আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাননীয়া আপা আপনার মুখ আর ছাত্রলীগ সামাল দেন, ভরাডুবি রক্ষা পাবে।

লেখিতে এবং পড়িতে ভালবাসি। সবাই বলে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে, আস্তে আস্তে দেশ মধ্যম সারির উন্নয়নশীল রাষ্টে পরিণত হবে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও বেশী এগিয়ে গেছে। সবই আশার কথা, ভালো কথা, সুন্দর সম্ভাবনার কথা। দেশের মাথা পিছু আয় বাড়ছে, বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ছে, নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ছে, শিক্ষার হার হাড়ছে, নারী শিক্ষার হার বাড়ছে, স্বাস্থ্য সেবা বাড়ছে (এই ক্ষেত্রে আমার দ্বিমত আছে), শিশু মৃর্ত্যু হার কমছে, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঈর্ষানীয় সাফল্য আছে।

এই সব সাফল্য একদিনে বা সারে চার বছরে হয় না, এই গুলা ধারাবাহিক উদ্যোগের ফল। এইসব উন্নয়নের সূচক বর্তমান সরকারে আমলে উর্ধ্বমুখী বলে বর্তমান সরকার সব করেছে এমনটা যারা বলবে তারা আসলে অর্থনীতির চক্র বা উন্নয়নের ধারা বুঝে না। তারা দলীয় ভালোবাসায় অন্ধ বা একচোখা প্রজাতীর প্রাণী ছাড়া কিছু না। বাংলাদেশের যুমনা নদীর উপর "বঙ্গবন্ধু সেতু" উত্তর বঙ্গের উন্নয়নে বিশাল অবদান রেখেছে। যাতায়াত থেকে শুরু করে শিল্পায়নে রেখেছে যুগান্তকারী ভূমিকা।

এই সেতুটি এক সরকারে আমলে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে কাজ শুরু করেছে আরেক সরকার এসে কাজ সমাপ্ত করে উদ্বোধন করেছে, এখন কাকে এর কৃতিত্ব দিবেন। যে দল উদ্বোধন করলো, সে দলকে না যারা শুরু করেছিল সেই দলকে। আমি বলবো এটা সম্মিলিত প্রয়াস এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের উদাহরণ। এমন অনেক কাজ আছে যেটা সময়ের চলমান ধারায় চলতে থাকে এবং একটা সময়ে এসে এর ফল জনগণ ভোগ করে। যে আমলে এসে জনগণ ভোগ করলো সেই সরকার এর পুরো কৃতিত্ব নিতে যাওয়াটা অন্যায় এবং জনগণকে ধোঁকা দেয়ার সামিল।

উন্নয়ন একটি চেইনের মত। চেইনের একটি অংশ যদি ছিড়ে যায় তাহলে যেমন চেইনটির আর কার্যকারিতা থাকে না, তেমনি উন্নয়নের ধারা ব্যহত হলে মানুষ সুফল পায় না। মানুষকে উন্নয়নের সুফল দিতে হলে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের সড়ক এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নের স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের ভূমিকা কম নয়। তাঁর নয় বছরে দূর্নীতির পাশাপাশি কাজও হয়েছে অনেক।

তার সেই কাজের ধারাবাহিকতাই বজায় রেখেই পরবর্তী সরকার এগিয়ে নিয়ে গেছে। সেখানে ব্যার্থতা সফলতা দুটোই আছে। ঐ সময়ের সরকার যদি বলতো এরশাদ স্বৈরাচারী ছিলো, স্বৈরাচারের সব প্রজেক্ট বাদ, তাহলে আজকের বাংলাদেশ পাওয়া সম্ভব ছিলো না। তেমনি বিএনপি যতটুকুই উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার যদি বলতো সব বাদ, তাহলেও আজকের বাংলাদেশের পাওয়া সম্ভবপর ছিলো না। ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে বিএনপি যদি বলতো সব বাদ, তাহলেও বাংলাদেশ আজকের পর্যায়ে আসতে পারতো না।

সব কিছুই সব সময় শুরু থেকে আবার শুরু করতে হতো, দেশ এগিয়ে যাওয়ার থেকে পিছিয়েই যেত বেশী। আমরা রিলে দৌড় দেখি, চার জন দৌড়ায় এবং জয়ী হয়। রিলে দৌড়ে যদি তিন জন দৌড়ায় আর একজন না দৌড়ায় তাহলে কিন্তু জয়ী হওয়া সম্ভবপর হয় না। জয়ী হতে গেলে সবাইকে সমান তালে দৌড়াতে হয়। দেশের উন্নয়নেও সবাইকে সব দলকে, সব দলীয় সরকারকে রিলে পদ্ধতি বজায় রেখেই দৌড়াতে হয় তাহলেই দেশ এগিয়ে যায়, উন্নয়ন কাংক্ষিত হয় এবং ঈর্ষানীয় ফলাফল চোখে পড়ে।

বাংলাদেশের তাই হয়েছে। আমাদের দুইটি বড় দলের শীর্ষ নেতাদের বলতে শোনা যায় ঐ দল ক্ষমতায় আসলে এইটা হয়ে যাবে, ঐটা হবে না, ঐটা বন্ধ হয়ে যাবে, আজ পর্যন্ত কি একটাও হয়েছে?? ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে নারীদের জন্য অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করেছিলো, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কি সেটা বাদ দিতে পেরেছে? পারেনি বরং আরো বাড়িয়েছে। ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধনে "বিউটিফিকেশন" প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল, আওয়ামী সরকার কি সেটা বাদ দিতে পেরেছে। এমন হাজারটা উদাহরণ দেয়া যাবে। বিএনপি সরকার "মুক্তিযোদা মন্ত্রণালয়" চালু করেছে, আওয়ামী লীগ কি বাদ দিতে পেরেছে?? পারেনি, উন্নয়নের স্বার্থে এটা সম্ভব না।

ধরুন আপনি একটি দালান বানাবেন, ফাউন্ডেশনের সব কাজ শেষ করলেন, আপনি আর কাজ করতে পারছেন না। আপনার ছোট ভাই এখন কাজটি ধরবে, ওনি কি ফাউন্ডেশন ভেঙ্গে আবার শুরু করবেন না যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকে শুরু করবেন?? সরকারে কার্যক্রমও সেই রকম। এক সরকার একটা শুরু করলে অন্য সরকার সেটা বন্ধ করতে পারে না। তবে পারে গ্রামে গঞ্জের কালভার্ট ব্রিজ গুলোর কাজ বন্ধ করতে। অনুদান না দিয়ে সে গুলো বন্ধ করিয়ে রাখে।

কিন্তু মৌলিক কাজ গুলো কখনোই বাদ দেয়া যায় না। পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন করা যায় কিন্তু মৌলিক বিষয় গুলো ঠিকি থাকে। বিএনপি নির্বাচন এলে বলে দেশ ভারত হয়ে যাবে, হিন্দুরা মুসলমানদের উপর খবরদারী করবে, মসজিদে আজান হবে না, ওলু ধ্বনি হবে। আপনারা কি আজ পর্যন্ত সেটা দেখেছেন?? হ্যা হয়তো আওয়ামীলিগের সাথে ভারত সরকারের বুঝপড়া ভালো, তাই বলেতো দেশ আর ভারত হয়ে যায় না। ভারত সরকার হয়তো বাড়তি সুবিধা আদায় করে নেয় সেটা রাজনৈতিক দূর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।

এর জন্য দেশ ভারত হয় না। সাময়িক সুবিধা লাভ করে মাত্র। আবার আওয়ামী লীগ বলে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ পাকিস্তান হয়ে যাবে, মা বোনদের ইজ্জত থাকবে না। নারীরা ঘড় থেকে বের হতে পারবে না, আফগানস্থান হয়ে যাবে। দেশের উন্নয়ন হবে না, পিছিয়ে যাবে, হাজার টা অভিযোগ, আধৌ কি হয়েছে? যে জঙ্গী উত্থানের কথা বলা হয় সেই জঙ্গীদের কিন্তু বিএনপিই গ্রেফতার করে ফাঁসির আদেশ দিয়ে কার্যকর করেছে।

বাংলাদেশের কোন দলই ধোয়া তুলসী পাতা না, দূর্নীতির অপবাদ থেকে কি আওয়ামী লীগ সরকার মুক্ত হতে পেরেছে। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত দূর্নীতি হচ্ছে। তারেক দূর্নীতির জন্য হাওয়া ভবন তৈরী করেছিলো আওয়ামী লীগ আবুল হোসেন তৈরী করার চেষ্টা করে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ধরা খেয়ে পুরো জাতির কপালে কলংকের তিলক পড়িয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প আজ অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুদোল্যমান। পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিজের ভবিষ্যত কি করনীয় সেটা বাদ দিয়ে বলতে শুরু করেছে বিএনপি ক্ষমতায় এলে কি হবে? জনগণকে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে।

আগেও কিছু হয়নি এখনো কিছু হবে না। দেশ যে ভাবে চলছে সেই ভাবেই চলবে। হেফাজত আর জামাত যারাই বিএনপির সাথে থাক, নারীরা তাদের মতই চলবে, কাজ করবে, শিক্ষা দীক্ষায় উন্নতি করবে। নারীরাও মন্ত্রী হবে, সাংসদ হবে। গার্মেন্টসেও মহিলা কর্মীরা নির্দ্বিধায় কাজ করবে।

বিএনপি গাধা তাই বলে এতো গাধা না দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারীকে বাদ দিয়ে উন্নয়নের কথা চিন্তা করবে। মাননীয়া আপা আপনি ইদানিং বেশী মাত্রায় লাগামহীন কথা বলে যাচ্ছেন, ঠিক আপনার আদরের ছোট ভাইদের সংগঠন ছাত্রলীগের লাগামহীন কর্মকান্ডের মত। আপনি পিএসসির মৌখিক পরীক্ষায় আন্দোলনের ভিডিও ফুটেজ দেখে নম্বর দিবেন বলে হুমকি দিয়েছেন, এটার দরকার ছিলো না, আপনি আপনার মনের ভেতরে রেখে নীরবে নিশব্দেই কাজটি করতে পারতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে না এরকম মানুষ রাজাকার ছাড়া খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এর জন্য আজীবন কোটা প্রথা চালু রাখতে হবে সেটাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের, তার পরিবারদের, পোষ্যদের, নাতী-নাতনীদের অন্য ভাবেও সাহায্য করা যায়। আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করা যায়। ওনাদের জন্য লেখাপড়া অবৈতনিক করে ভালো ভাবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবার সুযোগ করে দেয়া যেতে পারে, নিজেদেরকে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর জন্য কোটা পদ্ধতিই একমাত্র পথ নয়। কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে কথা বললে রাজাকার হয়ে যাবে, চাকরী পাবে না সেটা বলার অধিকার আপনাকে সংবিধান দেয়নি, আপনি প্রকারন্তে সংবিধানকে লঙ্গন করেছেন, ভবিষ্যতে কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করে তার খেসারত আপনাকেই দিতে হবে, হয়তো এর সাথে দেশও দিবে, কারণ মামলা করলেই আপনার দল একটা হরতাল দিবে, আবার ভাংচুর হবে, এতে দেশ কুফল ভোগ করবে।

মাননীয়া আপা আপনি নিজে স্বচ্ছ না হয়ে আরেক জনকে অস্বচ্ছ বলে যাবেন, মানুষতো এতো বোকা না। পদ্মা সেতু কেন হয়নি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জেনেগেছে। ডক্টর ইউনূসকে নিয়ে বালখিল্য আচরন মানুষ বুঝেগেছে। শেয়ার বাজার ধ্বংসের সাথে যারা জড়িত তারা যে আপনার উপদেষ্টা সেটাও মানুষ জানে। ব্যাংক কেলেংকারী গুলোর সাথে আপনার দলের আস্থাভাজন ব্যক্তিরা জড়িত সেটাও মানুষ জানে।

মানুষের মাঝে যে নেগেটিভ ধারনা আপনারা সৃষ্টি করেছেন সেই গুলো শোধরানোর চেষ্টা করুন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে কি করবে আর কি করতে পারে সেটাও মানুষ ভালো করে জানে। এই নিয়ে আপনার লাগামহীন কথা না বলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে, এতে ভোট বাড়বে বৈই কমবে না। মাননীয়া আপা আপনি অনেক উন্নয়ন করেছেন কিন্তু সুশাষন প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। আপনি বলেন বিএনপি ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের খুন করবে, মামলা দিবে ইত্যাদি, একটা কথা কেন ভুলে যান জাতীয় পর্যায়ের নেতা আপনার শাষনামলেই গুম হয়েগেছে, তার লাশের সন্ধান মিলেনি। ইলিয়াস আলী খারাপ মানুষ ছিলো, খারাপ লোকের জন্য আদালত আছে, আইন আছে, তাই বলে রাতের আধারে গুম হয়ে যাবে! আপনার সরকার কি করতে পেরেছেন?? চৌধুরী আলম নিখোঁজ, কি করতে পেরেছেন?? প্রকারন্তে আপনার দলের প্রতিই অভোযোগের তীর, এবং মানুষ সেটা বিশ্বাসও করে।

নাটোরের বড়াই থানার চেয়ারম্যানকে দিনে দুপুরে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে কারা হত্যা করেছে?? বিশ্বজিতের রক্তের দাগ এখনো পুরানো ঢাকা থেকে মুছে যায়নি?? তাই আপা যে দোষে আপনি আপনার দল দুষ্ট সেই সব কথা জনসমাবেশে কম বলাই ভালো, সমাবেশে সব আপনার পছন্দের লোক জায়না, কিছু সাধারণ লোকও যায়, যারা পরে আপানর কথা শোনে বিরক্ত হয়ে অন্য দলকে ভোট দেয়। কাজ নয় ব্যবহার দিয়েও মানুষের মন জয় করা যায়। আপনি বললেন সিটি কর্পোরেশনে মানুষ দূর্নীতিবাজদের ভোট দিয়েছে, এতো কাজ করেছেন তবু আপনাদের ভোট দেয়নি, রোজার পর বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন, আপনাকেতো বুদ্ধিমতী ভাবতাম এখন দেখি অশিক্ষিত খালেদার চেয়েও কম জ্ঞান রেখে কথা বলেন। বিদ্যুৎতো আর আপনার পারিবারিক সম্পত্তি নয়, ঘর থেকে এনে বিলিয়ে দিয়েছেন, দিচ্ছেন, এখন আর দিবেন না। এই বিদ্যুৎতের জন্য কি মানুষকে কম অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে?? ২টাকা সত্তর পয়সা ইউনিটের বিদ্যুৎ বিল এখন ৮টাকারও উপরে পরে, চার গুনেরও বেশী মানুষের বিদ্যুৎ খরচ বেড়েছে, তারপরও মানুষকে দেশের শীর্ষ নির্বাহী হয়ে হুমকি দেন, এটা মানুষকে অপমান করার সামিল।

এখানেও আপনি সংবিধানকে হেয় করেছেন। সরকারের দায়িত্বে আছেন, জনসেবা আপনার সাংবিধানিক দায়িত্ব, ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, সেটা প্রয়োগ করার নিরপেক্ষ অধিকার একমাত্র জনগণের। আপনি ভালো কাজ করলেও ভোট চাইতে পারেন না করলেও চাইতে পারেন, তাই বলে প্রকাশ্যে হুমকি!! এর বিরূপ প্রতিক্রিয়াকি ফেসবুকে দেখেছেন?? ফেসবুক কিনতু নতুন প্রজন্ম ব্যবহার করে আর এরা এমন কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য পছন্দ করেন না। মাননীয়া আপা আপনার যুবলীগ আর সোনার ছেলেদের সংগঠন ছাত্রলীগের কূকর্মের কথা ভেবে একটু টাইট দেয়ার কথা ভাবুন। নিজের মুখের আর ওনাদের বেপড়োয়া কর্মকান্দের লাগাম টেনে ধরুন, বেশী সময় নেই, পরে ফস্তাতে হবে।

তবে আত্মশুদ্ধির সময় খুবই কম, মানুষ ত্যক্ত বিরক্ত, এখন যা করবেন, ভেবে নিভে নির্বাচনে জিতার জন্য করছেন, এতে কিছু ভোট বাড়লেও পরাজয় এড়ানো যাবে বলে মনে হয় না। ক্যান্সার যখন প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তখন নিরাময় করা সহজ, ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চলে গেলে নিরাময় সম্ভব নয়, মৃর্ত্যুকে কিছুদিন দূরে রাখা যায়, যন্ত্রণা হয়তো কমানো যায় তাতে নিয়তির নিয়মেই চলে যেতে হয়। আপনার ক্ষমতার শেষ চার মাস, আপনার প্রশাসনে যে ক্যান্সার হয়েছে সেটা এখন আর নিরাময় যোগ্য নয়। এই ক্যান্সারের ফলাফল আপনাকে ভোগ করতে হবে আগামী নির্বাচনে। এখন সাময়িক কিছু ক্যামু থ্যারাপী চালাতে পারেন।

তার চেয়ে বেশী প্রয়োজন আপনার মুখের ভাষা সামলানো। অশিক্ষিত লোক খারাপ ভাষায় কথা বললে, মানুষ শান্তনা খোঁজে যে ওনি অশিক্ষিত, কম বুঝে বলে ফেলছে। আর শিক্ষিত লোক খারাপ ভাষায় কথা বললে, মানুষ উল্টা প্রশ্ন করে ওনি শিক্ষিত হয়ে এই কথাটি কি করে বললেন? সুতরাং ভাষার সুন্দর ব্যবহার এবং মার্জিত শব্দ চয়ন করুন। মাননীয়া আপা ৪২ বছরের বাংলাদেশ একদিনে তৈরী হয়নি, আজকের দেশ শুধু আপনার ১০ বছরেরর উন্নয়ন এবং আওয়ামী লীগের সাড়ে তিন বছরের উন্নয়নের উরপ দাড়িয়ে নেই। এই সত্যটি বুঝতে হবে।

কথায় কথায় বলেন আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশে উন্নয়ন হয়না, এই মিথ্যাটা না বলেই ভালো। আপনার ধারনা আপনি একটু বেশী করেন সেটাই বলেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রত্যেকটি দলের ভূমিকা আছে, এমনকি আপনি স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের অবদানকেও অস্বীকার করতে পারবেন না। ভোটের যুদ্ধের বদনাম বলার চেয়ে নিজের সুনাম এবং নিজে কি করতে পারবেন, কি করেছেন, কি করা উচিত সেগুলো বললেই বেশী সুবিধা হয়। আপনি একটা করে কথার বোমা ফাটাবেন, আর হাজার হাজার ভোট কমতে থাকবে।

একটা জিনিস মনে রাখবেন আপনার আমলে যেই সব সূচকের মাত্রা বেড়েছে সেটার জন্য আপনি একা কৃতিত্বের অধিকারী না, হয়তো আপনার সুদক্ষ পরিচালনায় ফলাফলটা একটু ভালো হয়েছে এর জন্য আপনি ভোটের দাবীতে এগিয়ে যাবেন। পরিশেষে একটা উদাহরণ দিয়ে লেখাটা শেষ করছি। এক বদমেজাজী বিত্তশালী স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবেসে চাওয়ার আগেই সব দেন, কসমেটিকস, অলংকার, প্রসাধনী, নতুন নতুন গাড়ী, দেশ বিদেশ ঘুরাফেরা, এককথায় সুখের রাখার জন্য যা দরকার সবই করেন। তারপরও সেই স্ত্রী সুখী হতে পারছেন না। কারণ, স্বামী কথায় কথায় অত্যচার করে, তার ভাই বোনরা অত্যচার করে প্রতিবাদ করে না, স্ত্রী সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে ঘরে বসিয়ে রাখে, নিজের স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই চলে দূর্ব্যবহার। স্বামী নিজের ইচ্ছেমত স্ত্রীকে ব্যবহার করতে চায়, প্রতিবাদ করলে অত্যচার। অনেকদিন বউ নীরবে সয্য করে শুধু সুযোগের অপক্ষায় ছিলো। একদিন সুগোগ পেয়ে গিয়ে স্বামী সংসার ছেড়ে চলে যায়। তখন বদমেজাজী স্বামী স্ত্রীর অভাব অনুভব করে খোঁজতে থাকে, ততদিনে স্ত্রী তাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ চায়।

জ্বী মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের পরাজয় আপনার জন্য ক্ষমতা হারানোর উকিল নোটিশ। এখন যত ভালো ভাবে কাজ করবেন, ততভালো দিকে মোড় নিলেও নিতে পারে। তবে সরকারের শেষের দিকের কাজ গুলো মানুষ ভালো ভাবে নেয় না। কারণ মানুষ বুঝে যায় যে এখন যা করছে সব নির্বাচনকে সামনে রেখে করছে, নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য করছে, এতে বুমেরাং হয়ে যায়। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দয়া করে আপনার মুখের ভাষা সংযম করুন, আর আপনার যুবলীগ আর সোনার ছেলেদের ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরুন, কিছুটা হলেও রক্ষা হতে পারে।

আপনার প্রতি শুভ কামনা থাকলো। মনে রাখবেন ক্ষমতার পালাবদল হবে এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, সাদ্দাম, গাদ্দাফী থেকে শুরু করে অনেকের কাজ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন, গোয়ার্তুমির ফল ভালো হয় না, বিএনপি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। দেশের সহিংসতারোধে বিরোধী দলের সাথে বসে একটা সমঝোতায় আসেন, দেশের লাভ হবে, মানুষের জীবন নিরাপদ হবে, শান্তি বজায় থাকবে, যদি নিজেকে সর্বেসর্বা ভেবে গোয়ার্তুমি করেন তাহলে ভরাডুবি আপনারি হবে, বাংলাদেশের মানুষ এক দলীয় নির্বাচন পছন্দ করে না। এরশাদের নির্বাচন, মাগুরার নির্বাচন আরো অনেক নির্বাচন এর পরিপক্ক উদাহরণ। আপনাদের সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

আমীন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।