নির্দলীয় সরকারের প্রাসঙ্গিকতা উপস্থাপন করেছি। ”
সরকার ‘বাস্তবতা’ উপলব্ধি করে সঠিক সময়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।
ফখরুলের লন্ডন সফরের মধ্যেই দেশে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদণ্ড এবং সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় আসে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “রায় নিয়ে কোনো কথা বলব না।
”
শুক্রবার সকালে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শাহ জালাল বিমান বন্দরেই লন্ডন সফর নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।