স্নো-ড্রপস অ্যান্ড ড্যাফোডিলস, বাটারফ্লাইস অ্যান্ড বী; সেইল বোটস অ্যান্ড ফিশারমেন, থিংস অভ দ্যা সী। উইশিং-ওয়েলস, ওয়েডিঙ বেলস, আর্লি মর্নিং ডিউ; অল কাইন্ডস অভ এভরিথিং রিমাইন্ডস মি অভ ইউ!
টকটকে লাল রঙের সুটকেসের মত প্ল্যাস্টিকের বাক্স। খুলতেই চমক। কাকু ঢাকা থেকে গানের বাক্স কিনে এনেছেন, যার নাম রেকর্ড প্লেয়ার। দুটি গোল রেকর্ড এসেছে সাথে।
পিন চাপা দিয়ে অন করলেই রেকর্ডের চাকতি ঘুরতে থাকে, ডান দিকের খোপ খোপ জাফরি থেকে গান শোনা যায়। কি বিস্ময় ! রেডিওর গান বাড়িতে বাজছে, তাও আবার রেডিওর গানের মত একবারে শেষ হয়ে যায় না, বারবার বাজানো যায়। আর কি সুমধুর গান ! দুটি রেকর্ডের ওপরেই গ্রামোফোনের সামনে বসা একটি কুকুরের ছবি। রেকর্ডের সাথে কুকুরও ঘোরে। কাকু বললেন, কুকুরটা মনিবের গান শুনছে, যাকে বলে "হিজ মাস্টার্স ভয়েস"।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কুকুরটা কি আমাদের লালু ? কাকু বললেন, হ্যাঁ, ঠিক ধরেছিস। আমি বললাম, কাকু, আমরাও তো রেকর্ড প্লেয়ারের সামনে বসে গান শুনছি, তবে আমরা দুজনেও কি লালু ? কাকু বললেন, না রে বোকা, আমি হচ্ছি লালু আর তুই হলি ভুলু।
প্লেয়ারের সাথে আসা দুটি রেকর্ডের একটিতে 'দুই ভাই' ছায়াছবির গান - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে, 'তারে বলে দিও, সে যেন আসেনা', 'আমার জীবনের এত খুশী', 'ওগো যা পেয়েছি, সেইটুকুতে খুশী আমার মন' ও 'গাঙে ঢেউ খেলে যায়'। সেই আমার জীবনের প্রথম রেকর্ডের গান শোনা! অন্য রেকর্ডটি ছিল তালাত মাহমুদের, তাতেও চারটি গান - 'আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়', 'দুটি পাখী দুটি তীরে', 'এলো কি নতুন কোনও গোধূলি বেলা' ও 'ঘুমের ছায়া চাঁদের চোখে'। কি কণ্ঠ তালাত মাহমুদের ! ছোট্ট আমি আবেশে আবেশিত।
সারাদিন রেকর্ড প্লেয়ারের নেশার ঘোরে কাটতে লাগলো আমার। আটটি মাত্র গান, বারবার তাই শুনতে লাগলাম, এই ফাঁকে দাদু রেডিওর দখল পুরোটাই নিয়ে নিলেন। কিন্তু সবকিছুরই যতি থাকে, রেকর্ড প্লেয়ার শোনাও বন্ধ করতে হল। আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলোনা। রেকর্ড প্লেয়ার চলত ব্যাটারিতে, দ্বিগুণ সাইজের চান্দা ব্যাটারি।
কাকু বেশ কয়েকটা একসাথে কিনে এনেছিলেন। ফুরিয়ে যাওয়ার পর, আর তো উপায় নেই। দাদু সপ্তাহে একবার শহরের বাজারে যেতেন, মনে করে ব্যাটারি আনলে প্লেয়ার চলত, ভুলে গেলে কি আর করা, আবার পরের সপ্তাহের অপেক্ষা !
আবার রেডিওতে আর অনুরোধের আসরের কাছে ফিরতে হল আমাকে। কিন্তু দেশে তখন নানা গোলযোগ, রেডিওতে গরম খবর, দাদু আরও বেশি রেডিওতে নিমগ্ন। গান শোনার সুযোগ পেতাম, কিন্তু আগের মত সর্বদা আর নয়।
এমন এক রোববারে আমার অনুরোধের আসর শোনা হল না। মন খারাপ, বিকালে একবার হয়ত কাঁদলামও। সন্ধ্যায় রোজদিনের মত হ্যারিকেনের আলোয় দাদুর সাথে বসেছি চা খেতে। আগেরদিন দাদু হাট থেকে আমার জন্যে নতুন এক প্যাকেট বিস্কিট এনেছিলেন, আল-হেলাল বিস্কিট, উজ্জ্বল লাল প্যাকেট, প্যাকেটের গায়ে ঈদের চাঁদের ছবি। দাদু আমার দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন, একটা বিস্কিট দে! আমি বললাম, না ! দাদু বললেন, কেন রে ? আমি বললাম, আপনি আমাকে দুপুরে গান শুনতে দেননি, তাই।
দাদু আহত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে কি এক আকুতি নিয়ে বললেন, আমি এনে দিলাম আর আমাকেই দিলি না !! সেই ছদ্ম, আহত দৃষ্টির আকুতি তখন থেকে বাকি জীবনের জন্যে আমার মনে গেঁথে গেল।
আজ দাদু নেই, লাল প্যাকেটের ঈদের চাঁদের আল-হেলাল বিস্কুটও আর পাওয়া যায়না। ঈদের চাঁদ আজও ওঠে। সবাই চাঁদ দেখে, আর আমি চাঁদের পাশে, মেঘের কোনে দাদুর মায়াভরা চোখের আকুতি আজও দেখি, আজও দেখি, আজও দেখি।
অনুরোধের আসর ২.১
০১ যাবার বেলায় পিছু থেকে ডাক দিয়ে - লতা মঙ্গেশকর
০২ যদিও রজনী পোহাল তবুও - লতা মঙ্গেশকর
০৩ কত যে কথা ছিল, কত যে ছিল গান - লতা মঙ্গেশকর
০৪ কত নিশি গেছে নিদহারা - লতা মঙ্গেশকর
০৫ দোলে শাল পিয়ালের বন - ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য
০৬ শোনো শোনো কথাটি শোনো - ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য
০৭ বনে নয় মনে মোর পাখি আজ - মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়
০৮ মধুমালতীর বনে - মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়
০৯ ময়ূরকণ্ঠী রাতের নীলে - মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়
১০ তুমি ফিরায়ে দিয়েছ বলে - মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়
১১ আমার আকাশ মেঘলা - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১২ আমার জীবনের এতো খুশী - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১৩ আমিও পথের মত হারিয়ে যাবো - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১৪ চলে চলে মাঝখানে - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১৫ মৌ বনে আজ মৌ জমেছে - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১৬ ওগো যা পেয়েছি, সেইটুকুতে - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
১৭ তার আর পর নেই - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
অনুরোধের আসর ২.২
১৮ এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার- জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
১৯ কেউ বলে ফাল্গুন কেউ বলে পলাশের মাস - জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
২০ এনে দে এনে দে ঝুমকা - সবিতা চৌধুরী
২১ হলুদ গাঁদার ফুল দে এনে দে - সবিতা চৌধুরী
২২ যা রে যা আমার আশার - সবিতা চৌধুরী
২৩ কিছু কথা আছে শোন - সবিতা চৌধুরী
২৪ ওই ঝিলমিল ঝাউয়ের বনে ঝিকিমিকি - সবিতা চৌধুরী
২৫ ভ্রমরা তুই যাসনে সেখানে - শ্যামল মিত্র
২৬ হংস পাখা দিয়ে নামটি তোমার লিখে যাই - শ্যামল মিত্র
২৭ যদি কিছু আমারে শুধাও - শ্যামল মিত্র
২৮ নীল আকাশের ওই কোলে - শ্যামল মিত্র
২৯ তুমি কি এমনি করে থাকবে দূরে - শ্যামল মিত্র
৩০ আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায় - তালাত মাহমুদ
৩১ দুটি পাখী দুটি তীরে - তালাত মাহমুদ
৩২ এ যদি আকাশ হয় - তালাত মাহমুদ
৩৩ এলো কি নতুন কোনও গোধূলি বেলা - তালাত মাহমুদ
৩৪ ঘুমের ছায়া চাঁদের চোখে - তালাত মাহমুদ
অনুরোধের আসর ২.৩
৩৫ এবার ম'লে সুতো হবো - মান্না দে
৩৬ আমি যে জলসাঘরের বেলোয়ারী ঝাড় - মান্না দে
৩৭ আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেবো মেপে - সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
৩৮ যদি কাঁদতে পারতাম - সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
৩৯ জলতরঙ্গ বাজে, আনমনা সাঁঝে - সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
৪০ সজনী গো সজনী, দিন রজনী - সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
৪১ এ জীবনে যদি আর কোনোদিন - মহম্মদ রফি
৪২ কথা ছিল দেখা হলে বিজনে - মহম্মদ রফি
৪৩ নাইবা পরিলে আজ মালা চন্দন - মহম্মদ রফি
৪৪ ওই দূর দিগন্ত পারে, যেথা আকাশ মাটিতে - মহম্মদ রফি
৪৫ আজ তুমি নেই বলে - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
৪৬ আমার এই গানে স্বপ্ন যদি আনে - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
৪৭ দুটি জলে ভেজা চোখ - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
৪৮ এমন অনেক কথাই বল তুমি - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
৪৯ ভেবেছ তোমাদেরই একার আছে জলসাঘর - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
৫০ এখনো আকাশে চাঁদ ওই জেগে আছে - সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
কোয়ালিটি : ১২৮ - ১৯২ কেবিপিএস মিক্সড বিটরেট এমপি৩
ফাইল সাইজ : ৬১ + ৬৭ + ৫৫ মেগাবাইটস
ডাউনলোড :
অনুরোধের আসর ২.১
অনুরোধের আসর ২.২
অনুরোধের আসর ২.৩
পূর্বশর্ত : ডাউনলোড করতে হলে ফোরশেয়ারড -এ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
অত্যন্ত সহজেই এই অ্যাকাউন্ট করা যায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।