আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোররাতে পত্রিকা সম্পাদককে গ্রেফতার, কিসের আলামত?

<<মধ্যরাতের হাইওয়ে>> বর্তমান সরকার আরেকটি বাজে কাজের উদাহরণ সৃষ্টি করল আজ। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখায় অনলাইন দৈনিক ও বার্তা সংস্থা শীর্ষ নিউজ ডটকম ও সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজ সম্পাদক মো. একরামুল হককে আটক করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে পুলিশ সম্পাদকের মগবাজারের বাসা ঘিরে রাখে। ভোর ৫টার দিকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায় ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয় কেন? তিনি কি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন? তাহলে? একজন পত্রিকার সম্পাদককে ভোর রাতে তার বাসায় গিয়ে গ্রেফতার করা হল। বেশ কিছুদিন যাবতই ব্যাপারটার উপর লক্ষ্য রাখছিলাম।

প্রথমে সচিবালয়ে পোষ্টার ছাপানো, সাংবাদিকদের গুন্ডা দিয়ে হুমকি ধামকি, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল ....... এত কিছুর পরেও প্রতিহিংসা যায় নি। এবার সম্পাদককে গ্রেফতার করা হল। দুর্নীতির অভিযোগগুলো না খন্ডিয়ে বরং মুখ চেপে ধরা। তাতে তো এটাই প্রমাণিত হয় যে, দুর্নীতির অভিযোগগুলো সঠিক ছিল। সমালোচনা সহ্য করতে পারে না কেন সরকার? বর্তমান সরকার কি এতটাই দিশেহারা যে , একটা অনলাইন পত্রিকা ও একটা সাপ্তাহিকের নিউজে তাদের এত বিশাল জনপ্রিয়তা উবে যাবে? অদ্ভুত স্ট্র্যাটেজি ! এগুলো করে সরকারের ভাবমূর্তিতো আরও ধ্বংস হচ্ছে।

এত ভয়? চারিদিকে এত অব্যবস্থাপনা, অসহায়ত্ব, নৈরাজ্য, দুর্নীতি। এগুলোর সমাধান নাই। বরং যত ধরনের অযথা কাজ আছে, সেগুলোতে সরকার এক্সপার্ট। কিছু হলেই পুলিশ লেলিয়ে দাও। মার-ধর, নির্যাতন কর।

সম্প্রতি দেখলাম আমিনবাজার ট্রাজেডি ও কাদের এর ঘটনা। তার আগে বিরোধীদলীয় চীফ হুইপের সাথে পুলিশের আচরণ। তারও আগে লিমন। এরই মাঝে আরও কত হাজারো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। যা থানার ওই চার দেয়ালেই আটকে যাচ্ছে।

আমরা তার কয়টার খোঁজ রাখি। এগুলো কোন সমাধানের পথ নয়। বিরোধী মত থাকবেই। সেগুলোর জবাব দেয়ার দায়িত্বও সরকারের। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

তাই বলে একজন সাংবাদিককে কেন মধ্যরাতে গ্রেফতার করতে হবে? এটা কি ইঙ্গিত করে? সরকার আসলে কি চায়? পত্রিকার ভাষাই যদি সহ্য করতে না পারে, দেশ চালাবে কি করে? হলুদ সাংবাদিকতা এক জিনিস আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখা, কাজের সমালোচনা আরেক জিনিস। গণতন্ত্রের ভেক ধরে, মিডিয়ার অবাধ স্বাধীনতার কথা বলে তার উল্টা কাজ করা, এ ধরনের দ্বিমুখীনীতি আর কত? বিরোধী রাজনৈতিক দলের লোকদের গ্রেফতার করা আর একজন পত্রিকার সম্পাদককে গ্রেফতার করা এক নয়। এগুলো বহির্বিশ্বে পর্যালোচনা হয়, হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ জনগণ কিভাবে নিচ্ছে সেটা আপনারা না বুঝলেও আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারি। দলীয় লেজুড়বৃত্তি যারা করে তাদের কথা আলাদা।

সরকারের যত তাড়াতাড়ি শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তত তাড়াতাড়ি জনগণ বেচে যাবে, সরকারও বাচবে। এ দেশের ক্ষমতাবানদের এই সমস্যা প্রকট। বিরোধী মত সহ্য করতে পারে না। বিগত তত্বাবধায়কের সময় এবং বিএনপি আমলে সংবাদকর্মী ও মিডিয়ার উপর হেনস্থার কিছু নজির ছিল। কিন্তু সেই সামরিক তত্বাবধায়কের আমলের চেয়েও এই আড়াই বছরে সরকার মিডিয়ার উপর যেই নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে, তা শুধু অতীতরে একটি আমলকেই মনে করিয়ে দেয়।

দয়া করে নিজেদের কাজের উপর মনোযোগ দিন। অযথা হয়রানি না করে বিরোধীমতকে নিজেদের কাজের দ্বারা জবাব দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যা বললাম বা লিখলাম, জানি এগুলো অরণ্যে রোদন। তবুও বলি, বলছি..........এভাবে চলে না, চলতে পারে না। উন্নয়ন যা হচ্ছে, তা আপনাদের ওই স্বেচ্ছাচারীতায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।