তবু তুই রয়েছিস বলে, ঘাসফুলে জল দোলে...
ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে/ আমার নামটি লেখো তোমার মনের মন্দিরে...
আচ্ছা, এই গানটা পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো করে কে গেয়েছে? কার কন্ঠে এই গান শুনে আমার মতো অনেকেই নতুন করে রবীন্দ্রসংগীতে মত্ত হয়েছে? কার কন্ঠেই বা রবীন্দ্র সংগীতের আসল রূপ ফুটে উঠেছে?
অবশ্যই আবিদের।
আবিদকে কি শুধু আবিদ বলেই চেনানো যায়? নাহ... যায়না। আবিদ আসলে সেই মানুষটা, যে অঘোষিত আহ্বানে তরুণ প্রজন্মকে শুদ্ধ ও সুন্দর রবীন্দ্রসংগীতে টেনে এনেছে। ইশ! কী বিপুল উৎসাহ নিয়ে আমি “নব আনন্দে জাগো” এর অপেক্ষা করছিলাম...
কিন্তু নিয়তি বড়ই নিষ্ঠুর! আবিদের ডাক চলে আসলো। স্রষ্টা মহান আবিদকে ডেকে পাঠালেন।
আবিদ চিরসুবোধের মতো একেবারে নিভৃতেই চলে গেলেন। তার অস্তিত্বে যে মহীরুহ’র সৃষ্টি শুরু হয়েছিলো, কয়েকটা মাত্র মিনিটেই তা সমাপ্ত। বাস্তবতার এই আঘাত যে মানতেই হবে। এছাড়া যে কোনো উপায়ই আমাদের নেই... নেই-ই!
আবিদ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তো কী হয়েছে! আবিদ তো আমাদের কাছে নিজেকে রেখেই গেলেন।
হ্যা, আমরা হয়তো আর রক্ত মাংসের আবিদকে সমস্ত শরীর দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত গাইতে দেখবোনা। তাতে কী হয়েছে! আবিদকে অদৃশ্য এক অস্তিত্ব নিয়ে আমাদের মাঝে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেনা? অবশ্যই থাকবে...
আসলে মৃত্যু বলে যা আছে, তা মূলত কী?
কেবলই স্থানান্তর! আর কিছুই না। আসলেই না! আবিদ আমাদের আগে চলে গেলো; আর আমরা? তার পিছনের লাইনেই তো দাঁড়িয়ে আছি!
আবিদ মরেনি। আবিদ বেঁচে থাকবে। রক্ত মাংসের শরীর নিয়ে চিরঞ্জীব হওয়া যায়না; চিরঞ্জীব হতে হলে দরকার ভালোবাসার অশরীরী আত্মা।
আবিদের সেই আত্মা তো আমাদেরই কাছে... রবীন্দ্রসংগীতের লাইনে লাইনে- সূরে সূরে...
আবিদের জন্য তাই কোনো শোকগাঁথা নয়; আবিদের জন্য এখন কেবলেই স্রষ্টার মহানের দরবারে আকুল ফরিয়াদ-
খোদা, আবিদকে তো তুমি জীবনের অর্ধেকও দিলেনা। এখন তুমি তাকে জান্নাতের সু-শীতল আবাসে নিতেও দেরী করোনা, খোদা। তোমার পথিকরাই তো বলে, দূর্যোগ-দূর্বিপাক-দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারীদের কোনোই শাস্তি নেই; খোদা, আবিদকে তুমি বিনা শর্তে জান্নাতে দিয়ে দিয়ো। মানুষ হিসেবে আবিদ হয়তো অনেক পাপ-ই করেছে, কিন্তু ওর পাপের বোঝার চেয়ে তোমার ক্ষমার দৃষ্টি কোটি কোটি গুণ বড়... খোদা, এই নালায়েক নাফরমানের ফরিয়াদ কবুল করো, খোদা... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।