আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বে সর্বকালে সর্ব শ্রেষ্ঠ মানুষ;রাসূল (ছা.) এর জীবনীর উপর অসাধারণ বইয়ের পরিচিতিঃ বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (ছা.) ও তাঁর আহলে বায়েত

স্রষ্টা, সৃষ্টি ও নিজেকে জানা । হযরত মুহম্মদ (ছা.) বিশ্ব নবী। তাঁর দুনিয়ায় আবির্ভাব থেকে আরম্ভ করে অন্তর্ধানের দিন পর্যন্ত মহান জীবনের সম্পূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে প্রতিটি অনুসারীর সম্যক জ্ঞান লাভ অতীব প্রয়োজন। ফলেই তো তাঁকে পুরোপুরিভাবে অনুসরণ করা সম্ভব হবে। এই বইতে সর্বস্তরের ঘটনা সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে।

এই একই বিষয়ের অন্যান্য বই-তে কিছু কথা বা ঘটনার পরিষ্কার আলোচনা হয়নি। কিন্তু ৬১৪ পৃষ্ঠার এই বইতে তা বাস্তবসম্মত উপস্থাপন ও তদ্বীয় বিষয়ে প্রশ্নের সমাধান রয়েছে। যা পাঠক মনে আরও সত্য ও বাস্তবতায় অগ্রগতি করবে। নিন্মে সংক্ষিপ্ত আকারে যা লেখক তুলে ধরেছেন তা উল্লেখ করা হলো; যেমনঃ- ১. কঠোর সাধনায় মানবকুলের শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হযরত মুহম্মদ (ছা.) সীনা চাকের প্রচলিত, কাল্পনীক ধারনা সৃষ্টি করে, তাঁর সাধনার জীবনকে ম্লান করে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শবে মেরাজের প্রারম্ভে হযরত মুহম্মদ (ছা.) এর সীনা চাকের কথা ব্যাপকভাবে চালু আছে এবং মাওলানা আকরাম খাঁ সাহেব তার লেখা ”মোস্তফা চরিত্র” গ্রন্হে যা বলেছেন যেমন- সোনার বাটি, চামুচ দ্বারা ফেরেস্তাদের দিয়ে বারবার হযরত মুহম্মদ (ছা.) এর সীনাহ চাক করিয়েই তো হযরত মুহম্মদ (ছা.)কে উন্নত বা শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

তাহলে লেখকের প্রশ্ন- আল্লাহতায়ালা যাদের সীনাহ চাক করলেন না তাদের অবস্থা কি করে উন্নত হবে? এজন্য সীনাহ চাকের বিশেষ অবস্থার কথা এই বইতে সংযোজন আছে। ২. আল্লাহ তা’আলা সর্বত্র বিরাজমান। আল্লাহর অবস্থানের কোন নির্দিষ্ট জায়গার কথা ধারণা করা যাবে না। অথচ সেই আল্লাহ তা’আলার সাথে মিরাজ বা সাক্ষাতের বিষয়ে আকাশ পথে ভ্রমন করিয়ে কত ভাবেই না ওয়াজ নছিহতের মাধ্যমে কথা বলা হচ্ছে। হযরত মুহম্মদ (ছা.) মিরাজের কথা বিশ্বাস করতে হবেই।

কিন্তু সেই বিশ্বাস কায়েম করতে গিয়ে আল্লাহ তা’আলার অবস্থান সম্পর্কে কল্পনার জগতে বিরাজ করা যাবে না। আল্রাহ তা’আলার অবস্থান সম্পর্কে পাক কুরআন মাজিদে যেভাবে জানিয়েছেন প্রতিটি রাসূল (ছা.) অনুসারী ব্যক্তিকে সেই ধারনাই কায়েম থেকে হযরত মুহম্মদ (ছা.)’র মিরাজকে বুঝতে হবে। তাই মিরাজ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনার তাগিতে মিরাজ সম্পর্কে একটি বিশেষ অধ্যায় এই বইতে সংযোজিত হয়েছে। ৩. বিদায় হজ্বে আরাফার মাঠে রাসূলে পাক (ছা.) তাঁর ভাষণে পাক কুরআনকে মান্য করার আর সেই সাথে বিশেষ কতকগুলি নীতিমালা উল্লেখ করেন এবং সেইভাবে মানতে বলে তিনি বিদায় হজ্ব থেকে মদীনার পথে আসলেন। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা চাচ্ছিলেন রাসূলে পাক (ছা.) জীবনের শেষ ভাষণে তাঁর আহলে বায়েতের কথা বলুন।

আল্লাহ তা’আলার তাগিদে রাসূলে পাক (ছা.) বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে ’গাদীরে খুম’ নামক জায়গায় যাত্রা বিরতি করে লক্ষ হাজী জনতাকে একত্র করে ঘোষণা করলেন- তোমরা আল্লাহ কুরআন মানবে ও আমার আহলে বায়েতকে অনুসরণ করবে। একই সাথে রাসূলে পাক (ছা.) আহলে বায়েতের শ্রেষ্ঠ হযরত আলী (আ.) কে মওলা হিসাবে মানার কথাও ঘোষণা দিলেন- ঘোষণা দিলেন আলীর সাথে শত্রুতা করে যে, সে আমার সাথে শত্রুতা করবে- সে আল্লাহর সাথে শত্রুতা করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গাদীরে খুমে হযরত আলী (ক.)’র মওলার অভিষেকের অনুষ্ঠান ও আলোচনার কথা কোথাও প্রকাশ করা হয় না। যা বইতে সংযোজিত হয়েছে। ৪. আহলে বায়েতগণকে পবিত্র করার জন্য পাক কুরআনের ৩৩নং সূরা আযহাবে ৩৩ নং আয়াতের প্রতি এবং পাক কুরআনে মুবাহিলার ঘটনার বর্ণনায় আহলে বায়েতের পরিচয় সম্পকে লেখক দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন এই বইতে।

৫. হযরত মা ফাতিমা (আ.)’র পৈতৃক ওয়ারিশ হিসাবে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং রাসূলে পাক (ছা.)’র অন্তর্ধানের মাত্র ছয় মাস পরই তাঁর জীবন অবসানের ঘটনা- সবই অনুধাবনযোগ্য। এ সবের উপর আলোচনা আছে এই বইতে। ৬. ইসলামী ঐক্যের প্রশ্নে ইমাম হাসান (আ.)’র আমীর মুয়াবিয়ার নিকট আপোষ খিলাফত ত্যাগ করা বিশ্বের বুকে অনন্য উদাহরণযোগ্য ঘটনা যা এই বইতে পাঠকগণের অনুধাবনের জন্য প্রত্যাশা রেখেছেন লেখক। ইমাম হোসাইন (আ.)’র কারবালার মাঠে পরিবার, পরিজন ও ঘনিষ্ট অনুসারীরগণসহ শাহাদত বরণের ঘটনা বিশেষভাবে অনুধাবনযোগ্য। তাঁর সমকালীন ইসলামী রাষ্ট্র ও ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রতিটি মুসলমানের অবশ্য প্রয়োজন।

কাফির ইয়াজিদ তখনকার মুসলিম জাহানের জবরদখলকারী খলিফা। একমাত্র কুফার জনগণ এবং হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র পরিবার, পরিজন ও ঘনিষ্ট অনুসারী ব্যতিত সকলে কাফির ইয়াজিদের খিলাফত দখলে স্তব্ধ ও ভীত সন্ত্রস্ত। লেখক বলেছেন- এ সবই রাসূলে পাক (ছা.)’র ও তাঁর আহলে বায়েত ভক্তগণের চিন্তার খোরাক যোগানো ঘটনা। তাই এ বিষয়ে বিশেষ আলোচনা এই বইতে রয়েছে। ৭. আহলে বায়েত বহির্ভূত খোলাফায়ে রাশেদীন হযরত আবুবকর হযরত ওমর ও হযরত উসমান (রা.)গণের আমলে তারা আহলে বায়েতকে মুসলিম জাহানের ইমামের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

দুঃখের বিষয়- তথাকথিত উমাইয়া, আব্বাসীয় খলিফাগণ আহলে বায়েতগণের অনুসারী ১২ জন ইমামকে একের পর এক শহীদ করে ইসলামের বিভিন্ন দল ও মজহাবের নেতাগণকে ইমাম হিসাবে ঘোষণা দেয়। এতে ইমামতিও প্রতিষ্ঠিত আহলে বায়েত ও তাদের আয়ত্তের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে দুঃখের বিষয় সমাজে ধীরে ধীরে আহলে বায়েত তথা পাক পাঞ্জাতন পাঁচটি পবিত্রতন-এর বিরোধিদের দুষ্ট প্রভাবে এই পবিত্র প্রথা লোপ পাচেছ। লেখক এই দিকে পাঠকগণের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। বইতে হযরত মুহাম্মদ (ছা.) ও তাঁর আহলে বায়েতগণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার দিকে সুহৃদয় পাঠকগণের মনে অনুসন্ধিৎসা সৃ্ষ্টির উদ্দেশ্যে এই প্রাথমিক কথাগুলির অবতারণা।

এতে সফলতার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট বিশেষ মুনাজাত। বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (ছা.) ও তাঁর আহলে বায়েত নামক বইটির লেখক অধ্যক্ষ এস.এম আবুল হুসাইন উয়ায়সী আল্লাহর অশেষ রহমতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন সেই ৬০ দশকের দিকে। পরবর্তী জীবনে ইসলামের ইতিহাস নিজে পড়েছেন ও ছাত্রদের পড়িয়েছেন। এর সাথে ছাত্র জীবনেই রাসূলে পাক (ছা.)’র পবিত্র খেরকা প্রাপ্ত হযরত উয়ায়স করণি (রহ.) কর্তৃক আধ্যাত্মবাদের মূল ভিত্তির উপর ও চালু পবিত্র ধর্মীয় দিক নির্দেশনায় আধ্যাত্মবাদের শিক্ষায় শিক্ষিত হবার সুযোগও আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন। সব মিলে রাসূলে পাক (ছা.) ও তাঁর আহলে বায়েতগণের জীবনাদর্শ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছেন।

উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ এস.এম আবুল হুসাইন উয়ায়সী টাংগাইল জেলার একজন মানুষ গড়ার কারিগর হিসাবে খ্যাত। তিনি ৪টি কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও করটিয়া সাÕদত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার জীবনের সাফল্য ও কর্ম নিয়ে আরো একটি বই একই সাথে প্রকাশিত হয়েছে। বইটির নাম “আমার জীবনের ইতি কথা”। শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক ড. আফরাফ সিদ্দিকী বই সমন্ধে কভার পৃষ্ঠার ভিতরে বলেছেন - “অধ্যক্ষ এস.এম আবুল হুসাইন উয়ায়সী একজন নিবেদিত প্রাণ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাসেবী ও সমাজ সেবক।

তার শিক্ষকতার বিষয় ছিল ইসলামের ইতিহাস। তিনি শিক্ষক হিসাবে শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন। তিনি সুশিক্ষক, সুবক্তা ও অত্যন্ত সরল জীবন যাপনে একজন আদর্শ মানুষ। তার পরিণত বয়সে রচিত আমার জীবনের ইতিকথা শিক্ষা সমাজসেবা ও কর্মময় জীবনের অভিজ্ঞতা এবং সাধারণ জীবন যাপনের বর্ণনায় এক সমৃদ্ধ দলিল। বইটিতে একটি সুদীর্ঘ কালকে সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

- যা পাঠক-পাঠিকা-ছাত্র-শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী মানুষের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ে উজ্জীবিত ও অনুপ্রানিত করবে। ” অর্থাৎ কিভাবে শিক্ষা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজ উন্নয়ন করা যায় তার জীবনীতে তার বিশেষ কৌশল রয়েছে। লেখকের সাথে আমি বই প্রাপ্তির স্থান আশেক মুর্শেদ শাহ্ আফাজ উদ্দিন মাস্টার বাড়ি (বংশাই ব্রিজ সংলগ্ন) কালিয়াকৈর, গাজীপুর। ফোন- 01720602222 অফসেট পেপারে মুদ্রিত দু’টি বই একত্রে হাদিয়া: ৯০০ টাকা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।