আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিধু’’র পথচলা

--হ্যালো.... ---হ্যাঁ বলুন শুনছি. --তোর মামী স্কয়ার হসপিটালে ---কেন --আর বলিস না, হসপিটালে গেল আলট্রা সনোগ্রাফি করাবে বলে, সেখানে হঠাৎ করেই প্রেশার হাই হয়ে যায় তখন তাকে ইমারজেন্সিতে নিয়ে যায় সেখানে ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে। তুই আসবি? ---নাহ এখন আছি প্রায় ডেমরার কাছাকাছি তবে কি হয় জানাবেন। --আচ্ছা ঠিক তক্ষুনি সিধু ফোন করলো লালমাটিয়ায় অবস্থান করা অণিমাকে। বললো তুই একটু স্কয়ার হসপিটালে যা সেখানে মরিয়ম বেগম নামে ইমারজেন্সিতে এক রোগীনি আছেন ওনার চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকিস। এই বলেই মোবাইলটা কেটে দিল সিধু।

অণিমা ওর কথা একটাও ফেলতে পারে না, ওকে ভালো লাগে ওর এই অদ্ভুত স্বভাবটার জন্যেই। তরিঘড়ি করে আসবার পথে শুধু মাস্টার কার্ডটা সাথে নেয় আর কিছু খুচরো টাকা। রিক্স্রা নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কেই নামে তারপর হাটা পথে হসপিটাল। সিধু, ভালো নাম ছিলো সিদরাতুল ইসলাম। তা আজ শুধু সার্টিফিকেটেই শোভায়।

যেহেতু তার চাকুরি কিংবা ব্যাবসা কিচ্ছ্যু নেই, ধানমন্ডির এক মেসের বাসিন্দা, তাই সে আজ শুধুই সিদ্ধার্থের সিধু। ডেমরা যায় শীতলক্ষ্যায় স্নান করে দেখবে আজো পাপ ধুয়ে যায় কি না। সে বিকেল পর্যন্ত বসে ছিলো কিন্তু যতবারই স্নান করবার উদ্যোগ নেয় ততবারই মনে হয় কি হবে শুদ্ধ হয়ে। সেইতো বাসে উঠতেই হবে আর টিকেট তো কেটেছিলাম কোথায় পড়লো বলে মিথ্যে বলা, মেসের একলা রুমে না খেয়ে তেলাপোকা্র সাথে সহবাস, অন্যের ধার করা শার্ট পড়া, ধার করে ফ্লেক্সি করা আরো কতোশত মিথ্যের সাথে শুদ্ধতায় কি হবে নমনীয় আত্মার মুক্তি? সে প্রশ্নের বেড়াজালে উত্তর খুঁজতে আনমনে হাটতে হাটতে নতুন করা ব্রিজটার উপর উঠে যায়, রেলিংটা ধরে দাড়িয়ে দেখছিলো যৌবনবতী শীতলক্ষ্যার রুপ। তখনই আবার গোঁ গোঁ করে ফোনটা বেজে উঠে......... কাজু মামার ফোন।

--হ্যালো ---হ্যাঁ বলুন মামা কি অবস্থা? --ঐ পরীটা কে রে? ---পরিচিত বন্ধু, কেন কি হয়েছে? --না কিছু না, ওকে আমার স্নেহটা দিয়ে দিস, আমায় এক বিরাট লজ্জ্বা থেকে বাঁচালো, আচ্ছা শোন আমি কাল তোর বাসায় আসবো, বাসায় থাকবি তো? ---ঠিক বলতে পারছি না, আচ্ছা দেখি কি করা যায়। ফোনটা রাখা মাত্রই আবার গোঁ গোঁ করে উঠলো....... অণিমার ফোন ---হ্যাঁ বল কি বলবি --ওনাকে রিলিজ করা হয়েছে, ওনার দু’মেয়ের সাথেই ছিলো, বিল হয়েছিল সাত হাজার তিনশো, বিলটা দিয়ে স্লিপটা ওনার মেয়ের কাছে দেয়া মাত্রই ওদের বাবা চলে আসে, আমাকে টাকা দিতে যেয়ে দেখে আছে হাজার পাঁচেক তাই আর নেইনি, বলেছি তোর কাছে পৌঁছে দিতে এই প্রান্তের সিধুর চোখটা বারবার ভিজে উঠছিলো আর ভাবছিলো সব বলাকারা কি ঠিক সময়ে ঘরে ফিরে সন্ধ্যার লালিমা গায়ে মেখে রাজহংসী গ্রিবায়? একজনও কি দলছুট হয়না, ডানাও কি ভাঙ্গে না,আহত হয়ে কি পড়ে যায় না কোন অজানা বনভূমে? হয়তো যায় আমি না হয় ডানা ভাঙ্গাই রইলাম, কি আর হবে সময়ের ক্ষয় ছাড়া? সিধু মন্ত্রমুগ্ধের মতো হেটে চলেছে কাঁচপুরের দিকে সেখান থেকে চিটাগাং এর বাসে উঠবে, সাগরের কাছে যাবে প্রনাম জানাতে। ঐ প্রান্তে অণিমা হ্যালো করেই যাচ্ছে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.