কাজ-কাজ আর কাজ। ক্ষমতার আগ্রাসন হতে মুক্তি।
শাপলা বড়ুয়া
হাঙরদের নাম শুনেনি এমন কাউকে বোধহয় খুঁজেই পাওয়া যাবে না। যেমন হিংস্র তেমনি গুঁয়ারগোবিন্দ এরা। যে জন্য অনেকে এদের নাম দিয়ে বসেন ধূর্ত শয়তান।
তবে হাঙরদের নামের সঙ্গে যতই মাছ শব্দটি জুড়ে বসুক না কেন এরা নাকি সত্যিকারের কোন মাছই নয়। কেননা এদের শরীর জুড়ে কেবলই নরম হাড়। তাই পন্ডিতরা কোমল অস্থি জাতীয় মাছের কাতারে ফেলে দেন এদের। তাছাড়া মাছেদের মত হাঙরদের আঁশের কোন বালাইও নেই। মূলত শিরিষ কাগজের মতই খসখসে এদের শরীর।
যে জন্য বেশ উঁচুদরের শিরিষ হিসেবে বিকোনো হয় ওদের চামড়া। তবে হাড় যতই নরম হোক না কেন শিকারকে বাগে নিয়ে আসতে এরা কিন্তু কম সিদ্ধহস্ত নয়। কোনভাবে শিকারের খোঁজ পেলেই হলো আর বাঁচোয়া নেই। দিনের পর দিন সেই শিকারের পিছনেই ছুটে বেড়ায় এরা। আর যদি শিকারকে বাগে আনতে পারে তাহলে তো কথাই নেই অমনি চোয়ালের দুই পাটি করাতে দাঁতে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে বেচারা প্রাণীটিকে।
বিশেষ করে গরমের দেশের সাদা হাঙররা তো নাবিকদের জন্য সাক্ষাত্ যমদূত। তাই ৩০-৪০ ফুট এই সাদা হাঙরদের নামও হয়ে যায় ‘?সাদা শয়তান’। এদিকে হিংস্রতায় কম যায় না টাইগার হাঙররাও। শরীর জুড়ে যেমন বাঘের মতো ডোরাকাটা দাগটানা তেমনি ভয়ঙ্কর এই টাইগাররা। খাবার দাবারেও তেমন বাছবিচার নেই এদের।
ধারে কাছে যা পায় তাই গোগ্রাসে গিলে খায়। আর এমনই রাক্ষুসে যে নিজেদের জাতভাইরাও রক্ষা পায় না এদের হিংস্র থাবা থেকে। এমনকি বিশাল বিশাল সব তিমিদেরও ধরাশায়ী করে ফেলে ২৫-৩০ ফুটের এই সর্বভুক প্রাণীরা। তবে হাঙরদের সবাই কিন্তু তেমন ভয়ঙ্কর কিছু প্রাণী নয়। কোন কোনটি তো নিতান্তই গোবেচারা।
শিকার ধরার কূটচালের ধারে কাছেই নেই। বরঞ্চ সমুদ্রে এই নার্স বা ধাত্রী হাঙরদের দেখা পেলেই হলো, এদের পিঠে চড়ে বসে ভ্রমণপিপাসুদের কেউ কেউ। ফ্লোরিডার এই নিরীহ নার্সরাও তখন সুবোধ বালকের মত সওয়ারদের ঘাড়ে বইয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সমুদ্র ভ্রমণে। এভাবেই ধাত্রী হাঙরদের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে ভ্রমণানুরাগীরা। অন্যদিকে বাস্কিং হাঙররা তো একেবারে আলসের ঢেঁকি।
সারাদিনই জলের ওপর মাথা তুলে রোদ পোহায়। অন্য কোন প্রাণীদের দিকে ভ্রূক্ষেপই নেই যেন। উদরপুর্তির জন্যও তেমন ভাবতে হয় না এদের। পেটে ছুঁচো খুঁড়েছে কী সঙ্গে সঙ্গে মুখটি হা করলেই হয়ে গেল। স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা শামুক, ঝিনুক, পোকা-মাকড়, শ্যাওলা ও মরা প্রাণীর মাংসের ছাঁট গিলে নেয় বাস্কিংরা।
এভাবেই ঝুট ঝামেলাহীন জীবন কাটিয়ে দেয় এরা। অন্যদিকে শেয়াল বা থ্রেশার হাঙররা বিশাল লেজ দিয়েই সেরে ফেলে তাদের শিকার ধরার কাজ। শেয়ালের মতো এই লেজ দিয়ে পানিতে জোরসে বাড়ি মেরে ছোট ছোট মাছগুলোকে জড়ো করে থ্রেশাররা। যখনি মাছগুলো এক সঙ্গে হয় তখনি সেদিনের মত মিটিয়ে নেয় নিজেদের জলখাবারটি। এ রকম নানা জাতের হাঙ্গর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের সমুদ্রজুড়ে।
একেকটি আবার একেক রকম। চেহারা আর চলন-বলনে নামেরও রকম ফের করা হয়েছে এদের। কোনটির মাথায় হাতুড়ি জুড়ানো। হাতুড়ির দু’পাশে আবার দুটো চোখ। মনে হয় এই বুঝি হাতুড়ি বাগিয়ে তেড়ে আসল! কোনটির আবার মুখ থ্যাবড়া।
কোনটি তো দেখতে অবিকল মৃগেল মাছের মতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।